তুরস্কের প্রায় ১১টি প্রদেশে আঘাত হানা প্রবল ভূমিকম্পে ৪০,৪০২ জনেরও বেশি মানুষ মারা গেছে। এবং তাপমাত্রা হিমাঙ্কে নীচে নেমে যাওয়ায় লক্ষ লক্ষ মানুষ গৃহহীন হয়েছেন। বাড়িগুলো ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। ভয়াবহ ভূমিকম্পে একটি ছোট গ্রাম দু-ভাগে বিভক্ত করেছে।
ডেমিরকোপ্রু গ্রামে প্রায় ১ হাজার মানুষের বসবাস। সেখানকার জলে এখন ধ্বংসাবশেষ ভাসছে। গ্রামের ভাঙা ফুটপাথ এবং বিচ্ছিন্ন ঘর-বাড়ির ছবিতে বোঝা যাচ্ছে ভূমিকম্পটি কতটা ভয়াবহ ছিল।
৬ ফেব্রুয়ারির ভূমিকম্প এবং আফটারশকগুলি তুরস্ক এবং সিরিয়াকে বিধ্বস্ত করেছে। ৪৬ হাজার জনেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। সেইসঙ্গে এই গ্রামটি আড়াআড়ি ভাগ হয়ে গেছে। বাড়িগুলি অন্তত ১৩ ফুট মাটির নীচে ঢুকে গেছে।
তবে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি সত্ত্বেও ডেমিরকোপ্রুতে কেউ মারা যাননি। তবে কয়েকজন আহত হয়েছেন। তবে গ্রামের পরিস্থিতি এখন বিচ্ছিন্ন দ্বীপের মতো।
ভূমিকম্পে লন্ডভন্ড হয়ে গিয়েছে তুরস্কের একটা বড় অংশ। ধ্বংসস্তূপের তলায় প্রাণের সাড়া পেলে তবেই উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী।
সময় যত এগোচ্ছে, ভূমিকম্পের ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়ে যাওয়া মানুষদের জীবিত অবস্থায় উদ্ধারের সম্ভাবনা তত ক্ষীণ হয়ে আসছে। তুরস্কে বর্তমানে তাপমাত্রা হিমাঙ্কের ৬ ডিগ্রি নীচে। এই প্রবল ঠান্ডায় উদ্ধারকাজও ব্যাহত হচ্ছে বারবার।
উদ্ধারকারীরা অবশ্য হাল ছাড়েননি। পুলিশ কুকুর এবং থার্মাল ক্যামেরা নিয়ে তাঁরা তুরস্ক এবং সিরিয়ার অলিগলিতে ঘুরে বেড়াচ্ছেন প্রাণের সন্ধানে। কোথাও প্রাণের অস্তিত্ব টের পেলে ধ্বংসস্তূপ ডিঙিয়ে ছুটে যাচ্ছেন।
বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-র হিসাব বলছে, দুই দেশ মিলিয়ে আড়াই কোটিরও বেশি মানুষ ভূমিকম্পে সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তাঁদের ত্রাণ এবং পুনর্বাসনের জন্য এই মুহূর্তে প্রয়োজন অন্তত সাড়ে চার কোটি ডলারের। তুরস্কের বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর ৩২ হাজারেরও বেশি কর্মী ২৪ ঘণ্টা কাজ করছেন। আরও অন্তত দশ হাজার উদ্ধারকর্মী তাঁদের সহায়তা করছেন।