পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের কারাক জেলায় হিন্দু মন্দির ধ্বংসের ভিডিও ভাইরাল হতেই ফের সমালোচনার মুখে ইরমান প্রশাসন। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে পড়ে তাই চাপে ইসলামাবাদ। ইতিমধ্যে এই ঘটনার কড়া নিন্দা করেছে ভারতও। কূটনৈতিক স্তরে প্রতিবাদ বার্তা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে ইসলামাবাদের কাছে। ভারতের এই চোখ রাঙানিতে তাই সুর নরম করতে বাধ্য হল পাকিস্তান। যে মন্দির ভেঙে তছনছ করা হয়েছে, তা দ্রুত সারিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিল পাক প্রশাসন। ভাঙচুর হওয়া হিন্দু মন্দির মেরামত ও নতুন করে বানিয়ে দেবে স্থানীয় প্রশাসন। এমনটাই আশ্বাস দিয়েছেন পাখতুনখোয়া প্রদেশের খ্যমন্ত্রী মাহমুদ খান। তিনি জানান, তাঁর সরকার কালবিলম্ব না করে ওই মন্দির নতুন করে নির্মাণ করবে। মাহমুদ খানের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ইতিমধ্যেই প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিয়ে দেওয়া হয়েছে।
ধর্মীয় স্বাধিনতায় হস্তক্ষেপ ও সংখ্যালঘু নীপিড়নে বিগত কয়েক বছরে একাধিকবার আন্তর্জাতিক মহলে মুখ পুড়েছে পাকিস্তানের। কিন্তু তারপরেও গোটা দেশজুড়ে সংখ্যালঘুদের উপর এতটুকুও কমেনি অত্যাচার। কখনও লাহোরের গুরুদ্বারকে মসজিদ বানানো, আবার কখনও ইসলামাবাদে নির্মান হতে চলা হিন্দু মন্দিরের কাজ আটকে দেওয়া এমন ঘটনায় আগেও উত্তেজনার পারদ চড়েছে। এবার খাইবার পাখতুনখোয়া হিন্দু মন্দিরে হামলার ঘটনাকে কেন্দ্রকে করেই উত্তপ্ত হয় আন্তর্জাতিক রাজনীতির ময়দান। শেষপর্যন্ত ভারচের চোখ রাঙানি ও মানবাধিকার সংগঠনগুলির চাপে উগ্র ইসলামপন্থী একটি দলের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করতে বাধ্য হয় পাক প্রশাসন। সরকারি নির্দেশে ব্যাপক হারে ধরপাকড় শুরু হয়। ঘটনার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে খাইবার পাখতুনখোওয়ায় মন্দির ভাঙার ঘটনায় ৪৫ জন গ্রেফতার হয়। ধৃতরা সকলেই ওই মৌলবাদী সংগঠনের সদস্য। পুলিশ সূত্রে খবর, এফআইআরে নাম রয়েছে কমপক্ষে ৩৫০ জনের।
সরকারি অর্থেই ক্ষতিগ্রস্ত মন্দিরটি পুনর্নির্মাণ করে দেওয়া হবে বলে শেষপর্যন্ত আশ্বাস দেয় স্থানীয় প্রশাসন। এমনকী চাপের মুখে পড়ে পার্কিস্তানের ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রী নুরুল হর কাদরি ট্যুইট করেন। তিনি দোষীদের কড়া শাস্তিরও দাবি জানান। মন্দির ভাঙার ঘটনায় মূল অভিযোগের আঙুল উঠেছে মৌলবাদী জামিয়াত উলেমা-ই-ইসলাম পার্টির সমর্থকদের দিকে। এদিকে গত নভেম্বরেও সিন্ধ প্রদেশে ভাঙচুর চালানো হয়েছিল একটি মন্দিরে। লন্ডনে থাকা পাকিস্তানি মানবাধিকার কর্মী অনিল গুলজার দাবি করেছেন, পাকিস্তানে ৪২৮ টির মধ্যে আর মাত্র ২০ টি মন্দির অবশিষ্ট আছে। হিন্দুরা পাকিস্তানের সবথেকে বড় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়। আর্ন্তজাতিক মঞ্চে সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে যখন চাপে পাকিস্তান, তখন সেদেশে হিন্দু মন্দির ধ্বংসের ঘটনাকে সমর্থন জানিয়ে একটি ভিডিওবার্তা প্রকাশ করেছে সন্ত্রাসে উসকানি দেওয়ায় অভিযুক্ত ইসলামিক ধর্মপ্রচারক জাকির নায়েক ।