মায়ানমারে ড্রোন হামলায় মৃত অন্তত ১৫০ জন রোহিঙ্গা। মৃতদের মধ্যে বেশ কয়েকজন শিশু ও মহিলা রয়েছে বলে খবর। বহুদিন ধরেই গৃহযুদ্ধ চলছে মায়ানমারে। এখনও পর্যন্ত নেভেনি সংঘর্ষের আগুন। বার্মিজ সেনা তথা ‘টাটমাদাও’-সের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়েছে বিদ্রোহী আরাকান আর্মি। দফায় দফায় সংঘর্ষের জেরে প্রাণভয়ে দেশ ছেড়ে পালাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। এর আঁচ এসে লাগছে পড়শি দেশগুলোতেও। নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে বাংলাদেশ সীমান্তে ভিড় জমাচ্ছেন হাজার হাজার রোহিঙ্গা।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই হামলাটি ঘটেছে মায়ানমারের উপকূলীয় শহর মংডুর বাইরে। একজন প্রত্যক্ষদর্শী, মহম্মদ ইলিয়াস, বলেছেন তার গর্ভবর্তী স্ত্রী এবং ২ বছর বয়সী মেয়ে হামলায় আহত হয় এবং পরে মারা যায়। ইলিয়াস জানান, ড্রোন যখন জনতার ওপর হামলা শুরু করে, তখন তিনি তাদের সঙ্গে সমুদ্র সৈকতে দাঁড়িয়ে ছিলেন। সংবাদ সংস্থা এপি সূত্রে খবর, চলতি সপ্তাহে নতুন করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে রাখাইন রাজ্যে। সেনাবাহিনীর সঙ্গে আরাকান আর্মির সংঘর্ষ বাঁধে। যার জেরে প্রাণভয়ে সেখান থেকে পালাচ্ছিলেন রোহিঙ্গারা। স্থানীয়দের অভিযোগ সেসময়ই রোহিঙ্গাদের উপর ড্রোন হামলা হয়। কিছুক্ষণ পরই দেখা যায় এদিক-ওদিক ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে মৃতদেহ। এই ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছে শিশু ও মহিলাদেরও। কিন্তু কোন সংগঠন এই আক্রমণ করেছে তা জানা যায়নি। আরাকান আর্মিও এই হামলার দায় অস্বীকার করেছে। মায়ানমারের রাখাইনে রাজ্যের মংডুতে বিদ্রোহী আরাকান আর্মির সঙ্গে সেনা তীব্র যুদ্ধ চলছে।
২০২১ সালে মায়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের পর সেখানে সরকার গঠন করে জুন্টা। গত প্রায় বছর তিনেক ধরে তারাই চালাচ্ছে দেশের প্রশাসন। সেই থেকে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের দাবিতে বার বার বিদ্রোহ হয়ছে সেদেশে। মায়ানমারের তিন বড় বিদ্রোহী গোষ্ঠী টিএনএলএ, আরাকান আর্মি ও এমএনডিএএ। একসঙ্গে তাদের জোটকে ডাকা হচ্ছে ‘ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স’ নামে। তাদের যৌথ অভিযানে সম্প্রতি বেশ অস্বস্তিতে পড়েছে জুন্টা। গত বছরের ২৭ অক্টোবর থেকে বিদ্রোহী গোষ্ঠী শুরু করেছে ‘অপারেশন ১০২৭’। যার জেরে মায়ানমারের বেশ কয়েকটি প্রদেশে প্রবল বিদ্রোহের আগুন জ্বলে উঠেছে। কার্যত গৃহযুদ্ধ শুরু হয়ে গিয়েছে। আর এর প্রভাব পড়েছে মণিপুর, মিজোরামের নিরাপত্তা ব্যবস্থাতেও।