তারকাদের নিয়ে মানুষের কৌতূহলের শেষ নেই। কার জীবনে কখন কী ঘটছে, তা নিয়ে সকলের মধ্যে থাকে বাড়তি কৌতূহল। বিশেষত তারকাদের ব্যক্তিগত জীবন অনেকের নজর থাকে। তারকাদের সম্পর্ক ভাঙা গড়ার খবর প্রায়ই শোনা যায়। ফ্যানদের মনেও এই বিষয়ে কৌতূহল থাকে। তবে কিছু সম্পর্কের কথা দীর্ঘদিন মনে থেকে যায় সকলের। জানুন এরকমই ৭ চর্চিত জুটির কথা, যারা জীবনে নিজেদের মতো এগিয়ে গেলেও, তাঁদের প্রেম নিয়ে আজও চর্চা হয়। দীর্ঘদিন সম্পর্কে থাকার পর এই টলি জুটিদের ব্রেকআপে বহু ফ্যানেদের মন ভেঙেছিল।
দেব ও শুভশ্রী গঙ্গোপাধ্যায়
২০০৯ সালে 'চ্যালেঞ্জ' ছবিতেই প্রথমবার জুটি বাঁধেন দেব ও শুভশ্রী। বক্স অফিসে সুপারহিট হওয়ার পাশাপাশি, সে সময় সম্পর্কও ধীরে ধীরে গভীর হয় তাঁদের। একের পর এক হিট ছবি ইন্ডাস্ট্রিতে, জুটি বেঁধেই। সে তালিকায় রয়েছে 'পরাণ যায় জ্বলিয়া রে', 'রোমিও', 'খোকাবাবু'। ছবির গান, সংলাপ ও সেই সঙ্গে হিট হয় দেব -শুভশ্রী জুটিও। ২০১৬ সালে দেব- শুভশ্রী জুটি নিয়ে ‘ধূমকেতু’ বানিয়েছিলেন পরিচালক কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়। তবে বিভিন্ন কারণে এখনও পর্যন্ত মুক্তি পায়নি এই ছবি।
যদিও সম্পর্কে থাকাকালীন তাঁরা নিজেদের 'ভাল বন্ধু' তকমাতেই সীমাবদ্ধ রেখেছিলেন প্রকাশ্যে। বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে প্রশ্ন করাতেও মিলেছে একই উত্তর। কিন্তু ব্রেকআপের পর সমস্ত কিছুই স্পষ্ট হয়ে যায়। দেব প্রকাশ করেছিলেন যে শুভশ্রী তাঁর খুব কাছের ছিলেন। এমনকী তাঁর জীবনের নিকটতম ব্যক্তি শুভশ্রী। দেব, তাঁর লাভ স্টোরিতে এই ধরণের মোড় প্রত্যাশা করেননি।
অন্যদিকে নায়িকার বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে উঠে এসেছে, দেবের সঙ্গে বিচ্ছেদ হওয়ার পর অনেকটা পরিণত হয়েছেন তিনি। যদিও তাঁদের ব্রেকআপ হওয়ার সঠিক কারণ কখনও প্রকাশ্যে আনেননি তাঁরা। এরপর থেকে নিজেদের জীবনে ব্যক্তিগত ও কর্মক্ষেত্রে আলাদা রাস্তা দুজনের। নিজ নিজ স্থানে দুজনেই সফল দেব ও শুভশ্রী। তবে শোনা যায় তাঁদের সম্পর্কের বিচ্ছেদের পর, শুভশ্রীর দীর্ঘদিন সময় লেগেছিলে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরতে।
রাজ চক্রবর্তী ও মিমি চক্রবর্তী
