COVID-19 এর ভ্যাকসিনের গুরুতর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে। এই প্রথমবার স্বীকার করল করোনা (COVID 19)-র টিকা প্রস্তুতকারক সংস্থা অ্যাস্ট্রাজেনেকা (AstraZeneca)। এই অ্যাস্ট্রাজেনেকা সংস্থাই কোভিশিল্ড (Covishield vaccine) টিকা তৈরি করেছে। ব্রিটিশ হাইকোর্টে অ্যাস্ট্রাজেনেকা স্বীকার করেছে, কোভিশিল্ড ভ্যাকসিনে থ্রম্বোসাইটোপেনিয়া সিনড্রোম (TTS)-র মতো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে।
শরীরে প্লেটলেট হুড়মুড়িয়ে কমতে শুরু করে দেয়
থ্রম্বোসাইটোপেনিয়া সিনড্রোমে শরীরে ব্লাড ক্লট হয়। অথবা শরীরে প্লেটলেট হুড়মুড়িয়ে কমতে শুরু করে দেয়। যার জেরে ব্রেন স্ট্রোক বা মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের আশঙ্কা রয়েছে। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি ব্রিটিশ হাইকোর্টে কোভিশিল্ড ভ্যাকসিনের মারাত্মক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কথা স্বীকার করেছে সংস্থা। দীর্ঘ দিন ধরেই অভিযোগ উঠছিল, কোভিশিল্ড ভ্যাকসিনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে। এবার সেই অভিযোগেই মান্যতা দিল অ্যাস্ট্রাজেনেকা।
অ্যাস্ট্রাজেনেকার বিরুদ্ধে ঠিক কী অভিযোগ?
অ্যাস্ট্রাজেনেকার বিরুদ্ধে ব্রিটেনে এক ব্যক্তি মামলা দায়ের করেছিল। তাঁর অভিযোগ ছিল, কোভিশিল্ড ভ্যাকসিনের জেরে তাঁর থ্রম্বোসাইটোপেনিয়া সিনড্রোম হয়েছেছ। তার জরে ব্রেন ড্যামেজের শিকার তিনি। এছাড়াও একাধিক ব্যক্তি আদালতের দ্বারস্থ হন। তাঁর অভিযোগ, ভ্যাকসিন নেওয়ার পর থেকেই তাঁদের নানা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া শুরু হয়।
আদালতে কী জানিয়েছে কোভিশিল্ড প্রস্তুতকারী সংস্থা?
আদালতে অ্যাস্ট্রাজেনেকা যে নথি পেশ করেছে, তাতে জানানো হয়েছে, কোভিশিল্ড ভ্যাকসিনটি অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যৌথ ভাবে তৈরি করা হয়েছে। এই ভ্যাকসিনের জেরে থ্রম্বোসাইটোপেনিয়া সিনড্রোম হতে পারে।
অ্যাস্ট্রাজেনেকার দাবি, এই ভ্যাকসিন না নিলেও কোনও ব্যক্তি থ্রম্বোসাইটোপেনিয়া সিন্ড্রোমের শিকার হতে পারেন। তাই শুধুমাত্র ভ্যাকসিন নেওয়ার পরেই থ্রম্বোসাইটোপেনিয়া সিন্ড্রোম শুরু হচ্ছে, এটা বলাও ঠিক নয়।
কোম্পানি আদালতে জানিয়েছে, একাধিক স্বাধীন গবেষণায় দেখা গিয়েছে, করোনা রুখতে কোভিশিল্ড ভ্যাকসিন ভীষণ কার্যকর। তাই কোনও রায় দেওয়ার আগে এই স্টাডিগুলিও একবার দেখা উচিত।
আদালতে কোম্পানির দাবি, কোভিশিল্ড ভ্যাকসিনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া খুবই বিরল। রোগীর সুরক্ষা আমাদের প্রাথমিক ও সর্বোপরি দায়িত্ব।
অ্যাস্ট্রাজেনেকার দাবি, তাদের ভ্যাকসিন ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের পর দুনিয়াজুড়ে মান্যতা পেয়েছে। তাদের টিকাকরণ কর্মসূচিতে লাভবান হয়েছেন বিশ্বের বহু মানুষ। বহু মানুষ এই ভ্যাকসিন নিয়েছেন, ফলে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ঝুঁকি কমতে পারে।
কোম্পানি আদালতে জানিয়েছে, করোনা অতিমারির সময় গোটা বিশ্বে ৬০ লক্ষ মানুষের জীবন বাঁচিয়েছে তারা।
তাদের আরও দাবি, ভ্যাকসিন নেওয়ার পরে যাঁরা নানা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার অভিযোগ করছেন, তাঁদের শারীরিক বিষয়ে তারা চিন্তিত। তবে এটাও নিশ্চিত, খুব মানুষেরই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কেস সামনে আসছে।