সম্প্রতি একটি ফরাসি সংবাদপত্রের রিপোর্টে প্রকাশিত হয়েছে যে, ইজরায়েলি কর্তৃপক্ষের হাতে একটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পৌঁছানোর পর হিজবুল্লাহ প্রধান সাইয়্যেদ হাসান নাসরুল্লাহকে হত্যা করা সম্ভব হয়। এই তথ্যটি ইরানের এক গুপ্তচরের মাধ্যমে প্রাপ্ত, যা ইজরায়েলকে নাসরুল্লাহর অবস্থান সম্পর্কে সঠিক ধারণা দেয়।
লেবাননের রাজধানী বৈরুতের দক্ষিণ শহরতলিতে অবস্থিত হিজবুল্লাহর ভূগর্ভস্থ সদর দফতরে নাসরুল্লাহ তার দলের সিনিয়র সদস্যদের সঙ্গে একটি বৈঠকে অংশ নিচ্ছিলেন। সেখানেই ইজরায়েল ডিফেন্স ফোর্সেস (আইডিএফ) রাত ১.৩০ মিনিটে (স্থানীয় সময়) একটি সফল বিমান হামলা চালায় এবং তাঁকে হত্যা করে। এ খবরের সত্যতা হিজবুল্লাহও পরবর্তীতে নিশ্চিত করে।
ইজরায়েলি বাহিনীর দাবি অনুযায়ী, নাসরুল্লাহকে হত্যা করার মাধ্যমে তারা সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে এক বড় পদক্ষেপ নিয়েছে। আইডিএফ-এর এক পোস্টে বলা হয়, “হাসান নাসরুল্লাহ আর বিশ্বকে আতঙ্কিত করতে পারবেন না।” এ হামলার পর হিজবুল্লাহ একটি বিবৃতি জারি করে জানায়, “সৈয়্যদ হাসান নাসরুল্লাহ তাঁর অমর শহীদ কমরেডদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন।”
এ হামলার পিছনে ইরানের এক গুপ্তচরের ভূমিকা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা চলছে। ফরাসি সংবাদপত্র লে প্যারিসিয়েন-এর রিপোর্টে বলা হয়েছে, ওই গুপ্তচরের মাধ্যমে ইসরাইলি কর্তৃপক্ষ নাসরুল্লাহর অবস্থান সম্পর্কে সঠিক তথ্য পায়, যা হামলাকে সফল করে তোলে। একইসঙ্গে, আরেকজন হিজবুল্লাহ নেতা, নাবিল কাউককেও ইজরায়েলি হামলায় হত্যা করা হয়েছে বলে জানা যায়।
লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তথ্যে জানা গেছে, ইজরায়েলি বিমান হামলায় ৩৩ জন নিহত হয়েছে। সাম্প্রতিক ইসরাইলি হামলায় লেবাননে ১,০০০ জনেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছে এবং প্রায় ৬,০০০ জন আহত হয়েছে।
নাসরুল্লাহর শেষ ভাষণে তিনি ইজরায়েলের বিরুদ্ধে প্রতিশোধের হুমকি দিয়েছিলেন, যেখানে হিজবুল্লাহ তাদের বিপুল ক্ষতির কথা স্বীকার করে। তবে ইজরায়েলের কঠোর পদক্ষেপ হিজবুল্লাহর জন্য এক বিশাল ধাক্কা হিসেবে দেখা দিয়েছে। এ রিপোর্টে ইজরায়েল-হিজবুল্লাহ সংঘর্ষের এক নতুন মোড় ও আঞ্চলিক পরিস্থিতির ওপর গভীর প্রভাবের ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।