Ahau Dariya: বিশ্ববিদ্যালয়ে সঠিকভাবে হিজাব পরে আসো। নয় তো ঢুকতে দেওয়া হবে না। নিরাপত্তা রক্ষীর বাধা পেয়ে রেগে গিয়ে সমস্ত পোশাকই খুলে ফেলেন ছাত্রী। কঠোর শরিয়া আইনের প্রতিবাদে পোশাক খুলে অন্তর্বাসে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে ঘুরে বেরান তরুণী। আর তার শাস্তি হিসাবে জুটল হাজতবাস ও মানসিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র। ইরানের হিসাব নীতির প্রতিবাদে করে বিশ্বের নজর কাড়লেন এক প্রতিবাসী, সাহসী ছাত্রী।
ইরানে শরিয়া আইন চলে। কঠোরভাবে ধর্মীয় বিশ্বাস অনুসরণ এবং প্রয়োগ হয় সেদেশে। পোশাক থেকে শুরু করে উপাসনা, সবেতেই ইরানের বেশ কিছু কঠোর নিয়ম রয়েছে। ধর্মীয় বিশ্বাসের উর্ধ্বে, এগুলি জনজীবনকে নিয়ন্ত্রণ করে। সরকার এই নিয়মগুলির উপর কড়া নজর রাখে এবং তার লঙ্ঘনের জন্য কঠোর শাস্তিও দেওয়া হয়। এই কঠোর নিয়ম নীতিরই একটি অংশ হিজাব।
বছর দুই আগের কথা। হিজাব বিতর্ক-প্রতিবাদ নজর কেড়েছিল গোটা বিশ্বের। কিন্তু তাতে পরিস্থিতির খুব একটা বদল হয়নি। এবার সেই বিদ্রোহের স্মৃতিই আরও একবার তরতাজা করে দিলেন এক সাধারণ ছাত্রী।
ইরানের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস। আর সেখানেই শুধুমাত্র অন্তর্বাস পরে একটি তরুণী হেঁটে চলছিলেন। অল্প সময়ের মধ্যেই সেই ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায়। জানা যায়, ইরানে হিজাব নিয়ে কড়াকড়ির প্রতিবাদেই তিনি এমনটা করেছিলেন। তরুণী বোঝাতে চেয়েছিলেন, যে পোশাক নির্বাচন করাটা প্রত্যেকের মৌলিক অধিকারের মধ্যে পড়ে। ধর্মীয় রীতি কারও উপর জোর করে চাপিয়ে দেওয়া যায় না। সেই বিষয়ে দেশের সকল মহিলার ও বিশ্ববাসীর নজর টানতেই এমন বড় প্রতিবাদ করেন তিনি।
মহিলার পাশে দাঁড়িয়েছেন অনেকে। সোশ্যাল মিডিয়ায় আহাউ দারিয়াই নামের এই মেয়ের সমর্থনে এগিয়ে এসেছেন অনেকে। এর আগে মাহসা আমিনির সমর্থনে ঠিক একইভাবে বহু মানুষ দাঁড়িয়েছিলেন। দুই বছর আগে পুলিশ হেফাজতে তাঁর মৃত্যু হয়েছিল। 'ঠিকমতো হিজাব না পরার' জন্য ইরানের নীতি পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করেছিল।
আহাউ দারিয়াই এখন কোথায় আছেন?
ইরানের মতো দেশে, সঠিকভাবে হিজাব না পরার জন্যও জেল হতে পারে। সেখানে এই ধরনের প্রতিবাদ ইরানের শাসকগোষ্ঠীর কাছে সরাসরি চ্যালেঞ্জের মতো। এমতাবস্থায় এখন প্রশ্ন একটাই, বর্তমানে তিনি কোথায় আছেন?
মহিলাকে একটি মানসিক চিকিৎসা কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে
ঘটনাটি ঘটেছে তেহরানের ইসলামিক আজাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি শাখায়। অন্য একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, নিরাপত্তা বাহিনী তাঁকে ঘিরে ধরে গাড়িতে তুলে দিচ্ছে। ইরানের একটি সংবাদপত্রের উল্লেখ করে এবিসি নিউজ জানিয়েছে, মহিলাকে প্রথমে একটি থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। তারপর একটি মানসিক চিকিৎসা কেন্দ্রে পাঠানো হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন মুখপাত্র বলেন 'আমরা এই কাজের পিছনে 'আসল উদ্দেশ্য' খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি।' ইরানে এর আগেও এমন বিক্ষোভকারীদের মানসিক চিকিৎসা কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল আবেদন করেছে
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল কর্তৃপক্ষ অবিলম্বে মহিলাকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছে।