প্রবল শীতে কাঁপছে রাশিয়ার বিস্তীর্ণ অঞ্চল। এ শীত যেমন তেমন শীত নয়, আমাদের দেশে বসে যার কল্পনা করাও সম্ভব নয়। এ ভয়ঙ্কর শীত।
আমরা ৪-৫ ডিগ্রিতে বসে কাঁপি। আর রাশিয়ার সাইবেরিয়া ও লাগোয়া বিস্তীর্ণ এলাকা হিমাঙ্কের নীচে নেমে এসেছে বললে কম বলা হয়। আসুন দেখে নিই কী অবস্থা বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে।
বিশ্বের শীতলতম শহর, পূর্ব সাইবেরিয়ার ইয়াকুতস্কে তাপমাত্রা মাইনাস ৬২.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে এসেছে। এর আগে শহরের রেকর্ড ছিল মাইনাস ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
সাইবেরিয়ার কিছু জায়গা বর্তমানে বিপজ্জনকভাবে শীতল আবহাওয়ার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। মানুষ চরম ঠাণ্ডার মধ্যে প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে চলছেন।
সাইবেরিয়ার তাপমাত্রা -৬২.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস (-৮০.৯°ফারেনহাইট) পর্যন্ত নেমে গেছে। যা রাশিয়ায় দুই দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে সবচেয়ে ঠান্ডা দিন হিসেবে পরিণত হয়েছে।
আবহাওয়াবিদদের বক্তব্য উধৃত করে দিয়ে বিএনও নিউজ এ খবর জানিয়েছে। রাশিয়ার বড় অংশ বর্তমানে রেকর্ড নিম্ন তাপমাত্রার সম্মুখীন হয়েছে।
রাশিয়ার ইয়াকুতস্ক অঞ্চলের আবহাওয়া সংস্থা জানিয়েছে, বুধবার সকাল ৯টায় টঙ্গুলখ-এ -৬২.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে, যা এই মাসে তৃতীয়বারের মতো স্টেশনের সর্বকালের সর্বনিম্ন তাপমাত্রাকে ভেঙে দিয়েছে।
যদিও বেশিরভাগ মানুষ হিমাঙ্কের নীচের তাপমাত্রায় অভ্যস্ত,প্রত্যন্ত অঞ্চলের বাসিন্দারা নিজেদের উষ্ণ রাখতে অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করছেন।
"আপনি এর সাথে লড়াই করতে পারবেন না," দুটি স্কার্ফ এবং একাধিক স্তরের গ্লাভস, টুপি এবং হুড পরিহিত একজন বাসিন্দা রয়টার্সকে বলেছেন। "আপনি হয় অ্যাডজাস্ট করুন এবং সেই অনুযায়ী পোশাক পরুন নতুবা আপনাকে ভুগতে হবে।"
স্থানীয় বাজারে ফ্রিজ হয়ে যাওয়া মাছ বিক্রি করা আরেক বাসিন্দা বলেন,"শুধু উষ্ণ পোশাক পরুন। বাঁধাকপির মতো একাধিক স্তরের পোশাক পরতে হবে বলে তিনি দাবি করেন।
ফেব্রুয়ারি ২০০২ এবং জানুয়ারি ১৯৮২ সাল থেকে এটিই রাশিয়ার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এটি এই বছর এখন পর্যন্ত পৃথিবীর সবচেয়ে শীতল তাপমাত্রা,বিএনও নিউজ একটি প্রতিবেদনে বলেছে।
ইয়াকুতস্কে,১ মিলিয়ন অর্থাৎ ১০ লক্ষেরও কম বাসিন্দা থাকেন। লোকেরা চরম তাপমাত্রাকে উপেক্ষা করে বরফের ঠান্ডা জলে ঝাঁপিয়ে পড়ে। এপিফ্যানির খ্রিস্টান অর্থোডক্স দিবস পালন করতেও পিছপা হন না। যা যিশু খ্রিস্টের বাপ্তিজমের স্মরণে করা হয়।
২০১৮ সালে, এই এলাকা এত ঠান্ডা হয়ে গিয়েছিল যে কিছু বাসিন্দা বলেছিল যে তাদের চোখের পাপড়ি জমে গেছে।
জুলাই মাসে, ইয়াকুতস্কে খবরে ছিল। যখন কাছাকাছি দাবানল, কুয়াশা বনের মধ্যে দিয়ে এলাকা ঢেকে ফেলে ঘন ধোঁয়ায়। গোটা অঞ্চল তখন ধোঁয়ায় আবৃত করে।
বিজ্ঞানীরা সাইবেরিয়ান আর্কটিকের জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে দাবানলের ক্রমবর্ধমান ফ্রিকোয়েন্সি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।