আফগানিস্তান দখলের পর প্রথমবারের মতো তালিবানরা মিডিয়ার সামনে এল। মঙ্গলবার তালিবান মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ কাবুল থেকে সংবাদিক সম্মেলন করেন। এতে তিনি আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগের বিষয়টির কথা তোলেন। নারীদের প্রতি তাদের মনোভাব কী হবে, আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলির সঙ্গে তারা যে ধরনের সম্পর্ক রাখতে চান, মিডিয়ার জন্য নিয়ম কী হবে? সব উত্তরই দিয়েছেন তালিবান নেতা।
তালিবানের সংবাদিক সম্মেলনের বিশেষত্ব ছিল তারা আন্তর্জাতিক মহলের কাছে স্বীকৃতি দাবি করছে। একই সঙ্গে আফগানিস্তানে বিদেশি দূতাবাসগুলোর ক্ষতি না করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেনন মহিলা ও সংবাদ মাধ্যমকে কিছু নিয়ম মেনে স্বাধীনতা দেওয়া হবে।
তালেবানরা যা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে
- ১.আফগানিস্তানের মাটি কোন দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র, আক্রমণ করার জন্য ব্যবহার করা হবে না।
- ২. কোন আন্তর্জাতিক দূতাবাস বা প্রতিষ্ঠানের ক্ষতি করা হবে না। তাদের নিরাপত্তা দেবে শুধু তালিবানরা। জবিহুল্লাহ মুজাহিদ বলেন, 'কাবুলে দূতাবাসের নিরাপত্তা আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। আমরা সকল দেশকে আশ্বস্ত করতে চাই যে সমস্ত দূতাবাস, আন্তর্জাতিক সংগঠন এবং এনজিওগুলির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমাদের বাহিনী সেখানে আছে।'
- ৩. শরিয়ত আইনের অধীনে নারীদের অধিকার ও স্বাধীনতা দেওয়া হবে । তারা স্বাস্থ্য সেক্টর এবং স্কুলে কাজ করতে পারবেন। নারীরা কি মিডিয়ায়ও কাজ করতে পারবে? এই প্রশ্নে, মুখপাত্র একটু ঘুরিয়ে উত্তর দিয়েছেন। তিনি বলেন, যখন তালিবান সরকার গঠিত হবে, তখন স্পষ্টভাবে বলা হবে শরিয়ত আইন অনুযায়ী কোন ছাড় পাওয়া যাবে।
- ৪. বেসরকারি মিডিয়াকে স্বাধীনভাবে কাজ করার অনুমতি দেওয়া হবে । তবে মুখপাত্র মনে করিয়ে দেন, 'সাংবাদিকদের আফগানিস্তানের মূল্যবোধের কথা মাথায় রেখে কাজ করতে হবে।'
- ৫. মুখপাত্র বলেছেন যে আফগান যুদ্ধ এখন শেষ। অতীতে যারা তালিবানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে তাদের তালিবান ক্ষমা করে দিয়েছে। মুখপাত্র আরও বলেন- কোনো দেশ-ব্যক্তির ওপর প্রতিশোধ নেওয়ার কোনো উদ্দেশ্য নেই। এতে প্রাক্তন সেনা সদস্য, প্রাক্তন আফগান সরকারের সদস্যরাও রয়েছেন।
- ৬. আফগানিস্তানে কেউ কাউকে অপহরণ করতে পারবে না। কেউ কারো জীবন কেড়ে নিতে পারে না। ক্রমাগত নিরাপত্তা বৃদ্ধি করা হবে।
- ৭. তালিবানরা প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যে তাদের শাসনে দেশের অর্থনীতি এবং মানুষের জীবনের মান উন্নত হবে।
- ৮. তালিবান মুখপাত্র বলেন, 'তালিবান অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে দেশের আইন-শৃঙ্খলা তৈরি করবে। এর পর মানুষ শান্তিতে বসবাস করতে পারবে।'
- ৯. তালিবানরা আফগানিস্তানে বসবাসকারী মানুষকে আশ্বস্ত করেছে, 'কেউ তোমাদের ক্ষতি করবে না। কেউ তোমাদের দরজায় কড়া নাড়বে না।'
- ১০. মুখপাত্র দাবি করেন, আগের সরকার (আশরাফ গনির সরকার) সক্ষম ছিল না এবং কাউকে নিরাপদে রাখতে পারেনি। মুখপাত্র প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে তালিবান সবাইকে নিরাপত্তা দেবে।