মশাবাহিত প্রাণঘাতী রোগ ডেঙ্গি প্রতিরোধে দ্বিতীয় একটি ভ্যাকসিন প্রস্তুত করা হয়েছে। জাপানের ওষুধ প্রস্তুতকারক তাকেদা ফার্মাসিউটিক্যালসে ডেঙ্গির এই দ্বিতীয় টিকাটি প্রস্তুত করেছে। এই ভ্যাকসিন প্রাথমিক পরীক্ষায় পাস হয়েছে বলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) জানিয়েছে। TAK-003 নামে লাইভ-এটেন্যুয়েটেড ভ্যাকসিন যা ডেঙ্গু সৃষ্টিকারী ভাইরাসের চারটি সেরোটাইপের দুর্বল সংস্করণ রয়েছে। যা রোগ সৃষ্টি না করেই শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করতে সাহায্য করে।
WHO এই ভ্যাকসিনের স্বাস্থ্য সংস্থা মান, নিরাপত্তা এবং কার্যকারিতার জন্য মূল্যায়ন ও অনুমোদন করেছে। এই প্রক্রিয়াটি করা হয়, যাতে ভ্যাকসিনটি আন্তর্জাতিক মান পূরণ করে এবং বিশ্বব্যাপী, বিশেষ করে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলিতে ব্যবহার করা যেতে পারে।
এই টিকাটিকে রাষ্ট্রসংঘ এবং অন্যান্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাগুলির দ্বারা তাদের সংগ্রহের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করার অনুমতি দেয়, যা জনস্বাস্থ্য কর্মসূচিতে বিতরণ এবং ব্যবহারে সহায়তা করে।
ডাঃ রজেরিও গাসপার, WHO ডিরেক্টর ফর রেগুলেশন অ্যান্ড প্রি-কোয়ালিফিকেশন, বলেন, "এখনও পর্যন্ত মাত্র দুটি ডেঙ্গুর ভ্যাকসিন প্রি-কোয়ালিফাই করেছে, আরও ভ্যাকসিন ডেভেলপারদের মূল্যায়নের জন্য এগিয়ে আসার অপেক্ষায় রয়েছি, যাতে আমরা নিশ্চিত করতে পারি যে সবার কাছে ভ্যাকসিন পৌঁছে যাবে।"
TAK-003 ৬ থেকে ১৬ বছর বয়সীদের দেওয়া যেতে পারে। WHO অনুসারে, ডোজগুলির মধ্যে ৩ মাসের ব্যবধানে ২টি ডোজ নিতে হবে। WHO এর আগে সানোফি পাস্তুর তৈরি ডেঙ্গি প্রতিরোধক সিওয়াইডি-টিডিভি ভ্যাকসিনকে প্রাক-যোগ্যতা দিয়েছিল।
ব্রিটেন, ব্রাজিল, আর্জেন্তিনা, ইন্দোনেশিয়া এবং থাইল্যান্ডও TAK-OO3 অনুমোদন করেছে। এটি অনুমান করা হয় যে প্রতি বছর বিশ্বব্যাপী ১০০ থেকে ৪০০ মিলিয়নের বেশি ডেঙ্গি আক্রান্ত হয় এবং কয়েক কোটি মানুষ এমন দেশে বাস করে যেখানে খুব বেশই প্রকোপ। যার বেশিরভাগই এশিয়া, আফ্রিকা এবং আমেরিকাতে।
জলবায়ু পরিবর্তন এবং নগরায়নের কারণে ভৌগলিকভাবে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি এবং প্রসারিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এই রোগে উচ্চ জ্বর, মাথাব্যথা, শরীরে ব্যথা, বমি বমি ভাব এবং ফুসকুড়ির মতো লক্ষণ দেখা যায়। ডেঙ্গিতে পেটে ব্যথা, বমি, নাক বা মাড়ি থেকে রক্ত পড়া এবং চরম ক্লান্তিও হতে পারে। কারও কারও মৃত্যু পর্যন্ত হয়।