scorecardresearch
 

বাংলাদেশের দুই গুণীকে সম্মান ভারতের, পদ্মশ্রীতে ভূষিত সনজীদা খাতুন ও সাজ্জাদ আলী জহির

প্রতিবছর সাধারণতন্ত্র দিবসের আগে ভারত সরকার পদ্ম প্রাপকদের নাম ঘোষণা করে থাকে। ৭২তম সাধারণতন্ত্র দিবসের আগেও তার অন্যথা হয়নি। এবছর এনআরআই তথা বিদেশি বিভাগে পদ্ম পুরস্কার পেয়েছেন ১০ জন। তাঁদের মধ্যে দু’‌জন বাংলাদেশের নাগরিক। ভারত সরাকের চতুর্থ সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা ‘পদ্মশ্রী-২০২১’ খেতাব পাচ্ছেন বাংলাদেশের অন্যতম সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব সনজীদা খাতুন ও লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) কাজী সাজ্জাদ আলী জহির।

Advertisement
বাংবাদেশের দুই গুণীকে পদ্ম সম্মান ভারতের বাংবাদেশের দুই গুণীকে পদ্ম সম্মান ভারতের
হাইলাইটস
  • সনজীদা খাতুন পদ্মশ্রী পাচ্ছেন শিল্পকলায়
  • কর্নেল সাজ্জাদ আলী জহির পাচ্ছেন ‘পাবলিক অ্যাফেয়ার্স’ শাখায়
  • এই বছরই বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী বর্ষ

প্রতিবছর সাধারণতন্ত্র দিবসের আগে ভারত সরকার পদ্ম প্রাপকদের নাম ঘোষণা করে থাকে। ৭২তম সাধারণতন্ত্র দিবসের আগেও তার অন্যথা হয়নি। এবছর এনআরআই তথা বিদেশি বিভাগে পদ্ম পুরস্কার পেয়েছেন ১০ জন। তাঁদের মধ্যে দু’‌জন বাংলাদেশের নাগরিক। ভারত সরাকের  চতুর্থ সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা ‘পদ্মশ্রী-২০২১’ খেতাব পাচ্ছেন বাংলাদেশের অন্যতম সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব সনজীদা খাতুন ও লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) কাজী সাজ্জাদ আলী জহির।

ভারত থেকে ঢাকায় আরও ৫০ লক্ষ করোনা টিকা, পরীক্ষামূলক প্রয়োগ শুরু বুধবার

সনজীদা খাতুন বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনের অন্যতম ব্যক্তিত্ব। তিনি একাধারে রবীন্দ্রসঙ্গীতশিল্পী, লেখক, গবেষক, সংগঠক, সঙ্গীতজ্ঞ ও শিক্ষিকা।  সনজীদা বাংলাদেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ছায়ানটের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও বর্তমানে সভাপতি। কাজী মোতাহার হোসেন ও সাজেদা খাতুনের কন্যা সন্জীদা খাতুন ঐতিহ্যবাহী পরিবারের পরম্পরাই শুধু রক্ষা করেননি, নিজেই সৃষ্টি করেছেন নতুন ঐতিহ্যধারা। ৮৮ বছরের  সনজীদা খাতুন ছায়ানটের পাশাপাশি জাতীয় রবীন্দ্র সংগীত সম্মিলন পরিষদেরও প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। প্রচলিত ধারার বাইরে ভিন্নধর্মী একটি শিশুশিক্ষা প্রতিষ্ঠান নালন্দার সভাপতির দায়িত্বও পালন করছেন তিনি। একুশে পদক, বাংলা একাডেমী সাহিত্য পুরস্কার, রবীন্দ্র স্মৃতি পুরস্কারে (পশ্চিমবঙ্গ) ভূষিত সনজীদা ১৬টি বইও লিখেছেন। সনজীদা খাতুন ১৯৫৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে সম্মানসহ স্নাতক এবং ১৯৫৫ সালে ভারতের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়, শান্তিনিকেতন থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। পরে ১৯৭৮ সালে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৬২ সালে রবীন্দ্র সংগীতের বিরুদ্ধে পাকিস্তানী সরকারের নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে যে আন্দোলন হয়, তাতেও তিনি নেতৃত্ব দেন। সনজীদা খাতুনের কর্মজীবন শুরু হয় শিক্ষক হিসেবে। শান্তিনিকেতন থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভের পর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের শিক্ষক হন। দীর্ঘদিন অধ্যাপনা করে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতা থেকে অবসরগ্রহণ করেন।

Advertisement

‘ন ডরাই’র বাজিমাত, বাংলাদেশের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার উঠল কাদের হাতে?

অন্যদিকে লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) কাজী সাজ্জাদ আলী জহির বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। স্বাধীনতাযুদ্ধে তার সাহসিকতার জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে বীরপ্রতীক খেতাব প্রদান করেছে। মুক্তিযুদ্ধ গবেষক অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট কর্নেল কাজী সাজ্জাদ আলী জহিরের জন্ম ১৯৫১ সালের ১১ এপ্রিল। ফৌজদারহাট ক্যাডেট কলেজ থেকে এসএসসি ও এইচএসসি পাস করে ১৯৬৯ সালে তিনি পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। ১৯৭১ সালে ৭৮ ফিল্ড রেজিমেন্ট আর্টিলারিতে কমিশন পাওয়া সাজ্জাদ জহির একাত্তরে বাঙালির মুক্তিসংগ্রাম চলাকালে পাকিস্তান সেনাবাহিনী ত্যাগ করে জম্মু-কাশ্মীর সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে আসেন এবং জেড ফোর্সের অধীনে দ্বিতীয় গোলন্দাজ বাহিনীর উপ-অধিনায়ক হিসেবে বৃহত্তর সিলেট অঞ্চলে যুদ্ধে যোগ দেন। বড়লেখা ও শমসেরনগর যুদ্ধে অসীম সাহসিকতার জন্য বাংলাদেশ সরকার সাজ্জাদ জহিরকে বীর প্রতীক খেতাবে ভূষিত করে। ১৯৮২ সালে সেনাবাহিনী থেকে অবসরে যাওয়া সাজ্জাদ আলী জহির ২০১৩ সালে স্বাধীনতা পদক পান। তিনি একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির কেন্দ্রীয় কমিটির একজন সদস্য। 

১৯৫৪ সাল থেকে ভারত সরকার শিল্পকলা, শিক্ষা, বাণিজ্য, সাহিত্য, বিজ্ঞান, খেলাধুলা, সমাজসেবা ও সরকারি ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য বিশিষ্ট ব্যক্তিদের পদ্ম সম্মান প্রদান করে আসছে। তার মধ্যে এবছর বাংলাদেশের স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর পূর্তি। সোমবারই ঢাকায় ভারতীয় দূতাবাস সূত্রে দুই কৃতির সম্মান পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। 

 

Advertisement