পরিচালকের সঙ্গে নায়িকার প্রেম নতুন কিছু নয়। এরকম বহু দৃষ্টান্ত রয়েছে অতীতে। বর্তমানেও টলি-বলি-হলির বহু তারকা জুটির প্রেম দেখা যায়। সে সম্পর্ক বহুক্ষেত্রে গড়ায় বিয়ের পিঁড়ি অবধি। রাজ- মিমির প্রেমও ঠিক সেরকমই। অভিনেত্রী -সাংসদ মিমি চক্রবর্তীর সঙ্গে রাজের সম্পর্ক কারও অজানা না। বিষয়টা টলি পাড়ায় অনেকটা 'ওপেন সিক্রেট'-র মতোই। পার্টি থেকে অ্যাওয়ার্ড শো একই সঙ্গে দেখা যেত জুটিকে।
অনেকই ভেবেছিলেন রাজ-মিমির সম্পর্ক বহুদূর এগোবে। কিন্তু সে গুড়ে বালি! টিকল না তাঁদের সম্পর্কও। শোনা যায় বিরসা দাশগুপ্তের ছবির শ্যুটিংয়ে তুরস্কে গিয়েছিলেন মিমি। সেখানে এক বয়সে ছোট তুরস্কের ছেলের সঙ্গে ডেটিং শুরু করেন নায়িকা। আর তার জেরেই দু'জনের মধ্যে ঝামেলা শুরু হয়। পরে ব্রেকআপ করেন টলিপাড়ার এই কাপল। যদিও এবিষয়ে কখনও মুখ খোলেননি দু'জনের কেউই।
রাজের পরিচালনায় 'বোঝে না সে বোঝে না', 'প্রলয়', 'যোদ্ধা:দ্য হোয়ারিয়র', 'কাটমুণ্ডু'-র মতো ছবিগুলিতে রাজের পরিচালনায় অভিনয় করেছেন মিমি। সম্পর্কে বিচ্ছেদের পর থেকে আর একসঙ্গে কাজ করতে দেখা যায়নি তাঁদের। যদিও এরপর থেকে সম্পর্ক নিয়ে মিমির নাম কারও সঙ্গে খুব একটা জুড়তে শোনা যায়নি। বারবারই নিজেকে 'সিঙ্গেল' বলেই দাবি করেন সাংসদ- নায়িকা।
রাজ চক্রবর্তী ও পায়েল সরকার
টলি নায়িকা পায়েল সরকারের সঙ্গে রাজ চক্রবর্তীর সম্পর্কের জল্পনা শোনা যায়। দুজনেই কখনও বিষয়টি নিয়ে মুখ না খুললেও ইন্ডাস্ট্রির এই গুঞ্জন বহু পুরানো। সে সময় বহু সাক্ষাৎকারে নিজের সাফল্যের জন্যে রাজকে কৃতিত্ব দিয়েছেন পায়েল। যদিও তাঁদের এই সম্পর্ক স্থায়ী হয়নি। ব্রেকআপের পর শোনা যায় যে, দু'জনের মধ্যেই কখনই বোঝাপড়া ঠিক মতো হয়নি এবং তাঁদের জীবনের দৃষ্টিভঙ্গি আলাদা। এক সাক্ষাৎকারে পায়েল বলেন, স্মৃতি সময়ের সঙ্গে ম্লান হয়ে যায় এবং অতীত নিয়ে তাঁর কিছু এসে যায় না।
স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায় ও জিৎ
বিবাহবিচ্ছেদের পর টলিউডের সুপারস্টার জিৎ-র সঙ্গে পর্দায় জুটি বাঁধেন স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়। তাঁদের জুটি যথেষ্ট সফল হয়। শোনা যায়, সেসময়ই সম্পর্কে জড়ান জিৎ- স্বস্তিকা। পার্টি থেকে যে কোনও অনুষ্ঠানে একসঙ্গে যেতেন তাঁরা। 'পিতৃভূমি', 'প্রিয়তমা' ও একাধিক ছবিতে একসঙ্গে অভিনয় করেছিলেন এই জুটি। যদিও 'মস্তান' ছবির সময় থেকেই তাঁদের সম্পর্কের সূত্রপাত। যদিও তাঁদের ব্রেকআপের আসল কারণ কখনও সামনে আসেনি। তবে শোনা যায় সম্পর্কে অনেকটা এগোনোর পর, স্বস্তিকা কেরিয়ার নিয়ে কোনও রকম ত্যাগ করতে চাননি। এছাড়া শোনা যায়, সে সময় একাধিক ছবিতে কোয়েল মল্লিকের সঙ্গে জুটি বাঁধেন জিৎ। তাঁদের বন্ধুত্ব গভীর হওয়ার ফলে স্বস্তিকার সঙ্গে সম্পর্ক ভেঙেছিল তাঁর। এরপর মোহনা রাতলানিকে বিয়ে করেন জিৎ।
