পশ্চিমবঙ্গের পুলিশকর্তা ও আমলাদের একাংশের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক পক্ষপাতের অভিযোগ আগেও তুলেছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। এনিয়ে একাধিকবার ট্যুইট করতে দেখা গেছে রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধানকে। ফের একবার সেই একই ভূমিকায় অবর্তীণ হলেন রাজ্যপাল। তবে এবার আর ট্যুইট যুদ্ধে নয়, সাংবাদিক সম্মেলন করে অভিযোগ শানালেন মমতা প্রশাসনের বিরুদ্ধে।
একমাসের সফরে বর্তমানে দার্জিলিং-এ রয়েছেন রাজ্যপাল। সেখানকার রাজভবন আপাতত ঠিকানা তাঁর। সেখানেই সাংবাদিক সম্মেলনে ধনখড় অভিযোগ করেন, রাজ্যপাল হিসাবে প্রথমবার তাঁর পাহাড় আগমন হয়েছে, কিন্তু জেলা প্রশাসন রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধানকে কার্যত 'বয়কট' করেছে। সরকারি কর্মী হিসাবে এই ধরণের আচরণ করা যায় না বলেই দাবি করেন ধনখড়। আর এই প্রসঙ্গেই সরকারি কর্মীদের রাজনৈতিক করণ নিয়ে ফের একবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশাসনের দিকে তোপ দাগেন রাজ্যপাল।
এর আগে উত্তরবঙ্গ সফরের শুরুতেই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় প্রশাসের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে বলেছিলেন, সরকারি কর্মীরা রাজনৈতিক কর্মী নন। তিনি বা মুখ্যমন্ত্রী কেউই সংবিধানের ঊর্দ্ধে নন বলেও জানান তিনি। ধনখড় বলেছিলেন, পুলিশ ও প্রশাসনের কখনোই ভোলা উচিত নয় যে তারা কোনও রাজনৈতিক দলের পক্ষপাতিত্ব করতে পারেন না। এরপরেও অবশ্য থেমে থাকেননি রাজ্যপাল। পক্ষপাতদুষ্ট IAS ও IPS-দের সতর্ক করে রাজ্যপাল ট্যুইট করেছিলেন, ‘নিজেকে যতই বড় ভাবুন না কেন, মনে রাখবেন আইনের থেকে বড় আপনি নন।’ধনখড়ের দাবি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুলিশ ও প্রশাসনের রাজনৈতিকভাবে নিরপেক্ষ হওয়া উচিত।
রাজ্যের পরিস্থিতি যে খুবই উদ্বেগজনক,তা নিয়ে বারবার সরব হতে দেখা গেছে রাজ্যপালকে। একমাস পাহাড় সফরেরপর্যালোচনার পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ দিতে গিয়ে সোমবার ফের একবার রাজ্য সরকারকেই দুষেছেন সাংবিধানিক প্রধান। বাংলায় ইতিহাসের সবচেয়ে খারাপ পর্যায় চলছে বলেও কটাক্ষ করেছেন খনখড়। রাজ্যপাল বলেন, “বাংলার সংস্কৃতিতে ঔদ্ধত্যের কোনও স্থান নেই। তা সত্ত্বেও অনেকের কথার মাধ্যমে শক্তি এবং ঔদ্ধত্য প্রকাশ পায়। যা আমাকে সত্যিই ব্যথিত করে। প্রশাসনিক কর্তাব্যক্তিদের কাছে আমার একটাই অনুরোধ সংবিধান মেনে কাজ করুন। গণতন্ত্রের বিরোধী হবেন না। রাজনৈতিক দলদাস হয়ে কাজ করবেন না। জানি সত্যি তা বড় কঠিন। কারণ আপনাদের হাত-পা বাঁধা। তবু যারা এ কাজ করছেন তাদের বিরোধিতা করুন।”
একমাস পাহাড় সফরে তিনি বহু মানুষের সঙ্গে কথা বলে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করেছেন বলেও জানান রাজ্যপাল। ধনখড়ের দাবি, এই সময়ের মধ্যে একাধিক জটিল বিষয় উন্মোচিত হয়েছে। প্রশাসনিক ক্ষেত্রে সাংবিধানিক নিয়ম মেনে চলা হচ্ছে না। জিটিএ–সহ সমস্ত সরকারি প্রতিষ্ঠানের অডিট হওয়া দরকার বলেও এদিন উষ্মা প্রশাক করেন রাজ্যপা জগদীপ ধনখড়।