ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, ইরান ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে বড় ভুল করেছে। জেরুজালেমে সুরক্ষা ক্যাবিনেটের বৈঠকে তিনি বলেন, ইরানকে এর মূল্য দিতে হবে। নেতানিয়াহু বলেছেন, সন্ধ্যায় ইজরায়েলে হামলা "ব্যর্থ হয়েছে"। আমেরিকার সমর্থনের জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত ইজরায়েলের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার জন্য ধন্যবাদ, আমরা ইরানের হামলা বিফল করেছি।
ইজরায়েলি কর্মকর্তাদের মতে, প্রায় ১৮১টি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়েছিল। ইজরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী বলেছে যে তারা এর মধ্যে একটি বড় সংখ্যককে বিফল করেছে। এই ঘটনায় ওয়েল্ট ব্যাঙ্কে একজন প্যালেস্তাইন নিহত এবং দুইজন ইজরায়েলি আহত হয়েছে, কারণ ধ্বংসাবশেষ ছড়িয়ে পড়ায় এলাকায় ক্ষতি হয়েছে এবং আগুন লেগে যায়।
গোটা ইজরায়েলে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গিয়েছে। জেরুজালেম এবং জর্ডন থেকে সরাসরি সম্প্রচারের সময় রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের সাংবাদিকরা মাটিতে শুয়ে ছিলেন। মধ্য ইজরায়েলের গেদেরার একটি স্কুলে রকেট হামলা চালান হয়। তবে এতে কেউ হতাহত হয়নি। হোম ফ্রন্ট কমান্ডের প্রধান মেজর জেনারেল রাফি মিলো ক্ষতিগ্রস্ত ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
কতটা ক্ষতি হয়েছে ইজরায়েলের?
মধ্যপ্রাচ্য বর্তমানে সবচেয়ে উত্তাল সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। হিজবুল্লাহ প্রধান হাসান নাসরাল্লাহকে হত্যা করার এবং দক্ষিণ লেবাননে ইজরায়েলের স্থল অভিযানের পর, ইরান মঙ্গলবার মধ্যরাতে ইজরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। ইরানের দাবি, তারা ইজরায়েলে ১৮০টি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে। ইরানের এই হামলা বেশ কৌশলগত ছিল। তেল আবিবের তিনটি ইজরাইলি সামরিক ঘাঁটি এবং গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের সদর দফতর লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে ইরান। ইজরায়েলের নেভাটিম, হাতজারিম এবং তেল নফ সামরিক ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়। তেল নোফ এবং নেভাটিম হল ইজরায়েলি সেনাবাহিনী আইডিএফ-এর সবচেয়ে উন্নত সামরিক ঘাঁটি। স্যাটেলাইট ফুটেজে দেখা যায় নেভাটিমে মাত্র কয়েকটি ক্ষেপণাস্ত্র পড়েছে। ইরান এই হামলায় ফাত্তাহ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে। ইরানের এই হামলায় একজন মারা গেছে এবং একজন আইডিএফ সৈন্য গুরুতর আহত হয়েছে। আহত সেনাকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
বেশীরভাগ ক্ষেপণাস্ত্র আটকে দেওয়া সম্ভব হয়েছে
টাইমস অফ ইজরায়েলের মতে, আইডিএফ বলেছে যে ইজরায়েলের বিমান প্রতিরক্ষা অত্যন্ত কার্যকর। সামরিক বাহিনী অনুসারে, আমেরিকা সময়ের আগেই ইরান হামলা চালাতে পারে তা নিয়ে সতর্ক করে এবং কিছু ক্ষেপণাস্ত্র বাধা দিয়ে ইজরায়েলকে রক্ষা করতে সহায়তা করেছিল। আইডিএফ বলেছে মধ্য মধ্য ইজরায়েলে বিচ্ছিন্ন ভাবে প্রভাব পড়েছে। তবে দক্ষিণ ইজরায়েল বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। হামলায় ইজরায়েলি বিমান বাহিনীর কোন ক্ষতি হয়নি বলেও জানান তিনি। আইএএফ বিমান, এয়ার ডিফেন্স এবং এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল স্বাভাবিকভাবে কাজ করছে।
ইজরায়েলকে সাহায্যকারী দেশগুলোকে হুমকি দিয়েছে ইরান
এদিকে, ইরানের বিদেশমন্ত্রী আব্বাস আরাকচি সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে একটি পোস্টে ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর ক্ষেপণাস্ত্র হামলার জবাবে ইজরায়েলের সমর্থনে আসা দেশগুলিকে সতর্ক করেছে। ইজরায়েলকে সমর্থনকারী দেশগুলোকে ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর শক্তিশালী আক্রমণের সম্মুখীন হতে হবে এমন হুমকিও দেওয়া হয়েছে।