কার্তিক মাসে কৃষ্ণ পক্ষ শুরু হওয়ার চতুর্থ দিনে পালন করা হয় করবা চৌথ। স্বামীর মঙ্গল কামনায় উপবাস রাখেন স্ত্রীয়েরা। 'করবা' অর্থাৎ মাটির পাত্র এবং 'চৌথ' অর্থাৎ চতুর্থী, এই দুই মিলিয়েই এই উৎসবের নামকরণ। সারাদিন উপবাস করে সন্ধ্যাবেলা চালুনিতে চাঁদ ও স্বামীর মুখ দেখে উপবাস ভাঙাই মূল প্রথা। এবছর করবা চৌথ পড়েছিল ১ নভেম্বর। বহু বলিউড তারকা পালন করলেন করবা চৌথের ব্রত। বাদ গেলেন না পরিণীতি চোপড়া ও কিয়ারা আডবানিও।
গত ফেব্রুয়ারি মাসে বিয়ে করেছিলেন কিয়ারা আডবানি ও সিদ্ধার্থ মালহোত্রা। অন্যদিকে পরিণীতি চোপড়া ও রাঘব চাড্ডা সাত পাকে বাঁধা পড়েন গত সেপ্টেম্বর মাসেই। দুই দম্পতিরই এবার বিয়ের পর প্রথম বছর করবা চৌথ। স্বামীর জন্য নিষ্ঠা ব্রত পালন করেছেন। নিজেদের সোশ্যাল পেজে নানা মুহূর্ত তুলে ধরেছেন তাঁরা।
বিয়ের মাস দেড়েক হয়েছে সবে পরিণীতি- রাঘবের। একে অপরকে যেন চোখে হারাচ্ছেন জুটি। বলিউড নায়িকার হাতে মেহেন্দি লাগিয়ে দিলেন রাজনীতিবিদ। এদিন টুকটুকে লাল রঙা সালোয়ার স্যুট পরেছেন পরিণীতি। সঙ্গে রয়েছে মানানসই রুপোলী রঙা গয়না, হাতে বিয়ের চূড়া, গলায় মঙ্গলসূত্র। অন্যদিকে রাঘবের পরনে হলুদ রঙা পঞ্জাবি ও বাদামী নেহেরু জ্যাকেট। নেট দুনিয়ায় 'পারফেক্ট কাপল গোলস' সেট করছেন নব বিবাহিত তারকা জুটি।
সিদ্ধার্থ - কিয়ারার বিয়ের পর কেটে গেছে প্রায় আট মাস। ছবি, ভিডিও দেখলে বোঝা যায় প্রেম যেন এখন ডগমগ। করবা চৌথের দিন গোলাপী রঙা সালোয়ার স্যুটে সেজেছিলেন কিয়ারা। অন্যদিকে সিদ্ধার্থ পরেছিলেন লাল কুর্তা। ছবি শেয়ার করতেই প্রশংসায় ভরিয়েছেন অন্যান্য তারকা থেকে শুরু করে নেটিজেনরা।
লোককথা অনুযায়ী 'করবা' নামের এক পতিব্রতা নারী যমরাজের মুখোমুখি হয়ে কুমীরের কাছ থেকে উদ্ধার করেছিলেন তার স্বামীকে। তারপর থেকেই তার নাম অনুসারে নামকরণ হয়েছে এই উৎসবের। মহাভারতেও করবা চৌথের উল্লেখ রয়েছে। অর্জুন কোনও কাজে নীলগিরি পর্বতে গিয়েছিলেন। বাকি ভাইয়েরা ছিলেন না পাঞ্চালীর কাছে। পাঁচ স্বামীর মঙ্গল কামনায় শ্রীকৃষ্ণের পরামর্শে নাকি করবা চৌথ পালন করেছিলেন দ্রৌপদী।
অন্যদিকে, করবা চৌথের সঙ্গে জড়িয়ে আছে রানী বীরাবতীর দুঃখের কাহিনিও। লোকমুখে প্রচলিত এই কাহিনি অনুযায়ী, বীরাবতী ছিলেন সাত ভাইয়ের একমাত্র এবং অত্যন্ত আদরের, বোন। বাপের বাড়িতে করবা চৌথের ব্রত করেন বীরাবতী। কিন্তু উপবাসের ধকল সহ্য করতে না পেরে চাঁদ ওঠার আগেই ক্ষিদে-তেষ্টায় ক্লান্ত হয়ে পড়েন। বোনের অবস্থা দেখে সাত ভাই মিলে একটি গোল আয়না গাছের ডালে ঝুলিয়ে নকল চাঁদ তৈরি করেন। চাঁদ উঠেছে মনে করে উপবাস ভাঙেন বীরাবতী। তবে খাবার মুখে তুলতেই তাঁর স্বামীর মৃত্যু হয়।