গঙ্গাসাগর মেলা ঘিরে গত কয়েকদিন রাজ্য সরকারের তৎপরতা ছিল তুঙ্গে। বিশ্বের অন্য়তম বড় মেলা আয়োজনের চ্যালেঞ্জের কথাও বারবার জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মেলা আয়োজনে কেন্দ্রের সহায়তা মেলে না বলেও আক্ষেপ করেন। কিন্তু এবার রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধেই আঙুল তুললেন শুভেন্দু অধিকারী। বিরোধী দলনেতার দাবি, আদতে নাকি গঙ্গাসাগর মেলা থেকে সরকারের মোটা টাকা আয় হচ্ছে। এই নিয়ে বুধবার সোশ্যাল মিডিয়ায় লম্বা পোস্ট করেন তিনি।
শুভেন্দু বলেন, 'মোটা টাকা উপার্জনের জন্য সাধারণ মানুষকে চাপ দিচ্ছে দেউলিয়া পশ্চিমবঙ্গ সরকার। রাজ্য সরকার গঙ্গাসাগর মেলায় সেরা পরিষেবা দিচ্ছে বলে বড় বড় প্রচার করা হচ্ছে। এটাও বলা হচ্ছে যে রাজ্য সরকারই সব খরচ বহন করে বিনামূল্যেই বেশিরভাগ পরিষেবা দিচ্ছে।'
বিরোধী দলনেতার দাবি, 'এগুলি বাস্তব নয়। আসলে মমতা সরকার গঙ্গাসাগর মেলা ব্যবহার করে তাদের শূন্য কোষাগার পূরণ করার চেষ্টা করছে। গঙ্গাসাগর মেলায় আসা ভক্তদের নৌযানের ভাড়া দিতে বাধ্য করা হচ্ছে। স্বাভাবিক ভাড়ার চেয়ে যা কিনা বহুগুণ বেশি।'
শুভেন্দু এরপর একটি তালিকা পোস্ট করেছেন। সেটার বিষয়ে তিনি বলেন, 'দেখুন কিভাবে তীর্থযাত্রীদের কাছ থেকে টাকা তোলা হচ্ছে। এঁদের কোনও উপায়ও নেই। তাঁরা পবিত্র আচার-অনুষ্ঠানে অংশ নিতে অনেক দূর থেকে এসেছেন।'
শুভেন্দু অধিকারী একটি গ্রাফিক্স টেবিল পোস্ট করে লিখেছেন, নামখানা থেকে বেনুবনের সাধারণ সময়ে ভাড়া ৪০ টাকা। গঙ্গাসাগরের সময়ে সেটা বাড়িয়ে ৮৫ টাকা করা হয়েছে। আবার কচুবেরিয়ে থেকে ৮ নম্বর লটের ভাড়া এমনি সময়ে ৯ টাকা করে থাকে। সেটাও বাড়িয়ে ৪০ টাকা করা হয়েছে। এর ফলে দু'টি মিলিয়ে প্রায় ৭৬ টাকা করে বেশি ভাড়া তোলা হয়েছে বলে দাবি শুভেন্দু অধিকারীর।
বিরোধী দলনেতার আরও দাবি, 'যদি ধরা হয় যে আনুমানিক ৫০ লক্ষ যাত্রী জলযানে চড়েছেন, সেক্ষেত্রে এই ভাড়া বৃদ্ধির ফলে সরকারের অতিরিক্ত ৩৮ কোটি টাকা আয় হয়েছে(৭৬x৫০,০০,০০০)।'
এরপর এক ধাপ এগিয়ে শুভেন্দু বলেন, 'এটি এই দেউলিয়া রাজ্য সরকারের একটা সাধারণ অভ্যাসে পরিণত হয়েছে।' TET পরীক্ষার ফর্মের উল্লেখ করে তিনি বলেন, '২০২৩ সালের ডিসেম্বরের পরীক্ষার ফর্মের খরচ ১০০ টাকা (২০২২ সালের ফি) থেকে বাড়িয়ে ৫০০ টাকা করা হয়েছিল।
তিনি বলেন, 'ফর্মের দাম একলাফে প্রায় ৪০০% বৃদ্ধি পেয়েছে। ৩,০৯,০৫৪ জন পরীক্ষার্থী ফর্ম ফিলআপ করেছে। আর তার ফলে মমতা সরকারের ১৫,৪৫,২৭,০০০ টাকা(পনেরো কোটি পঁয়তাল্লিশ লক্ষ সাতাশ হাজার টাকা) আয় হয়েছে।'