ধরুণ আপনার প্রচুর সম্পত্তি রয়েছে। সেই সম্পত্তি সন্তানদের মধ্যে ভাগ করে দিতে গেলে আপনি একটা দলিল বানাবেন। এটাইতো স্বাভাবিক। কিন্তু সেই সম্পত্তির পরিমাণ যদি অনেক বেশি হয়, তবে ঠিক কী করা যেতে পারে। এবারে একটা মজার গল্প বলি। সম্পত্তি ভাগের জন্য চলল রীতিমতো ইন্টারভিউ। শুনে চমকে গেলেন তো। আসলে চাকরি করতে গেলে আমরা সাধারণত ইন্টারভিউ দিয়ে থাকি। সেখানে দাঁড়িয়ে সম্পত্তির ভাগ পেতেও ইন্টারভিউ দিতে হল। খাবার টেবিলে বসে পাঁচ ছেলে মেয়েকে দিতে হল ইন্টারভিউ। জানেন কে নিলেন সেই ইন্টারভিউ। তাঁর পরিচয়টা এই ভাবে বলাই যায়। তিনি বিশ্বের ধনী ব্যক্তিদের মধ্যে অন্যতম। নাম বার্নাড আর্নল্ট। লুই ভিতোঁ সংস্থার চেয়ারম্যান তিনি। এবার গল্পটা একটু খুলে বলি। কাজের অনেক চাপ। তাই মাসে একবারের বেশি ছেলে মেয়ের সঙ্গে দেখা হয় না তাঁর। ওই দিন খাওয়ার টেবিলেই তাঁদের সবার দেখা হয়। নানা আলাপ আলোচনাও হয় ওই খেতে খেতেই। তাই খাবার টেবিলকেই বার্নাড বেছে নিলেন পরীক্ষার জন্য। এর আগেও তিনি এইভাবে পরীক্ষা নিয়েছেন। পরীক্ষার মধ্যে দিয়ে তিনি জানার চেষ্টা করেন কার হাতে কোটি কোটি টাকার ব্যবসার রাশ তুলে দেবেন। কী অদ্ভুত পরীক্ষা তাই না বলুন। জানা যাচ্ছে, মাসে একবার করে প্যারিসে লুই ভিতোঁ সংস্থার যে সদর দপ্তর রয়েছে, সেই পাঁচ ছেলে মেয়ের সঙ্গে লাঞ্চে বসেন বার্নাড আর্নল্ট। খাওয়া-দাওয়া বাবদ সময় 90 মিনিট। সামনে মুখরোচক খাবার দাওয়ার থাকে। আর সঙ্গে চলে আলোচনা। নিজের স্মার্ট গ্যাজেট বের করে ওই শিল্পপতি শোনান, সেদিন ঠিক কী নিয়ে তিনি কথা বলতে চান। তিনি একাই যে কথা বলেন এমন নয়। তিনি ব্যবসা নিয়ে মতামত নেই, পরামর্শও নেন। আসলে তখনই তিনি বোঝার চেষ্টা করেন তাঁর যোগ্য উত্তরসূরি কে। ব্লুমবার্গ বিলিওনেয়ার সূচক বলছেন, 2022 সালের শেষ দিকে টেসলা কর্তা ইলন মাস্ককেও পিছনে ফেলে দিয়েছেন আর্নল্ট। পেয়েছেন পৃথিবীর ধনীতম ব্যক্তির খেতাবও। 19 এপ্রিল পর্যন্ত ওই শিল্পপতির সম্পত্তির পরিমাণ 208 বিলিয়ন ডলার। ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় 17 লক্ষ কোটি টাকা। তাঁর এই সংস্থা তৈরি হয় 1989 সালে। বুলগারি, টিফানি, সেপোরার মতো সংস্থার জনক তিনিই। ক্রিশ্চিয়ান ডিওরের মালিক আর্নল্টের বড় কন্যা ডেলফিন। বাকি সম্পত্তি চার ছেলের মধ্যে ভাগ করা হয়েছে। তবে কে তাঁর যোগ্য উত্তরসূরি, সেই নিয়ে মুখে কুলুপ এঁনেছেন আর্নল্ট।