Modi Government: বাসমতি বাদে অন্য কোনও চাল রফতানি করা যাবে না। দেশের বাজারে দাম নিয়ন্ত্রণে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে মোদী সরকার। এদিকে এই সিদ্ধান্তে ঘুম উড়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশগুলির। পরিস্থিতি এতটাই গুরুতর যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়ায় বিভিন্ন সুপারমার্কেটে নতুন নিয়ম চালু হয়েছে। তাতে একজন ক্রেতা একবারে সর্বোচ্চ কতটা চাল কিনতে পারবেন, তা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। সেদেশে বাজারে চাল পাওয়া যাচ্ছে না শুনে অনেকেই আগেভাগে বেশি বেশি কিনে রাখতে চাইছেন। এদিকে এমনটা করলে অবস্থা আরও খারাপ হবে। সেই কারণেই এই পথে হেঁটেছে সুপারমার্কেটগুলি।
এর ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন সুপারমার্কেটের সামনে লম্বা লাইন দেখা গিয়েছে। ভারতের এই সিদ্ধান্তের খবর পেয়েই দোকানে ছুটেছেন অনেকে। দাম কম থাকতে থাকতে ১০-১২ প্যাকেট চাল কিনে রাখতে চাইছেন। এমন বেশ কিছু ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে।
বিশ্বায়নের প্রভাবে গত ২০ বছরে মার্কিনীদের খাদ্যাভাস অনেক বদলেছে। আগের তুলনায় অনেক বেশি ভাত খান তাঁরা। আর সেই চালের জন্য এশিয়ার দেশগুলির উপরেই নির্ভরশীল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
একইভাবে কানাডা ও অস্ট্রেলিয়াও আগামিদিনে চালের দাম বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে। সেখানেও অনেকে আগেভাগে চাল কিনে রেখে দিচ্ছেন।
ভারতের এই সিদ্ধান্তে চিন্তিত ইন্টারন্যাশানাল মনিটারি ফান্ডও(IMF)। সম্প্রতি তারা ভারত সরকারকে এই নীতি তুলে নেওয়ার আর্জি করে।
IMF-এর মতে, এই সিদ্ধান্তে বিশ্বজুড়ে প্রভাব পড়ছে। এক সাংবাদিক সম্মেলনে IMF-এর মুখ্য অর্থনীতিবিদ পিয়েরে-অলিভার গৌরিঞ্চাস বলেন, এমন সিদ্ধান্তের ফলে বাকি বিশ্বে খাদ্যদ্রব্যের দাম আরও অস্থির হয়ে যাবে।
তিনি রাশিয়া ও ইউক্রেনের ব্ল্যাক সি চুক্তির সঙ্গে এর তুলনা করেন। সেটি কী? বিশ্বের অন্যতম বড় গম রফতানিকারক ইউক্রেন। আর তারা সেই গম সারা বিশ্বে রফতানি করার জন্য ব্ল্যাক সি ব্যবহার করে। কিন্তু রাশিয়া এই চুক্তি বাতিল করে দিয়েছে। এর ফলে বিশ্বজুড়ে গম রফতানি করতে পারছে না ইউক্রেন। ফলে বিশ্ব বাজারে গমের জোগান কমেছে। বেড়েছে দাম। মুশকিলে আমদানি নির্ভর দেশগুলি।
IMF-এর অর্থনীতিবিদের পূর্বাভাস, বিভিন্ন কারণে, ২০২৩ সালে বিশ্ববাজারে দানাশস্যের দাম ১০-১৫% বৃদ্ধি পেতে পারে। ভারতের চাল রফতানি নীতি, ব্ল্যাক সি চুক্তির অবলুপ্তিকে এর জন্য কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন তিনি।
ভারত যাতে এই নীতি তুলে দেয়, সেই বিষয়ে অনুরোধ জানান অর্থনীতিবিদ।
অন্যদিকে IMF-এর গবেষণা শাখার কর্তা ড্যানিয়েল লে অন্য আশঙ্কা করছেন। তাঁর কথায়, 'ভারতের দেখাদেখি বিশ্বের অন্য দেশগুলিও এমন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে পারে। এর ফলে আন্তর্জাতিক স্তরে মূল্যবৃদ্ধির হার বাড়বে।'