সন্দেশখালির 'বেতাজ বাদশা' শেখ শাহজাহান অন্যায় করেছেন বলে শনিবার মন্তব্য করলেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা তৃণমূলের অন্যতম শীর্ষ নেতা ফিরহাদ হাকিম। ঘটনার ২২ দিন পরও অধরা শাহজাহান। তাঁকে কেন এখনও গ্রেফতার করা হল না, এই নিয়ে তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে সুড় চড়াচ্ছে বিরোধীরা। এই আবহে ফিরহাদ বললেন, 'শাহজাহান যেটা করেছে, অন্যায় করেছে।' যা এই পর্বে নয়া মাত্রা যোগ করল। অন্য দিকে, শাহজাহান প্রসঙ্গে এদিন হুঙ্কার দিয়েছেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। বলেছেন, '২০২৬ সালে রাজ্যে বিজেপির সরকার হলে শাহজাহানদের মতো লোকেরা শিক্ষা পাবে। বাড়িতে গেরুয়া বুলডোজার চালানো হবে।'
কী বলেছেন ফিরহাদ?
শাহজাহান প্রসঙ্গে কলকাতার মেয়র বলেন, 'শাহজাহান যেটা করেছে, সেটা অন্যায় করেছে। টিভিতে যা দেখলাম মাথা ফাটিয়েছে, সেটা ভীষণ অন্যায় হয়েছে। ও করেছে আর যেই করে থাকুক, অন্যায় করেছে।' ফিরহাদ আরও বলেছেন, 'আমি গোয়েন্দা নই যে, কার বাড়িতে টাকা আছে, সেটা আগে থেকেই বলে দেব।'
কী বলেছেন সুকান্ত?
বিজেপি রাজ্য সভাপতি বলেছেন, 'শেখ শাহজাহানের এমন ব্যবস্থা হবে, শিক্ষা পেয়ে যাবে। ২০২৬ সালে রাজ্যে বিজেপি ক্ষমতায় এলে শাহজাহানদের মতো লোকেদের বাড়িতে গেরুয়া বুলডোজার চলবে।'
শাহজাহান কোথায় রয়েছেন? এই নিয়ে সম্প্রতি চাঞ্চল্যকর দাবি করেছেন রাজ্যের কারামন্ত্রী অখিল গিরি। বৃহস্পতিবার রাজ্যের মন্ত্রী দাবি করেন, 'শেখ শাহজাহান অসুস্থ। চিকিৎসার জন্য বাইরে রয়েছেন।' তবে ঠিক কোথায় রয়েছেন শাহজাহান, তা স্পষ্ট করেননি কারামন্ত্রী। শুধু বলেছেন, 'পশ্চিমবঙ্গের মধ্যে নেই।' মন্ত্রীর দাবি, 'পুলিশ খুঁজছে। রাজ্যের মধ্যে থাকলে তো খুঁজে পেত।' সন্দেশখালিকাণ্ডে অন্যতম অভিযুক্ত শাহজাহান। ঘটনার পর থেকেই বেপাত্তা তিনি। এই প্রসঙ্গে শুক্রবার হিঙ্গলগঞ্জে 'তিরঙ্গা যাত্রা'য় হাঁটতে হাঁটতে শুভেন্দু বলেন, 'ওসব ফালতু কথা।শাহজাহান গর্তে ঢুকে আছেন।' এর আগে, শুভেন্দু দাবি করেছিলেন, উত্তর ২৪ পরগনার সরবেড়িয়া থেকে ধামাখালির মধ্যে ভেড়ি এলাকায় পুলিশি নিরাপত্তায় লুকিয়ে রয়েছেন শাহজাহান।
কী ঘটেছিল সন্দেশখালিতে?
গত ৫ জানুয়ারি সকালে উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালিতে তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানের বাড়িতে হানা দেয় ইডির একটি দল। সঙ্গে ছিল কেন্দ্রীয় বাহিনী। রেশন দুর্নীতিকাণ্ডে এই অভিযান বলে খবর। সরবেড়িয়া গ্রামে শাহজাহানের বাড়ির দিকে ইডির আধিকারিকরা যাওয়ার চেষ্টা করলেই রুখে দাঁড়ান বাসিন্দাদের একাংশ। তাঁরা শাহাজাহানের অনুগামী বলে দাবি। শাহাজাহানের বাড়িতে ডাকাডাকি করে সাড়া না পাওয়ায় দরজা ভাঙার চেষ্টা করেন ইডির আধিকারিকরা। অভিযোগ, সেই সময়ই তাঁদের ঘিরে ফেলে মারধর করা হয়। ধাক্কা মেরে সরানো হয় কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের। ইডির আধিকারিকদের ধাওয়া করে এলাকা ছাড়া করা হয়। তাঁদের গাড়িতে ভাঙচুর করা হয় বলে অভিযোগ। ওই সময় তিন আধিকারিক জখম হন। আক্রান্ত হয় সংবাদমাধ্যমও। এই ঘটনায় কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে এখনও অধরা শাহজাহান। এর মধ্যেই বুধবার সন্দেশখালিতে শাহজাহানের বাড়িতে ফের গিয়েছিল ইডির দল। কিন্তু শাহজাহানের হদিস পাওয়া যায়নি। এর পরই শাহজাহানকে ২৯ জানুয়ারি তলব করেছে ইডি। অতীতে শাহজাহানের নামে লুক আউট নোটিস জারি করা হয়েছিল।