ইউক্রেনের সঙ্গে চলমান যুদ্ধের (Russia-Ukraine War) মধ্যেই ইজরায়েলকে (Israel) কড়া সুরে সতর্ক করেছে রাশিয়া (Russia)। রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রী দিমিত্রি মেদভেদেভ (Russian Prime Minister Dmitry Medvedev) হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যে ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তার প্রস্তাব রাশিয়া ও ইজরায়েলের মধ্যে সম্পর্কের (Russia-Israel Relation) মারাত্মক ক্ষতি করবে। সম্প্রতি অভিযোগ উঠেছে যে রাশিয়াকে সারফেস টু সারফেস মিসাইল সরবরাহ করেছে ইরান (Iran)। এরপর ইউক্রেনকে সাহায্য করার জন্য পশ্চিমা দেশগুলি ইজরাইলের উপর ক্রমাগত চাপ সৃষ্টি করে চলেছে। চাপের কারণে ইউক্রেনকে বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এবং সামরিক সাহায্যের প্রস্তাব দেয় ইজরায়েল।
আমেরিকা চাপ সৃষ্টি করেছে
সিরিয়ায় তাদের বাহিনীর হামলায় রাশিয়া যাতে অসন্তুষ্ট না হয় সেজন্য ইজরায়েল এখনও পর্যন্ত ইউক্রেনকে যে কোনও ধরনের সাহায্য দিতে অস্বীকার করেছে। কিন্তু ইউরোপীয় দেশ ও আমেরিকা চাপ দিয়ে আসছিল যাতে অন্তত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার ক্ষেত্রে ইউক্রেনকে সাহায্য করে ইজরায়েল। তারপরই দেশটির বিদেশ মন্ত্রী নাচমান শাই ইউক্রেনকে সামরিক সাহায্য দেওয়ার ঘোষণা করেছেন।
সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে যে রাশিয়াকে ড্রোন সহায়তা দিচ্ছে ইরান। এছাডা়ও সারফেস টু সারফেস মিসাইল সরবরাহেরও প্রস্তুতি নিচ্ছে। ইজরায়েলের মন্ত্রী নামচান শাই বলেন, 'এখন সময় এসেছে আমেরিকা ও ন্যাটো দেশের মতো ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তা দেওয়ার।'
ইরানের সিদ্ধান্তে ইজরায়েলের উদ্বেগ আরও বেড়ে যায়
রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধে ইরানের নাক গলানো ইজরায়েলের উদ্বেগ বাড়িয়েছে। রাশিয়াকে ড্রোন ও ব্যালিস্টিক মিসাইল ইরান সরবরাহ করেছে বলে জল্পনা রয়েছে। এ কারণে ইজরায়েল এই যুদ্ধে তাদের অবস্থান স্পষ্ট করার জন্য চাপের মধ্যে ছিল। ইজরায়েলি কর্তারা দাবি করেছেন যে ইরানের কাছ থেকে রাশিয়ার সাহায্য নেওয়া ইরানের ক্রমবর্ধমান শক্তি এবং রাশিয়ার দুর্বলতার উদাহরণ।
ইউক্রেনের কিয়েভ শহরে বোমা হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। ওই এলাকায় ইজরায়েলি জনসংখ্যা মোট জনসংখ্যার ৮০ শতাংশ। ইজরায়ের প্রকাশ্যে এই বোমা হামলার নিন্দা করে। ৮০ শতাংশেরও বেশি ইজরায়েলি নাগরিক ইউক্রেনকে সমর্থন করে। ইরানের ড্রোনের সাহায্যে ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার পর ইজরায়েলি কিছু নেতা ইউক্রেনকে আরও সামরিক সাহায্য করার দাবি জানিয়ে আসছেন। কিন্তু সিরিয়ায় রুশ বাহিনীর ভয়ে ইজরায়েল সামরিক সাহায্য করছে না।
ইজরায়েলের সিদ্ধান্তহীন অবস্থা
ইজরায়েল দীর্ঘদিন ধরে অন্যান্য দেশকে রাডার-সহ অন্য সামরিক সহায়তা দিয়ে আসছে। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতির কারণে ইজরায়েল দ্বিধাদ্বন্দ্বে রয়েছে। ইউক্রেনকে সাহায্য করলে সিরিয়া ও লেবাননে ইজরায়েলের সামরিক অভিযানে বাধা দেবেন রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন। এটা সম্ভব যে এর পরিণতি ইজরায়েলের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে। একই সঙ্গে ইজরায়েল যদি ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তা দেওয়া থেকে সরে আসে, তাহলে তাকে পশ্চিমের শক্তির সঙ্গে দ্বন্দ্বের মুখে পড়তে হতে পারে। রাশিয়ায় বসবাসকারী ইহুদিদের নিয়েও উদ্বিগ্ন ইজরায়েল।