বলিউড অভিনেত্রী রিয়া চক্রবর্তীকে বর্তমানে রিয়্যালিটি শো 'রোডিজ'-এ গ্যাং লিডার হিসেবে দেখা যাচ্ছে। ব্যক্তিগত এবং কর্মজীবনের জন্য আজও শিরোনামে রয়েছেন অভিনেত্রী। বৃহস্পতিবার, 'ইন্ডিয়া টুডে কনক্লেভ ২০২৩'-এ অংশ নিয়েছিলেন এবং বিভিন্ন প্রশ্নের অকপট উত্তর দিয়েছেন। ২০২০ সালে সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুর পর প্রথমবার খোলামেলা সাক্ষাৎকারে রিয়া। আলোচনায় উঠে এল সুশান্তের মৃত্যু, রিয়ার কারাবাস, সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রোলিংয়ের মতো নানা বিষয়।
জীবন কতটা বদলেছে?
রিয়া জানান যে, গত তিন বছরে তাঁর জীবন অনেকটা বদলেছে। অভিনেত্রী বলেন, "তিন বছর আগে আপনি যখন আমার সাক্ষাৎকার নিয়েছিলেন, আমাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। এখন জানানো হয়েছে। জীবন একটি বৃত্ত। এখন সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলছি। জীবন এগিয়ে চলেছে। 'নিউ মি' খুব আলাদা। আগে, ৩১ বছর বয়সে, আমি ৮১ বছর বয়সী মহিলার মতো অনুভব করতাম। কঠিন সময়ে আপনি হয় দেবদাস হতে পারেন, অথবা থেরাপির সাহায্য নিয়ে এগিয়ে যেতে পারেন। আমি থেরাপির আশ্রয় নিয়েছিলাম।"
অভিনেত্রী বলেন যে, কারও মতামত তাঁর কাছে গুরুত্বপূর্ণ নয়। তাঁর কথায়, "আমার ভেতরের আওয়াজ বলেছিল সব ঠিক হয়ে যাবে। প্রতিটি গল্পের দুটি শুরু আছে। একটি আমরা যা দেখি এবং অন্যটি যা দেখতে পাই না।"
সুশান্ত রাজপুতের মৃত্যুতে সত্যিই কি রিয়ার কোনও ভূমিকা ছিল?
সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যু প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে রিয়া বলেন, "আমি যখন মানুষের মুখের দিকে তাকাই, কিছু মানুষ আমার দিকে এমন ভাবে তাকায় যেন আমি কিছু করেছি বা আমার মধ্যে কোনও ভুল রয়েছে। আমি মানুষের মুখ পড়তে পারি। 'পেত্নি' নামটা আমার ভাল লেগেছিল। এটা আমার জীবনে কোনও পরিবর্তন আনেনি। কে জানে, আমি মনে হয় ব্ল্যাক ম্যাজিক জানি। সমাজে লোকে বলে, বিয়ের পর কোনও পুরুষ বেশি মদ্যপান করলে, নারীর আগমনে এসব হয়েছে। যদি তার কর্মক্ষেত্রে সমস্যা হয়, লোকে বলে মেয়েটার জন্যই এসব হয়েছে।"
তারকারা আত্মহত্যা করে কেন?
রিয়া বলেন, "মানুষ মানসিক স্বাস্থ্যের অবস্থা বোঝে না। সফল মানেই তাঁর যে কোনও মানসিক স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সমস্যা হতে পারে না। মানসিক স্বাস্থ্যর আসলে ভুল ব্যাখ্যা হচ্ছে। সফল ব্যক্তিরাও হতাশাগ্রস্ত হতে পারেন। আমি জানি না সুশান্ত কেন ওঁর জীবন শেষ করল । তবে আমি জানি ও কোন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে গেছে। আমি এনসিবি এবং মাদক নিয়ে কথা বলতে চাই না।"
জেলে আপনার দিন কেমন ছিল?
জেল নিয়ে কথা বলতে গিয়ে অভিনেত্রী বলেন, "জেলটা মজার কারণ, সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন থাকা যায়। জেলে অনেক কিছু শিখেছি। আমি বিচারাধীন ছিলাম, দোষী ছিলাম না। আমি শিখেছি কীভাবে আমরা ছবির জন্য দৌড়াতে থাকি। কিন্তু কারাগারে থাকা নারীরা সিঙ্গারা পেলেও খুব খুশি হন।"
বলিউডেও ভাল মানুষ আছে
রিয়া বলেন, "বলিউডে ভাল ও খারাপ দু'ধরনের মানুষ আছে। অনেক মানুষকে আমি বলেছি আমার সঙ্গে ছবি করবেন না, কারণ আপনি ট্রোলড হবেন। আমি বলিউডে কাজ করতে চাই। তবে সঠিক সময়ের অপেক্ষা।"
পরিবারই সবচেয়ে বড় শক্তি
রিয়া জানান, কীভাবে তাঁর পরিবার কঠিন সময়ে তাঁর উৎসাহ হয়ে ওঠে। তিনি বলেন, "আমার বাবা সেনাবাহিনীতে ছিলেন। আমার পরিবার আমাকে বেঁচে থাকার সাহস দিয়েছে। আমার পরিবার এবং আমার অনেক বন্ধু আমার পাশে দাঁড়িয়েছে। আমার প্রতি তাঁদের বিশ্বাস ছিল।" রিয়ার বাবা ও ভাই জানান, এমন মুহূর্ত তাঁদের জীবনে আসবে তা তাঁরা কখনও ভাবেননি। তবে যাই ঘটুক আমরা তা মেনে নিয়েছি।" রিয়া বলেন, "আমরা খুশি যে আমরা কঠিন সময়ে একসঙ্গে লড়েছি, একে অপরের পাশে দাঁড়িয়েছি।"