স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায় ও সৃজিত মুখোপাধ্যায়
স্বস্তিকা ও সৃজিতের এক সময় যে প্রেম ছিল, তা নিয়ে ইন্ডাস্ট্রিতে বহু চর্চা রয়েছে। যদিও সম্পর্কের ব্যাপারে কখনও মুখ খোলেননি তাঁরা। শোনা যায় সৃজিত এই সম্পর্ক নিয়ে নিয়ে যথেষ্ট সিরিয়াস ছিলেন। 'জাতিস্মর'-র পরেই তাঁদের বিচ্ছেদ হয়ে যায় বলে খবর। মাঝে বহু বছর সেভাবে প্রকাশ্যে তাঁদের বন্ধুত্ব দেখা না গেলেও, গত প্রায় দু'বছর ধরে ফের তা সামনে এসেছে। এমনকী পরিচালকের ছবি মুক্তির আগে তাঁকে সোশ্যাল মিডিয়াতেই শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন নায়িকা। এরপর বহু সময় তাঁদের একসঙ্গে লেন্সবন্দি হতেও দেখা গেছে। সৃজিতের নতুন ছবি 'টেক্কা'-তে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেছেন স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়। এই ছবির প্রচারের সময় স্বস্তিকা -সৃজিতের রসায়ন সকলের নজর কেড়েছে।
স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায় ও পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়
টলিপাড়ায় চর্চিত জুটি ছিলেন পরমব্রত ও স্বস্তিকাও। একসঙ্গে 'হ্যাং আউট' থেকে শুরু করে 'পার্টি', সবই তাঁরা করতেন একসঙ্গে। এরপর কিছু ব্যক্তিগত সমস্যার জন্য তাঁদের বিচ্ছেদ হয়ে যায় বলে খবর। মাঝে কেটে গেছে অনেকগুলো বছর। শোনা যায় বিচ্ছেদের পরে স্বস্তিকা ও পরমব্রতর সম্পর্কও তেমন ভাল ছিল না। তবে 'শাহজাহান রিজেন্সি' এবং 'শিবপুর' ছবিটিতে একসঙ্গেই কাজ করেন তাঁরা এবং বর্তমানে দু'জনের সমীকরণ অনেকটাই স্বাভাবিক।
রুদ্রনীল ঘোষ ও তনুশ্রী চক্রবর্তী
২০১৭ সাল নাগাদ সম্পর্কে ছিলেন রুদ্রনীল ঘোষ ও তনুশ্রী চক্রবর্তী। সকলেই ভেবেছিলেন বিয়ে করবেন তাঁরা। কিন্তু সে সম্পর্ক আর এগোয়নি। বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে তাঁরা স্বীকার করেন, দু'জনে খুব ভাল বন্ধু। তবে শেষ পর্যন্ত দু'জনেই পিছিয়ে আসেন। জুটির ব্রেকআপ নিয়ে একটি গুজবও রয়েছে। ইন্ডাস্ট্রিতে কান পাতলে শোনা যায় যে, 'বেডরুম' ছবিতে অভিনয় করার সময়, অভিনেত্রী উষসী চক্রবর্তীর সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠটা এবং ছবিতে প্রেমের দৃশ্য তনুশ্রী ভাল ভাবে মেনে নেননি।