প্রতিবেশী দেশ নেপাল ও বাংলাদেশ নিয়ে দ্বিধায় ভারত। আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে দুই দেশই ভারতের ঘনিষ্ঠ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) আঞ্চলিক অধিকর্তা পদের জন্য প্রার্থী মনোনীত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারতের দুই পড়শি। ৯-১০ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হতে চলা জি-২০ শীর্ষ সম্মেলন ছাড়াও এই নির্বাচন নিয়েও কথা হচ্ছে। নেপাল ও বাংলাদেশের মধ্যে যে কোনও একটি দেশের প্রার্থীকে ভোট দেওয়া ভারতের জন্য খুবই কঠিন সিদ্ধান্ত চলেছে।
ডব্লিউএইচওর আঞ্চলিক অধিকর্তা পদে বাংলাদেশ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ এবং নেপাল থেকে প্রার্থী হচ্ছেন শম্ভুপ্রসাদ আচার্য্য। শম্ভু প্রসাদ ডব্লিউএইচও-এর অন্যতম ঊর্ধ্বতন কর্তা। দ্য হিন্দুর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ডব্লিউএইচও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া আঞ্চলিক অফিসের (এসইএআরও) অধিকর্তা নির্বাচন নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন হবে ৩০ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বরের মধ্যে। ১১টি সদস্য রাষ্ট্রের সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটের ভিত্তিতে বিজয়ী ঘোষণা করা হবে। এই ১১টি দেশ হল- বাংলাদেশ, ভুটান, উত্তর কোরিয়া, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, মলদ্বীপ, মিয়ানমার, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড এবং তিমোর-লেস্তে। বলে রাখি, ভারতের পুনম ক্ষেত্রপাল সিং ২০১৪ সাল থেকে SEARO অধিকর্তা পদে রয়েছেন।
ভারত কাকে ভোট দেবে?
বাংলাদেশ ও নেপাল এই দুই দেশের মধ্যে ভারত কাকে সমর্থন করবে? এই প্রসঙ্গে ভারতের সরকারি এক কর্তা বলেছেন, সিদ্ধান্ত নিতে এখনও অনেকটা সময় হাতে। তবে নেপালি প্রার্থীর চেয়ে বাংলাদেশি প্রার্থীর পাল্লা ভারী। কারণ ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সায়মা ওয়াজেদকে সমর্থন করেছেন শেখ হাসিনা। তবে সরকারি কর্তা আরও বলেছেন, রাষ্ট্রসঙ্ঘের আর পাঁচটা নির্বাচনের মতো এক্ষেত্রেও ভোট দেওয়া হয় পারস্পরিক সম্পর্কের উপর। এর মান হল, রাষ্ট্রসঙ্ঘে কোনও দেশ অন্য দেশকে সমর্থন করলে তার সমর্থনের বিনিময়ে অন্য কোনও বিষয়ে তার সমর্থন চাইতে পারে।
নেপালি প্রার্থী শম্ভু প্রসাদ বর্তমানে ডাব্লুএইচও প্রধান টেড্রোস গ্যাব্রিসের কৌশলী হিসেবে কাজ করেন। তিনি এখন জেনেভায় কর্মরত। দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক অধিকর্তা হিসেবে তিনি অভিজ্ঞ ও যোগ্যও বটে। অন্যদিকে, বাংলাদেশি প্রার্থী সায়মা ওয়াজেদ মনোবিজ্ঞানী এবং বাংলাদেশ সরকারের উপদেষ্টা। উচ্চপর্যায়ের কূটনৈতিক মিশনের অংশ ছিলেন।
মা শেখ হাসিনার সঙ্গে ভারতে আসতে পারেন সায়মা
সূত্রের খবর,শেখ হাসিনার সঙ্গে জি-২০ সম্মেলনে যোগ দিতে ভারতে আসবেন সায়মা। জি-টোয়েন্টির বিশেষ আমন্ত্রিতদের তালিকায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর নামও রয়েছে। WHO-প্রধান গ্যাব্রিয়েলেসও জি-২০ বৈঠকে অংশ নিতে দিল্লি আসছেন। তাঁর সঙ্গে আসছে সংগঠনের একটি বড় প্রতিনিধি দলও। এই পদের জন্য তিনি তার সহকর্মী শম্ভু প্রসাদকে সমর্থন করবেন বলে মনে করা হচ্ছে। মনে করা হচ্ছে যে দুই পক্ষই SEARO-এর ১১ সদস্যের পাশাপাশি এই অঞ্চলে প্রভাবশালী দেশগুলিকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করবে।
বুধবার সায়মা ওয়াজেদ বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট মহম্মদ শাহাবুদ্দিনের সঙ্গে আসিয়ান সম্মেলনে অংশ নিতে ইন্দোনেশিয়া যান। সেখানে জাকার্তায় তিনি ইন্দোনেশিয়ার বিদেশমন্ত্রী রেতনো মারসুদির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তিনি মায়ানমার, থাইল্যান্ড ও তিমোর লেস্তের সমর্থন পাওয়ার চেষ্টা করবেন বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।