সাধারণত ডিম ফুটে বাচ্চা বের করার কাজটি স্ত্রী পেঙ্গুইনরাই করে থাকে। কিন্তু নিউইয়র্কের রোসামান্ড গিফোর্ড চিড়িয়াখানায়, একই সমলিঙ্গের দুই পেঙ্গুইন প্রথম ডিম ফুটে ছানা বের করার নজির গড়েছে। এখন তারা এই ছানাটিকে নিজেদের সন্তানের মতো দেখাশোনা করছে। (ছবি: রোসামুন্ড গিফোর্ড চিড়িয়াখানা)
একই লিঙ্গের এই পেঙ্গুইন দু'টিই পুরুষ। এদেরকে বলা হয় হামবোল্ট পেঙ্গুইন। বৈজ্ঞানিক ভাষায় এদেরকে বলা হয় স্ফেনিস্কাস হাম্বোল্ড।চিড়িয়াখানার এই সমকামী পেঙ্গুইনের নাম এলমার এবং লিমা। এদের একটি ডিম দেওয়া হয়েছিল। (ছবি: গেটি)
চিড়িয়াখানার পরিচালক টেড ফক্স এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, এই পুরুষ জোড়া ডিম ফুটিয়েছে দুই পুরুষ পেঙ্গুইন। তা থেকে ছানা বের হয় ১ জানুয়ারি। এখন এই সমকামী পেঙ্গুইনরা সেই ছানাটিকে নিজেদের সন্তানের মতো দেখাশোনা করছে। যেন তাদের আগে থেকেই ছানা লালন-পালনের অভ্যাস আছে। শীতের হাত থেকে রক্ষা পেতে তারা ছানাটিকে আগলে রাখে। এলমার এবং লিমা ছানাটির যত্ন নেওয়ার জন্য কোনও কসরত ছাড়ছে না। (ছবি: গেটি)
এলমার ও লিমাকে আলাদা ঘরেই রাখা হয়। গত প্রজনন মরশুম থেকে এ কাজ করা হতো। চিড়িয়াখানার কর্মীরা যখন তাদের পেঙ্গুইনের একটি নকল ডিম দেয়, এটিকে নিরাপদ রাখতে সতর্ক হয়ে পড়ে পেঙ্গুইনরা। (ছবি: গেটি)
টেড ফক্স বলেন, এর পর আমরা ডামি ডিম বের করেছিলাম। তার জায়গায় আসল ডিম রাখলাম। ডিম ফোটার সময় দু'জনেই সজাগ থাকত। অন্য কোনও পেঙ্গুইনকে তার কাছে আসতে দেয়নি এই যুগল। (ছবি: গেটি)
রোসামুন্ড গিফোর্ড চিড়িয়াখানায় সমকামী এই পেঙ্গুইনদের কাজ প্রশংসনীয়। তবে এমন ঘটনা এবারই প্রথম নয়। নিউ ইয়র্ক সিটির সেন্ট্রাল পার্ক চিড়িয়াখানা এবং স্পেনের ওশানোগ্রাফার ভ্যালেন্সিয়া অ্যাকোয়ারিয়ামে পুরুষ ও মহিলা জোড়া ডিম ফোটে। ছানাগুলোকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এরপর দু'টি পুরুষ কালো পায়ের পেঙ্গুইন তাদের ওই ডিম চুরি করেছিল। তবে নেদারল্যান্ডসের ডিয়েরেনপার্ক আমেরসফুর্ট চিড়িয়াখানায় তা ফুটিয়েছিল। কারণ, তারা বাবা-মা হতে চেয়েছিল। (ছবি: গেটি)
সাধারণত সমলিঙ্গের পেঙ্গুইন জোড়ায় দেখা যায়। পুরুষ এবং মহিলা পেঙ্গুইন ঠিক একইভাবে একটি শিশু লালনপালন সংক্রান্ত সমস্ত কাজ করে। এতে কোনও বৈষম্য নেই। তবে বিজ্ঞানীরা এখনও এর কোনও কারণ খুঁজে পায়নি। কিন্তু পেঙ্গুইন, পুরুষ হোক বা মহিলা, উভয়েই ডিম ফোটানো থেকে শুরু করে ছানাকে বড় করানো পর্যন্ত যত্ন নেয়। (ছবি: গেটি)
টেড ফক্স বলেছেন, সমলিঙ্গের পেঙ্গুইনরা দেখায় যে ছানা লালন-পালন করে। একটি শিশুকে বড় করার জন্য পুরুষ বা মহিলার সুষম মিশ্রণের প্রয়োজন হয় না। এদের শুধুমাত্র পুরুষ বা মহিলা দ্বারাও পালন করা যায়। এই অপ্রথাগত দম্পতিরাও তাদের সন্তানদের সামলাতে সক্ষম। (ছবি: গেটি)