পুজোর পর থেকে রাজ্যজুড়ে বাড়তে শুরু করেছে দৈনিক সংক্রামিতের সংখ্যা। এর মধ্যে পরিস্থিতি সবচেয়ে খারাপ কলকাতার। আর করোনা সংক্রমণের আশঙ্কায় সতর্কতা জারি করা হয়েছে উত্তর ২৪ পরগনায়। বছর দেড়েক আগে করোনার প্রথম তরঙ্গে মূলত দক্ষিণ ও পূর্ব কলকাতায় ভাইরাসের সংক্রমণের বাড়বাড়ন্ত দেখা গিয়েছিল। এ বারও পুজোর পর প্রশাসনের চিন্তা বাড়িয়েছে কলকাতা আর উত্তর ২৪ পরগনার একাধিক একালা।
হিসাব বলছে, দৈনিক মোট করোনা আক্রান্তের প্রায় ৪৫-৫০ শতাংশই কলকাতা আর উত্তর ২৪ পরগনার বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা। কলকাতার ১৬টি বরোর মধ্যে ৪টির করোনা পরিস্থিতি বেশ উদ্বেগজনক! ১০ নম্বর বরোর অন্তর্গত একাধিক ওয়ার্ডে প্রতিদিন ২০-২৫ জন করে আক্রান্ত হচ্ছেন। গত শনিবারের রিপোর্ট অনুযায়ী, গল্ফগ্রিন, বিজয়গড়, শ্রীকলোনি, আজাদগড়, বিদ্যাসাগর-সহ বিস্তীর্ণ এলাকায় ৩৭ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।
জানা গিয়েছে, পুরসভার ৯৪, ৯৬, ৯৭, ৯৮, ১০০, ১০১, ১০৪, ১০৭, ১১০, ১১১, ১১২, ১১৩, ১১৪, ১২৪, ১২৫, ১৪৩ নম্বর ওয়ার্ডগুলিতে করোনায় দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। বরোভিত্তিক হিসাব অনুযায়ী, ১০ আর ১২ নম্বর বরোর করোনা পরিস্থিতি উদ্বেগ বাড়াচ্ছে পুর কর্তাদের।
এ দিকে, উত্তর ২৪ পরগনায় এখনও সেই হারে করোনা সংক্রমণ বাড়েনি। কারণ, পুজোর আগে প্রতিদিন গড়ে যত জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন, পুজোর পরে আক্রান্তের সংখ্যা সেই তুলনায় সামান্য বেড়েছে। তবে বারাকপুর, বিধাননগর, বারাসত ও বনগাঁয় নতুন করে ৫৬টি কন্টেইনমেন্ট জোন ঘোষণা করা হয়েছে।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে আছড়ে পড়ার পর কলকাতাকে পিছনে ফেলে সংক্রমণে রাজ্যে প্রথম হয় উত্তর ২৪ পরগনা। এখনও সে দিক থেকে এই জেলা প্রথম স্থানেই রয়েছে। তবে, দৈনিক সংক্রমণ এখনও অনেকটাই কম। এ যাবৎ মোট করোনা আক্রান্তের নিরিখে রাজ্যের শীর্ষস্থানীয় দুই জেলা— উত্তর ২৪ পরগনা আর কলকাতাই ফের চিন্তা বাড়াচ্ছে প্রশাসনের। প্রশাসন সূত্রে খবর, পুজোর আগে উত্তর ২৪ পরগনায় প্রতিদিন গড়ে ১০০-১২০ জন আক্রান্ত হচ্ছিলেন। পুরজোর পর এখনও দৈনিক সংক্রামিতের সংখ্যাটা দেড়শো ছাড়ায়নি। তবুও গত দেড় বছরের করোনা সংক্রমণের পরিসংখ্যান মাথায় রেখে এবার বাড়তি সতর্ক রাজ্য ও জেলা প্রশাসন।