সম্প্রতি জন্স হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ে (Johns Hopkins University) কোনও মানুষের সাহায্য ছাড়াই অস্ত্রোপচার করেছে রোবট। এই অস্ত্রোপচারের সময় বোরটটিকে কোনও চিকিৎসক বা টেকনিশিয়ান কোনও নির্দেশ দেননি। তাঁরা শুধু অস্ত্রোপচারটি দেখছিলেন এবং যে শুয়োরটির ওপরে সেটি করা হচ্ছিল সেটির স্বাস্থ্যের দিকে নজর রাখছিলেন।
রোবটটির নাম স্মার্ট টিস্যু অটোনোমাস রোবট (STAR)। সে যে অস্ত্রোপচারটি করেছে সেটি হল Intestinal Anastomosis। অর্থাৎ এটি শুয়োরটি অন্ত্রের ২টি ক্ষত সারিয়ে তারপর দুটি অংশকে সেলাই করে দেয়।
রোবটটির মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার তথা অধ্যাপক অ্যালেক্স ক্রিগার বলেন, আমেরিকায় প্রতিবছর হাজার হাজার লক্ষ লক্ষ রোবটিক সার্জারি হয়। কিন্তু সেগুলিতে চিকিৎসক ও টেকনিশিয়ানরা নির্দেশ দেন। কারণ সামান্য ভুল হলে রোগার মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। তবে এই ঘটনা একটা বিশাল উপলব্ধি।
STAR-কে জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরাই ডিজাইন করেছেন। এই বিষয়ে অ্যালেক্স আরও জানান, রোবটটি এখনও পর্যন্ত ৪টি অপারেশান করেছে। সেগুলির ফলাফল কোনও মানুষের করা অপারেশানের চেয়েও ভাল। ভবিষ্যতে মানুষের অপারেশান কোনওরকম সহায়তা ছাড়া রোবটই সম্পূর্ণভাবে করতে পারবে।
আরও পড়ুন - অসুস্থ অনুব্রত, CBI-হাজিরার আগে হাইকোর্টের দ্বারস্থ
অ্যালেক্স জানাচ্ছেন, Intestinal Anastomosis-এ একই কাজ বেশকয়েকবার করতে হয়। তবে রোবটটি সমস্ত প্রক্রিয়াই অত্যন্ত সঠিকভাবে করেছে। এমনকি সেটি যে ধরনের সেলাই করেছে তা একজন শল্য চিকিৎসকও করতে পারবেন না বলে জানান অ্যালেক্স।
STAR কোনওরকম ভুল ছাড়াই অন্ত্রের দুটি অংশকে জুড়ে দিয়েছে। যদি এটা কোনও চিকিৎসক করতেন তাহলে খুবই মনোযোগ সহকারে করতে হত। সেলাইতে ভুল হয়ে গেলে অন্ত্রে লিকেজ থেকে যাওয়ার আশঙ্কা থাকত। যার ফলে দেহে সংক্রমণও হতে পারত।
এই রোবটিতে রয়েছে ভিশন গাইডেন্স সিস্টেম, যা যেকোনও ধরনের নরম টিস্যু অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে সেলাই করতে পারে।
রোবটটি ২০১৬ সাল থেকে কাজ করছে। তবে সেটিকে আরও আধুনিক করা হয়েছে, যাতে তা আরও ভালভালে অস্ত্রোপচার করতে পারে। রোবটের হাতে সার্জারির নতুন টুলস লগানো হয়েছে।
অ্যালেক্স জানাচ্ছেন, রোবটটিতে নিজেকে নিয়ন্ত্রণের বিশেষ ব্যবস্থা রয়েছে। যার ফলে সেটি অস্ত্রোপচারের পরিকল্পনা নিজে থেকেই তৈরি করতে পারে। আর শুধু তাই নয়, অপারেশানের সময় প্রয়োজন অনুযায়ী পদক্ষেপ করতে পারে।
চিকিৎসাবিজ্ঞানে আগামিদিনে এটি একটি বড় পদক্ষেপ হতে পারে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।