বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক অশান্তি তুঙ্গে। হিন্দুদের ওপর প্রতিনিয়ত হামলার নানা রিপোর্ট প্রকাশিত হচ্ছে। এমতাবস্থায় বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে বড় বিবৃতি দিল আমেরিকা। তাতে বলা হয়েছে, বাইডেন সরকার বাংলাদেশ নিয়ে সেভাবে মাথা-ই ঘামায়নি। তবে এখন হোয়াইট হাউসে ফিরেছেন ট্রাম্প। আর এবার এই বিষয়ে নজর দেওয়া হতে পারে বলে দাবি করা হচ্ছে।
ইউএস কমিশন অন ইন্টারন্যাশনাল রিলিজিয়াস ফ্রিডম-এর প্রাক্তন কমিশনার জনি মুর বলছেন, আমেরিকার বাইডেন সরকার বাংলাদেশের প্রতি সেভাবে মনোযোগই দেয়নি। এই সময়টা শুধু বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের জন্যই নয়, গোটা দেশের অস্তিত্বের জন্য হুমকিস্বরূপ। তবে এবার এই বিষয়টিতে নজর দেবেন ট্রাম্প।
তিনি বলেন, 'ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁর সেরা টিমটা নিয়েই দায়িত্ব নিতে চলেছেন। তাঁর টিম আমেরিকানদের মূল্যবোধের প্রতিনিধি। তারা ভারতকে বন্ধু হিসেবে দেখে।'
জনি মুর বলেন, 'আমি এটা ভেবে অবাক হয়ে যাচ্ছি যে, বর্তমান আমেরিকান সরকার বাংলাদেশের দিকে তেমন মনোযোগই দেয় না। কিন্তু বাস্তবটা এটাই যে আমেরিকায় সরকার বদল হতে চলেছে। এই সরকারের বিদেশনীতি অনেক বেশি ভাল হবে। তাই আমি এটুকু বলতে পারি যে, ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে ফিরে আসছেন। আমেরিকান মূল্যবোধ নিয়ে তাঁর দল একটি সুন্দর, ভাল ভবিষ্যতের জন্য কাজ করবে। ট্রাম্পের এই টিম ভারতকে গুরুত্বপূর্ণ মিত্র হিসেবে দেখে। বর্তমানে বিশ্বজুড়ে ৫০টিরও বেশি যুদ্ধ চলছে।'
বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে হিংসার পরিস্থিতিতে আমেরিকার অবস্থান সম্পর্কে মুরকে প্রশ্ন করা হয়েছিল। তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল যে, এমন পরিস্থিতিতে বিডেন সরকারের তুলনায় ট্রাম্প সরকার আলাদা কী করবে? তিনি বলেন, 'পৃথিবীতে এমন কোনও চ্যালেঞ্জ নেই যার সমাধান করা যায় না।'
তিনি বলেন, 'আমি আপনাকে এটুকু আশ্বস্ত করতে যে, ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে মানবাধিকারের ক্ষেত্রে ধর্মীয় স্বাধীনতাকেই সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছিল।'
তিনি আরও ব্যাখ্যা করে বলেন, 'এটাই আমাদের বিদেশনীতির কেন্দ্রবিন্দু ছিল। এবারও তেমনই কিছু দেখতে পাবেন। আমেরিকা ও ভারতের মধ্যে এমন সহযোগিতা গড়ে তোলা হবে, যা আপনারা আগে কখনও দেখেননি।'
হিন্দু ধর্মীয় নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গত ২৫ নভেম্বর রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছিল। বাংলাদেশের আদালত তাঁকে জামিন না দিয়ে কারাগারে পাঠিয়েছে। এর পর চিন্ময় দাসের সমর্থকরা রাস্তায় নেমে সহিংস বিক্ষোভ শুরু করে।'
ভারতের বিদেশ মন্ত্রক বাংলাদেশে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেফতার এবং তাঁকে জামিন না দেওয়ায় বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
বাংলাদেশে হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে উগ্রবাদীদের মাধ্যমে হিন্দু ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের ক্রমাগত টার্গেট করার ঘটনা বেড়েছে। সংখ্যালঘু হিন্দুদের বাড়িঘর ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের পাশাপাশি চুরি, ভাঙচুর এবং হিন্দু মন্দিরের অপবিত্রতা ঘটানোর মতো ঘটনা ঘটেছে।