শনিবার নববর্ষ উপলক্ষে করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত নাগরিকদের উদ্দেশ্যে ভাষণ দিলেন চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং (Chinese President Xi Jinping)। তিনি স্বীকার করেছেন যে চিনে কোভিড ঢেউ (Covid In China) একটি নতুন পর্যায়ে প্রবেশ করেছে এবং এটির বিরুদ্ধে লড়াই করা একটি কঠিন চ্যালেঞ্জ। তিনি বলেছেন, 'অসাধারণ প্রচেষ্টার মাধ্যমে আমরা অভূতপূর্ব অসুবিধা এবং চ্যালেঞ্জগুলি কাটিয়ে উঠেছি। এটি কারও জন্য সহজ যাত্রা ছিল না।' গত কয়েকদিনে এনিয়ে দ্বিতীয়বার জিনপিং দেশের বর্তমান কোভিড পরিস্থিতি নিয়ে ভাষণ দিয়েছেন। এদিকে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বারবার আবেদনের পরে শুক্রবার চিন তার কর্মকর্তাদের বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলার অনুমতি দিয়েছে।
আমাদের সামনে আশার আলো
জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণে জিনপিং বলেন, 'কর্মকর্তা, জনসাধারণ, চিকিৎসক, সমাজকর্মী সবাই করোনার (Coronavirus) বিরুদ্ধে লড়াই করতে বদ্ধপরিকর। মহামারি প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে আরও কাজ করতে হবে। এ জন্য সবাই কঠোর পরিশ্রম করছেন। আমাদের সামনে আশার আলো রয়েছে। আসুন আমরা এটিকে অতিক্রম করার জন্য আরও একটি প্রচেষ্টা করি। কারণ অধ্যবসায় এবং একতা মানে বিজয়।'
আরও পড়ুন:Krishak Bandhu Payment: কৃষক বন্ধুর টাকা ঢুকেছে কি না কীভাবে জানবেন? রইল উপায়
তিনি বলেন, 'করোনা আসার পর থেকে আমরা মানুষের নিরাপত্তাকে প্রাধান্য দিয়েছি। একটি বিজ্ঞান-ভিত্তিক এবং লক্ষ্যযুক্ত পদ্ধতি অনুসরণ করে, আমরা যতটা সম্ভব মানুষের জীবন ও স্বাস্থ্য রক্ষা করার জন্য COVID-এর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিয়েছি। করোনা নিয়ে আরও সতর্ক হওয়া দরকার। করোনার কারণে জীবনের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে নতুন মাত্রা দেওয়া হয়েছে। নতুন যুগে প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গে আমাদের নিরাপত্তার ব্যাপারে আরও সচেতন হতে হবে। আমরা শূন্য কোভিড নীতিও শেষ করেছি। ২০২২ সালে আমরা ভূমিকম্প, বন্যা, খরা এবং দাবানল সহ অনেক প্রাকৃতিক দুর্যোগের মুখোমুখি হয়েছি। আমরা কর্মস্থলে দুর্ঘটনার সম্মুখীন হয়েছি। এই সবের মাঝে আমরা অসুবিধা মোকাবিলা করতে একসঙ্গে থেকেছি। এমনকি অন্যদের বিপদে সাহায্য করতে জীবন বিসর্জন দিয়েছেন অনেকে।'
৩ জানুয়ারি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সঙ্গে চিনের বৈঠক
করোনা কেস, ভ্যাকসিন, চিকিৎসার মতো বিষয় নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিশেষজ্ঞ এবং চিনা কর্মকর্তাদের মধ্যে আলোচনা শুরু হয়েছে। সাম্প্রতিক এক বৈঠকে বলা হয়েছে, চিনের উচিত যে কোনও তথ্য গোপন না করে বিশ্বের সঙ্গে শেয়ার করা। তথ্য গোপন করলে সমস্যা আরও বাড়বে। এ কারণে সেখানে করোনার প্রকৃত অবস্থা খুঁজে বের করাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।
করোনা মহামারির প্রাদুর্ভাবের পর থেকে চিনে সরকারিভাবে মৃতের (China Covid Deaths) সংখ্যা ৫,২৪৭। যেখানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মৃত্যুর সংখ্যা এক মিলিয়নেরও বেশি। একই সময়ে চিন শাসিত হংকং-এ ১১ হাজারেরও বেশি মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়। বিশেষজ্ঞরা বিশ্বাস করেন যে চিনে করোনায় মৃতের সংখ্যা অনেক বেশি এবং আগামী এক বছরে ১০ লাখেরও বেশি মানুষ মারা যেতে পারেন। তবে, লন্ডন ভিত্তিক একটি স্বাস্থ্য তথ্য সংস্থা ভবিষ্যদ্বাণী করেছে যে শূন্য-কোভিড নীতি বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর থেকে চিনে কোভিডের কারণে প্রতিদিন প্রায় ৯,০০০ মানুষের মৃত্যু হচ্ছে বলে অনুমান করা হচ্ছে।
স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমান অনুসারে, ডিসেম্বর মাসেই চিনে কোভিডের কারণে মোট মৃত্যুর সংখ্যা ১ লাখ হতে পারে, কমপক্ষে ১৮ কোটি মানুষ কোভিড আক্রান্ত। জানুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে দৈনিক সংক্রমণ ৩০ লাখ ছাড়িয়ে যেতে পারে। ২৩ জানুয়ারি নাগাদ চিনে মোট মৃত্যুর সংখ্যা হতে পারে ৫,৮৪,০০০।