Advertisement

Sri Lanka Food Crisis:তীব্র আর্থিক সঙ্কট! শ্রীলঙ্কায় দুধ-পাউরুটির চেয়ে সহজলভ্য সোনা

Sri Lanka Food Crisis: শ্রীলঙ্কায় খাদ্য সংকট ঘনীভূত হয়েছে। মানুষের জন্য সোনা কেনার চেয়ে দুধ কেনা কঠিন হয়ে পড়েছে। এলপিজির তীব্র ঘাটতির কারণে শ্রীলঙ্কার অনেক বেকারি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় রুটির দাম দ্বিগুণ হয়েছে। দরিদ্র ক্লিষ্ট মানুষের প্রতিদিনের রুটি কেনা কঠিন হয়ে পড়েছে।

শ্রীলঙ্কায় খাদ্য সংকট
Aajtak Bangla
  • কলম্বো,
  • 11 Mar 2022,
  • अपडेटेड 3:56 PM IST
  • শ্রীলঙ্কায় খাদ্য সংকট
  • সোনার চেয়ে দুধ পাওয়া আরও কঠিন
  • এমনকি চাকুরিজীবীরাও দুবেলা রুটি সংগ্রহ করতে পারছে না

শ্রীলঙ্কার খাদ্য সংকট এতটাই গভীর হয়েছে যে সেখানকার মানুষের জন্য সোনা কেনার চেয়ে দুধ কেনা আরও কঠিন হয়ে পড়েছে। ৫৪ বছর বয়সী শামলা লক্ষ্মণ রাজধানী কলম্বোর রাস্তায় গভীর রাতে দোকানে দোকানে দুধের সন্ধানে ঘুরে বেড়ান যাতে একটি দুধের প্যাকেট পেতে পারেন। প্রত্যেকদিন তিনি কাকভোরে দুধের খোঁজে বের হন যাতে  সাতজনের পরিবারকে খাওয়াতে পারেন, কিন্তু প্রায়ই দুধ পান না।

দ্য গার্ডিয়ানের সঙ্গে আলাপচারিতায় তিনি বলেন, 'আজকাল কোনো দোকানে দুধ পাওয়া অসম্ভব হয়ে পড়েছে। আর দোকানে থাকলেও এত দাম যে আমরা কিনতে পারি না। দুধের দাম আগের তুলনায় তিনগুণ বেশি হওয়ায় পরিবারের জন্য দুধ কিনতে পারছি না।

চিকেন হয়েছে মহার্ঘ
চিকেন শ্রীলঙ্কার খাবারের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ, কিন্তু এর দাম বৃদ্ধির কারণে এটি সাধারণ মানুষের প্লেট থেকে অদৃশ্য হয়ে গেছে। চিকেনের দাম দ্বিগুণ হওয়ায় তা এখন মানুষের লাক্সারি জিনিসে পরিণত হয়েছে। শামলা বলেন, “আমাদের যা যা প্রয়োজন তা প্রায় সবই আমাদের নাগালের বাইরে। প্রতিদিন আমি ভয়ে থাকি আগামীকাল আমি আমার পরিবারকে কী খাওয়াব।"

 

 

শ্রীলঙ্কা তার সবচেয়ে খারাপ আর্থিক সংকটের মুখোমুখি। দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ প্রায় শূন্য এবং চfনসহ অনেক দেশের ঋণের চাপে শ্রীলঙ্কা দেউলিয়া হওয়ার পথে। জানুয়ারিতে শ্রীলঙ্কার বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৭০% কমে২.৩৬ বিলিয়ন ডলার হয়েছে। বৈদেশিক মুদ্রার অভাবে শ্রীলঙ্কা বিদেশ থেকে খাদ্য, ওষুধ, জ্বালানিসহ প্রয়োজনীয় সব পণ্য আমদানি করতে পারছে না।

এলপিজির ঘাটতির কারণে অনেক বেকারি বন্ধ
 শ্রীলঙ্কায় এলপিজির তীব্র ঘাটতি দেখা দিয়েছে, যার কারণে ১০০০  বেকারি বন্ধ করতে হয়েছে। সপ্তাহের শুরুতে একটি শিল্প সমিতি জানিয়েছিল, দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের অভাবে গ্যাস পাওয়া যাচ্ছে না, যার কারণে বেকারিগুলো বন্ধ করতে হচ্ছে।

Advertisement

দেশে জ্বালানি সংকটের কারণে অনেক বিদ্যুৎকেন্দ্রও বন্ধ রাখতে হয়েছে। মানুষ প্রয়োজনের সময় বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। দিনে সাত ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন থাকতে হচ্ছে।

