পশ্চিমী দেশদের 'সাবধান' করে দিলেন ভ্লাদিমির পুতিন। বুধবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট বলেন, 'পরমাণু যুদ্ধের জন্য রাশিয়া প্রযুক্তিগতভাবে প্রস্তুত।' মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যদি ইউক্রেনে সৈন্য পাঠায়, সেক্ষেত্রে রাশিয়াও ছেড়ে কথা বলবে না, হুঙ্কার পুতিনের।
পুতিন অবশ্য এটাও বলেছেন যে, পরমাণু যুদ্ধের সম্ভাবনা এখনই নেই। ইউক্রেনে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তাও দেখেননি। কিন্তু প্রয়োজন পড়লে পরমাণু অস্ত্র কাজে লাগাতে রাশিয়া প্রস্তুত, সতর্ক করে দেন পুতিন। তিনি বলেন, 'সামরিক-প্রযুক্তিগত দৃষ্টিকোণ থেকে, আমরা অবশ্যই প্রস্তুত।' রাশিয়া-1 টেলিভিশন এবং সংবাদসংস্থা RIA-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এমনটা বলেন পুতিন।
তিনি বলেন, 'মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বুঝতে পেরেছে যে, তারা যদি রাশিয়ার ভূখণ্ডে বা ইউক্রেনে মার্কিন সেনা মোতায়েন করে, সেক্ষেত্রে রাশিয়া সেটা বড়সড় হস্তক্ষেপ হিসাবেই বিবেচনা করবে।'
'মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রাশিয়ান-আমেরিকান সম্পর্কের ক্ষেত্রে যথেষ্ট বিশেষজ্ঞ রয়েছে,' বলেন পুতিন।
১৯৬২ সালের কিউবার ক্ষেপণাস্ত্র সংকটের পর থেকে এটাকেই পশ্চিমের সঙ্গে রাশিয়ার সবচেয়ে বড় সম্মুখ-সংঘাত মনে করা হচ্ছে। পুতিন এর আগেও বেশ কয়েকবার সতর্ক করেছেন যে, পশ্চিমী দেশগুলি ইউক্রেনে যুদ্ধের জন্য সেনা পাঠালে তার থেকে পরমাণু যুদ্ধের ঝুঁকিও তৈরি হতে পারে।
পুতিন ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে কয়েক হাজার সৈন্য পাঠিয়েছিলেন। একদিকে ইউক্রেনীয় বাহিনী এবং অন্যদিকে রাশিয়াপন্থী ইউক্রেনীয় এবং রাশিয়ান প্রক্সিদের মধ্যে পূর্ব ইউক্রেন। প্রায় আট বছর ধরেই সংঘর্ষের আবহ ছিল। তবে ২০২২ থেকে তা বড় আকার গ্রহণ করে।
পশ্চিমী দেশগুলি তার পর থেকেই ইউক্রেনে রাশিয়াকে পরাজিত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তবে ২ বছরের যুদ্ধের পরে, রাশিয়ান বাহিনী ইউক্রেনের প্রায় এক-পঞ্চমাংশ নিয়ন্ত্রণে এনে ফেলেছে।
পরমাণু যুদ্ধ?
পরমাণু অস্ত্রের বিষয়ে রাশিয়ার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী পুতিনই। তবে ঠিক কোন ক্ষেত্রে এমন পদক্ষেপ নেওয়া হবে। 'আমাদের নিজস্ব নীতি আছে,' বলেন পুতিন। পুতিন এটাও জানিয়েছেন, রাশিয়া ইউক্রেন নিয়ে 'সিরিয়াস' আলোচনার জন্য প্রস্তুত।
রাশিয়া এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের দুই বৃহত্তম পারমাণবিক শক্তি। বিশ্বের ৯০%-এরও বেশি পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ করে এই দুই দেশ।
'রাশিয়া ইউক্রেনের বিষয়ে আলোচনার জন্য প্রস্তুত। তবে সেগুলি বাস্তব পরিস্থিতির উপর ভিত্তি করে হওয়া উচিত,' বলেন ভ্লাদিমির পুতিন।
তিনি আরও বলেন, 'মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যদি পরমাণু পরীক্ষা চালায়, রাশিয়াও তা করতে পারে। তবে এটার কোনও প্রয়োজন নেই। আমাদের এখনও এর সম্পর্কে ভাবতে হবে।'