প্রত্নতাত্ত্বিকেরা বিশ্বের প্রাচীনতম সোনার গহনা খুঁজে পেয়েছেন। এই অলঙ্কারটি এক মহিলার কবরে পাওয়া যায় যাকে ৩৮০০ বছর আগে সমাহিত করা হয়েছিল। মৃত্যুর সময় মহিলার বয়স প্রায় ২০ বছর ছিল। এই গয়নাটি জার্মানির তাবিনজেনে পাওয়া যায়। প্রত্নতাত্ত্বিকেরা তাবিনজেনে কিছু প্রাচীন সমাধির সন্ধান করছিলেন। তখনি তাঁরা একটি সমাধিতে সোনার বাঁকানো অলঙ্কারটি পান। মনে করা হচ্ছে যে ওই মিহলা গয়নাটি চুলে ব্যান্ডের মতো ব্যবহার করতেন। (ছবি:Yvonne Mühleis, LAD Esslingen)
প্রত্নতাত্ত্বিকেরা এটির অনুসন্ধানে করে জানান যে এই সোনার গয়নাগুলিতে ২০ শতাংশ রৌপ্য রয়েছে। তামা, প্ল্যাটিনাম এবং টিনের ভাগ ২ শতাংশেরও কম পাওয়া গিয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে এটি অবশ্যই নদীতে প্রবাহিত সোনার প্রাকৃতিক ধাতু ছিল। এটি ইংল্যান্ডের কর্নওয়েল অঞ্চল থেকে প্রবাহিত কার্নন নদী হয়ে জার্মানির দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলে যায়। যেখানে এই সোনার ধাতব অলঙ্কারটি ব্যবহৃত হত। (ছবি: তাবিনজেন বিশ্ববিদ্যালয়)
প্রত্নতাত্ত্বিকরা বলছেন যে সে সময় দক্ষিণ-পশ্চিম জার্মানিতে এ জাতীয় মূল্যবান ধাতু পাওয়া বিরল ছিল। জার্মানির তাবিঞ্জেন জেলায় পাওয়া এই সোনার গহনাগুলি প্রমাণ করে যে ওখানে ব্রিটেন এবং ফ্রান্সের সাংস্কৃতিক গোষ্ঠীগুলির প্রভাব ছিল সেই সময়। এই গোষ্ঠীগুলি দ্বিতীয় শতাব্দীতে মধ্য ইউরোপে তাদের প্রভাব বাড়ায়। ওই কুড়ি বছর বয়সী মহিলার সমাধিতে মাথা দক্ষিণ দিকে ছিল। কবরস্থানের কাছেই সমাধিটি পাওয়া যায় । (ছবি: তাবিনজেন বিশ্ববিদ্যালয়)
তাবিনগেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাগৈতিহাসিক ও মধ্যযুগীয় প্রত্নতত্ত্ব ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক রিকো ক্রস বলেছেন যে আমরা মহিলার পরিচয় অনুসন্ধান করেছি। তাঁর শরীরে কোনও আঘাত বা অসুস্থতা নেই। সুতরাং তিনি কীভাবে মারা গেলেন তা জানা যায়নি। এই আবিষ্কারের নেতৃত্ব দিয়েছেন রায়কো ক্রাউস এবং জার্গ বাফিংগার। (ছবি: তাবিনজেন বিশ্ববিদ্যালয়)
এই আবিষ্কার থেকেই বোঝা যায় যে মহিলা অবশ্যই জীবিতকালে উচ্চবিত্ত সমাজের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। প্রত্নতাত্ত্বিকেরা রেডিয়োকার্বন ডেটিং করে মহিলার বয়স জানার চেষ্টা করেছিলেন। এটি দেখিয়েছিল যে খ্রিস্টপূর্ব ১৮৫০ এবং ১৭০০ মধ্যে মহিলা মারা যান। জার্মানির ইতিহাসে এমন কোন দলিল নেই যা এই অঞ্চলে সোনার কোনও প্রমাণ দেয়। কিংবা এই কবরস্থানের কোনও ইতিহাসও পাওয়া যায়নি। (প্রতীকী ছবি: গেটি)
প্রত্নতাত্ত্বিকেরা জানান যে জার্মানি বা তাবিনগেনে প্রাচীন ইতিহাসের কোনও দলিল পাওয়া যায়নি বলে এই মহিলার কোনও পরিচয় পাওয়া যায়নি। এই আবিষ্কারের প্রতিবেদনটি ২১ মে প্রিহিস্টরিশ জেইটসক্রিফ্ট জার্নালে প্রকাশিত হয়েছিল। এই সোনার গহনাটি গত বছরের শরতের মরসুমে আবিষ্কার হয়েছিল। তবে এটিকে নিয়ে গবেষণা করার পরে, জার্নালে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করতে এক বছর সময় লেগেছে। (প্রতীকী ছবি: গেটি)
এর আগে ২০১৬ সালের দিকে, প্রত্নতাত্ত্বিকেরা বুলগেরিয়ে থেকে খ্রিস্টপূর্ব ৪৫০০-৪৬০০ সালের সোনার অলঙ্কার আবিষ্কার করেছিলেন। এটি তাম্র যুগের ২০০ বছর পূর্বে। এটি বুলগেরিয়ার কৃষ্ণ সাগরের নিকটবর্তী ভারনা শহর থেকে পাওয়া গিয়েছিল। তবে প্রক্রিয়াজাত সোনাটি ১৯৭২ সালে আবিষ্কৃত হয়েছিল। (প্রতীকী ছবি: গেটি)