এন.কে সিলন বেকারি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি জয়াবর্ধনে বলেছেন, রান্নার গ্যাসের ঘাটতির কারণে কিছু শহুরে এলাকায় রুটির দাম দ্বিগুণ হয়ে প্রায় ১৫০  শ্রীলঙ্কান রুপি ০.৭৫ ডলা5) হয়েছে।

জয়াবর্ধনে বলেন, 'এই অবস্থা আরও এক সপ্তাহ চলতে থাকলে ৯০ শতাংশ বেকারি বন্ধ করে দিতে হবে। অনেক বেকার ঋণ নিয়েছে, তারা তা পরিশোধ করতে পারবে না। সরকারের উচিত অবিলম্বে কিছু প্রতিকার করা।

রুটি শ্রীলঙ্কার দরিদ্র পরিবার এবং শ্রমিকদের খাদ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। শ্রীলঙ্কার প্রায় প্রতিটি গ্রামে এবং শহরে একটি বেকারি পাওয়া যায়। বেকারি বন্ধ এবং রুটির দাম বৃদ্ধি দরিদ্র মানুষের কোমর ভেঙে দিচ্ছে।

 

 

খুচরো গ্যাস বিক্রেতাদের ব্যবসা বন্ধ হয়ে গিয়েছে
 গ্যাসের সংকটের প্রভাব পড়ছে ছোট রেস্তোরাঁসহ মানুষের ওপরও। সরবরাহ না থাকায় অনেক গ্যাস খুচরো ব্যবসায়ী তাদের ব্যবসা বন্ধ করে দিয়েছেন।

রান্নার গ্যাস রিটেইল আউটলেটের মালিক দানুশা গুণবর্ধনে  রয়টার্সকে বলেন, "সাধারণত আমরা প্রতি দুই দিনে প্রায় ১০০ টি গ্যাসের ক্যানিস্টার পাই। গত সোমবার থেকে আমরা এক ক্যানও গ্যাস পাইনি। আমার ডেলিভারি বয় ছিল কিন্তু কাজ না করার কারণে তাকেও সরিয়ে দিয়েছি। এখন তারও কোনো কাজ নেই।

শ্রীলঙ্কার দুটি গ্যাস সরবরাহকারী লফস গ্যাসের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা বলেছেন, ব্যাঙ্কগুলি ঋণ দিতে অস্বীকার করায় আমদানি স্থবির হয়ে পড়েছে। আমাদের কোম্পানি সাধারণত ৫০০  মিলিয়ন ডলার মূল্যের কাতার এবং ওমান থেকে প্রায় 15 হাজার টন গ্যাস ক্রয় করত। বিদ্যুৎ মন্ত্রকের সচিব কেডিআর ওলগা বলেছেন, শ্রীলঙ্কা সোমবার দুটি ডিজেল চালান পাবে এবং এই সপ্তাহের শেষের দিকে আরেকটি ডিজেল চালান পাবে বলে আশা করা হচ্ছে, যা আংশিকভাবে জ্বালানি ঘাটতি পূরণ করবে।

দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে শ্রমিক শ্রেণীও সমস্যায় পড়েছে
শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক অবস্থার জন্য শুধু দরিদ্র অংশই ভুগছে না, যে  শ্রেণী প্রচুর উপার্জন করে তারাও তাদের চাহিদা পূরণ করতে পারছে না। শ্রীলঙ্কায় সবজির দাম আকাশচুম্বী, যার কারণে সাধারণ মানুষ সবজি কিনতে পারছে না।

৪০  বছর বয়সী নিশান শানাকা কলম্বোর একজন সিভিল ইঞ্জিনিয়ার। কিন্তু এখন চাকরির পাশাপাশি তিনি কলম্বোর রাস্তায় অটোরিকশাও চালান যাতে তিনি তার পরিবারের চাহিদা মেটাতে পারেন। অফিস থেকে আসার পর, নিশান সন্ধ্যায় এবং সপ্তাহান্তে অটো চালায়। চাকরি থেকে উপার্জিত অর্থ এখন তাদের পরিবারের খাওয়া-দাওয়া এবং ছেলেমেয়েদের স্কুলের ফি দেওয়ার জন্য কম।

তিনি দ্য গার্ডিয়ানকে বলেন, 'সবকিছুর দাম বেড়েছে। টফি কিনতে গেলেও এত দাম যি কিনা কঠিন হয়ে পড়ে। জ্বালানি তেলের দাম দ্রুত বেড়ে যাওয়ায় সবকিছুর দামের ওপর প্রভাব পড়ছে। আমার মেয়ে স্কুলে যাওয়ার বাস পায় না কারণ স্কুলের লোকজন জ্বালানির অভাবে বাস সার্ভিস বন্ধ করে দিয়েছে।

Read more!
Advertisement

RECOMMENDED

Advertisement