তালিবান শাসনের পর ফকিরের অবস্থা আফগানবাসীদের। যারা আগে সরকারি বা বেসরকারি চাকরি করতেন তাঁরাই এখন বেকার। হাতে নেই নগদ টাকা, পয়সা, কাজ। পেটের দায়ে বাড়ির আফগানি কার্পেট, আসবাব বেচতে রাস্তায় নেমেছে ঢল। এক আন্তর্জাতিক দৈনিকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, আফগানরা খাবারের জোগাড়ে সস্তা দরে গৃহস্থালির জিনিসপত্র বিক্রি করে দিতে বাধ্য হচ্ছে।
কাবুলের এক দোকানদার লাল গুল সেই সাক্ষাৎকারে জানান, “বাড়ির জিনিসপত্র যা জিনিসের দাম তারও অর্ধেক মূল্যে বিক্রি করে দিতে হচ্ছে। ২৫ হাজার টাকার একটা রেফ্রিজারেটর, ৫০০০ টাকায় বিক্রি করে দিতে বাধ্য হলাম। কী করব? ছোট ছোট বাচ্চাগুলোকে রাতের খাবারটা তো দিতে হবে।" কাবুলের একটি পার্ক চামন-ই-হোজোরিতে জিনিসপত্র কেনাবেচার লাইন পড়ে যায়। জলের দরে বেচে দিচ্ছে মূল্যবান সামগ্রী। ফ্লি মার্কেটে ১০০,০০০ আফগান মূল্যের পণ্য ২০,০০০ এরও কম দামে বিক্রি করতে দেখা যাচ্ছে।
আফগানিস্তানের এই ছবিগুলিই ধরা পড়ছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরায়। ফ্রিজ, টেলিভিশন সেট, সোফা, আলমারি এবং বাড়ির অন্যান্য আসবাবপত্র বিক্রি করে দিচ্ছেন। বেতন পাননি কয়েক লক্ষ সরকারি, বেসরকারি কর্মীরা।
প্রায় মাসখানেক হতে চলল আফগানিস্তান দখল করেছে তালিবানরা। তারপর থেকেই দুর্দশার পাহাড় নেমে এসেছে দেশের মানুষগুলোর ওপর।
এরজন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে দোষারোপ করছে অনেক বিশেষজ্ঞ মহল। দীর্ঘ চার দশকের যুদ্ধ এবং হাজার হাজার মানুষের মৃত্যুর পর, যখন আফগানিস্তানে নিরাপত্তা ব্যাপকভাবে বাড়ানো হয়, গত ২০ বছরে শত শত বিলিয়ন ডলার ব্যয় করা হয়। এরপর সমস্ত কিছুতে জল ঢেলে সেনাবহিনী গুটিয়ে নেয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। যারফলে আফগানিস্তানে অর্থনীতির দিক থেকেও ধ্বংসের মুখোমুখি হয়ে পড়ে।
মনে করা হচ্ছে, চলতি মাসের শেষের দিকে সেদেশে খাদ্যও শেষ হয়ে যেতে পারে। যে কারণে ১৪ মিলিয়ন মানুষকে অনাহারে ঠেলে দেবে।