মিলছে না ভ্যকসিন। এদিকে আবার ভ্যাকসিন (Vaccine) না নিলে উঠতে পারবেন না ট্রেনেও। তাই ফিরে যেতে পারছেন না নিজেদের কর্মস্থলে। আর কাজ না করলে চলবে না সংসার। ফলে সব মিলিয়ে চরম বিপাকে মালদার পরিযায়ী শ্রমিকরা। ভ্যাকসিন নেওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ম অনুযায়ী অনলাইন পোর্টালে স্লট বুকিং করতে হবে। কিন্তু অভিযোগ, প্রায় প্রত্যেক দিন চেষ্টা করলেও হচ্ছে না বুকিং (Online Booking)। কখনও মুহূর্তের মধ্যে স্লট ভর্তি হয়ে যাচ্ছে, কখনও আবার সার্ভারের সমস্যা। ফলে হচ্ছে না বুকিং।
পরিযায়ী শ্রমিকদের অনেকেরই অ্যান্ড্রয়েড ফোন নেই। ফলে ভ্যাকসিনের অনলাইন বুকিং করানোর জন্য তাঁদের যেতে হচ্ছে বিভিন্ন কম্পিউটার সেন্টার বা সাইবার ক্যাফেতে। সেখানে গিয়ে সকাল থেকে লাইন দিচ্ছেন তাঁরা। কিন্তু তারপরেও হচ্ছে না বুকিং। ফলে হতাশ হয়েই ফিরতে হচ্ছে তাঁদের। এদিকে রয়েছে কর্মস্থলে ফিরে যাওয়ার তাড়া। কারণ তাঁদের আয়ের উপরেই চলে সংসার। সঠিক সময়ে যেতে না পারলে রয়েছে কাজ হারানোর ভয়ও। ফলে সমস্যা দিনদিন বাড়ছে মালদার হরিশ্চন্দ্রপুরের (Malda Harishchandrapur) পরিযায়ী শ্রমিকদের (Migrant Labour)। দিনের পর দিন এইভাবে ভ্যাকসিনের জন্য ঘুরতে ঘুরতে ক্ষুব্ধ পরিযায়ী শ্রমিক এবং তাঁদের পরিবারের সদস্যরা। তাঁদের প্রশ্ন, সরকার যখন নিয়ম করেছে ভ্যাকসিন ছাড়া ট্রেনে বাসে ওঠা যাবে না তাহলে টিকা পাওয়ার সঠিক ব্যবস্থা থাকছে না কেন?
কী বলছেন পরিযায়ী শ্রমিকরা?
আফসানা খাতুন নামে এক পরিযায়ী শ্রমিক বলেন,"আমাদের সবার কাছে তো অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল নেই। তাই কম্পিউটারের দোকানে যাচ্ছি। ২০ দিন ধরে এসে রোজ ঘুরে যাচ্ছি। এলেই বলছে বুকিং শেষ হয়ে গিয়েছে। এদিকে ভ্যাকসিন না পেলে কাজের জায়গায় ফিরে যেতে পারছি না।"
সোহেল নামে আরও এক পরিযায়ী শ্রমিক বলেন,"বুকিং করতে এসে ১৫ দিন ধরে ঘুরতে হচ্ছে। বাইরের মানুষরা এসে পেয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু আমরা পাচ্ছি না। ভ্যাকসিন না পেলে ট্রেনে উঠতে পারব না। কাজের জায়গায় তো যেতে হবে। সরকারের ব্যাপারটা দেখা উচিত।"
মিজানুর রহমান নামে এক পরিযায়ী শ্রমিকেরও একই অভিযোগ। তিনি বলেন," বুকিং করতে যাচ্ছি। মোবাইলে ওটিপি আসছে কিন্তু বুকিং হচ্ছে না। আমার স্ত্রীর ভ্যাকসিন হয়ে গিয়েছে। কিন্তু আমার হয়নি। বাইরে কাজ করি। প্রচণ্ড সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।"
স্বাস্থ্যদফতর কী বলছে?
এই বিষয়ে হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লকের স্বাস্থ্য আধিকারিক অমলকৃষ্ণ মণ্ডল বলেন, "এই মুহূর্তে ভ্যাকসিন নিয়ে কোনও সমস্যা নেই। সমগ্র হরিশ্চন্দ্রপুর জুড়ে আটটি সেন্টার করা হয়েছে। পর্যাপ্ত পরিমাণ ভ্যাকসিন রয়েছে। কিন্তু যেটা নিয়ম তার মধ্যে থেকেই দিতে হবে। এবার অনলাইনে কিছু সমস্যা হলে আমরা বলতে পারব না। জেলার নির্দেশ অনুযায়ী সমস্ত কাজটা হচ্ছে।"