প্রথমটায় মনে করা হয়েছিল এবারের তালিবানরা হয়তো কিছুটা আলাদা। অনেক বেশি আধুনিক এবং নারী স্বাধীনতায় বিশ্বাসী। আফগান ভূমি দখল করার পর অন্তত তেমনটাই ইঙ্গিত দিয়েছিল রাষ্ট্রসংঘের পক্ষ থেকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা এই সংগঠন। কিন্তু দায়িত্বে আসার পরই নিজেদের পুরনো রূপেই ফেরে গেল তালিবানরা। একের পর এক তান্ডবের পাশাপাশি নতুন নতুন ফতোয়া। বিশেষ করে নারী নিরাপত্তা ইতিমধ্যেই কার্যত শিকেয় উঠেছে। এবার আরও বড় ফতোয়া জারি করল তালিবানরা। সে দেশের কোনও মহিলাকে খোলাধুলোয় অংশ নেওয়ার ক্ষেত্রে জারি হল নিষেধাজ্ঞা। কারণ হিসেবে তালিবানদের দাবি, স্পোর্টসে মহিলাদের শরীর দেখা যায়। তাই তা থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে। এমনকী ক্রিকেটের ক্ষেত্রেও সেই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
আহমেদুল্লা ওয়াসিক, তালিবান কালচারাল কমিশনের ডেপুটি হেড সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, খেলাধুলো মহিলাদের জন্য প্রয়োজনীয় বিষয় নয়।
দিন কয়েক আগে অপর এক ফতোয়াতে বলা হয়, মহিলা শিক্ষিকারাই শুধুমাত্র মেয়েদের পড়াতে পাড়বে। আর তা যদি সম্ভব না নয়, তাহলে বৃদ্ধ পুরুষ শিক্ষকরা, বিশেষ করে যাদের চরিত্রগত ভাবে কোনও সমস্যা নেই তারাই একমাত্র মেয়েদের পড়াতে পারবে। তারা আরও জানায়, যে সমস্ত ছাত্রীরা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনো করছে তাঁদের অবয়ারোব পড়তে হবে। অর্থাৎ, গোটা শরীর ঢাকা পোশাক। সেই সঙ্গে মুখও ঢাকতে হবে নিকাব দিয়ে। পাশাপাশি, লিঙ্গ অনুসারে ক্লাসরুম ঠিক করতে হবে। একান্ত যদি তা সম্ভব না হয়, তাহলে যেন সেই বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে ছাত্রীদের পর্দা দিয়ে আড়াল করা হয়।
এই নির্দেশিকা মূলত বেসরকারি স্কুল ও কলেজগুলির ক্ষেত্রে আরোপ করা হয়েছে। ২০০১ সালে তালিবান-১.০ সরকারের পতনের পর থেকেই আফগান ভূমে গজিয়ে উঠেছে বহু বেসরকারি স্কুল কলেজ। জোর দেওয়া হচ্ছিল নারী স্বাধীনতার ওপরও।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার আফগানিস্তানে নতুন সরকারের ঘোষণা করে তালিবান। মোল্লা হাসান আখন্দের নেতৃত্বে সেই সরকার গঠন হতে চলেছে। যদিও, এই সরকারকে অস্থায়ী বলে ঘোষণা করেছেন তালিবান নেতারা।