শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পরে বাংলাদেশে (Bangladesh) লাগাতার ভারত-বিরোধী আবহ তৈরি হচ্ছে। একের পর এক ভারত-বিরোধী মন্তব্য সামনে আসছে। ইতিমধ্যেই ভারতকে সবক শেখাতে পাকিস্তানের (Pakistan) সঙ্গে বন্ধুত্ব ও পরমাণু সন্ধি নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শাহিদুজ্জামানের উস্কানিমূলক মন্তব্য ভাইরাল। বাংলাদেশের হঠাত্ পরমাণু শক্তিধর হওয়ার এই তোড়জোড় মনে করাচ্ছে উত্তর কোরিয়ার নীতিকে। এবং তাত্পর্যপূর্ণ হল, উত্তর কোরিয়ার (North Korea) সেই কাহিনিতেও মধ্যমণি ছিল পাকিস্তান। বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও তা-ই।
উত্তর কোরিয়া যখন পরমাণু অস্ত্র তৈরি শুরু করল
১৯৫০-এর দশকে কোরিয়ান পেনিনসুলায় যুদ্ধে লক্ষ লক্ষ মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। ওই যুদ্ধের পরে উত্তর কোরিয়া পরমাণু অস্ত্র তৈরির প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে। কারণ, উত্তর কোরিয়ার সেই সময় মনে হয়েছিল, আমেরিকা তাদের উপর পরমাণু হামলা চালাতে পারে।
সে বারও বন্ধু হয়ে উঠল পাকিস্তান
কোরিয়ান যুদ্ধ শেষের পরে উত্তর কোরিয়া পরমাণু অস্ত্র তৈরির কাজ শুরু করে দেয়। অচিরেই উত্তর কোরিয়ার সবচেয়ে ভরসার বন্ধু হয়ে ওঠে পাকিস্তান। জানা যায়, পাকিস্তান ও উত্তর কোরিয়ার মধ্যে পরমাণু অস্ত্র নিয়ে গোপন চুক্তি হয়। উত্তর কোরিয়া যাতে পরমাণু অস্ত্রবহণকারী মিসাইল তৈরি করতে পারে, তার জন্য পাকিস্তানের বিজ্ঞানী আব্দুল কাদির খান সাহায্য করেছিলেন। একই সঙ্গে পাকিস্তানকে পরমাণু শক্তিধর দেশ তৈরির মূল ভূমিকা ছিল কাদির খানের।
আটকাতে পারেনি আমেরিকাও
উত্তর কোরিয়া ও পাকিস্তানের মধ্যে পরমাণু অস্ত্র তৈরির সেই চুক্তি আমেরিকাও রুখতে পারেনি। পরমাণু অস্ত্র তৈরির সরঞ্জাম চিনের রাস্তা ধরে পাকিস্তান ও উত্তর কোরিয়ার মধ্যে আদানপ্রদান চলত। আমেরিকার হুঁশিয়ারি সত্ত্বেও যা থামেনি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকের মন্তব্যেও সেই ইতিহাসেরই পুনরাবৃত্তি দেখা যাচ্ছে। শাহিদুজ্জামান বলেন, 'ভারতের ধারণা বদলানোর জন্য সঠিক জবাব হবে, আমাদের পরমাণু শক্তিধর হতে হবে। বাংলাদেশকে পরমাণু শক্তিধর গড়ে তোলা হোক। পরমাণু শক্তিধর হওয়া মানে, আমি বলতে চাইছি, আমাদের প্রাক্তন প্রতিদ্বন্দ্বী রাষ্ট্র পাকিস্তানের সঙ্গে পরমাণু সন্ধি করা উচিত। কারণ পাকিস্তান বরাবর বাংলাদেশের সবচেয়ে ভরসাযোগ্য সুরক্ষা সহযোগী। বাংলাদেশের উচিত পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক মজবুত করে বন্ধুত্ব করা।'