scorecardresearch
 

স্ত্রী-মেয়েকে আক্রমণের পর 'অনুতপ্ত' অরবিন্দ বাজাজ, বারবার ভেঙে পড়ছেন কান্নায়

খুনের পর নিজেই পুলিশ ডেকে আত্মসমর্পণের ঘটনা কলকাতার সাম্প্রতিক ইতিহাসে বিরল। তাই এই ঘটনার তদন্তে নেমে পদে পদে রীতিমতো হতবাক হয়ে যাচ্ছেন তদন্তকারী আধিকারিকরাও। পুলিশ সূত্রে খবর, গ্রেফতার হওয়ার পর থেকেই জেরার মুখে বারবার কান্নায় ভেঙে পড়ছেন অরবিন্দ বাজাজ। তিনি জেরায় স্বীকার করেছেন, রাগের মাথায় স্ত্রীকে মারলেও মেয়েকে খুন করার কোনও রকম অভিসন্ধি তাঁর ছিল না।

Advertisement
প্রতীকী ছবি প্রতীকী ছবি
হাইলাইটস
  • রাগের বশে স্ত্রীকে খুন করেছেন
  • মেয়েকে আঘাত করার কোনও অভিসন্ধিই ছিল না
  • জেরায় জানালেন অরবিন্দ বাজাজ

শনিবার সন্ধ্যায় স্ত্রী এবং মেয়ের উপর নৃশংসভাবে ছুরি চালিয়ে নিজেই ১০০ নম্বরে ডায়াল করে পুলিশ ডেকেছিলেন মনোহরপুকুর রোডের বাসিন্দা অরবিন্দ বাজাজ। প্রাথমিক জেরায় পুলিশকে অভিযুক্ত জানিয়েছিলেন, তিনি কোনও পেশাদার খুনি নন, রাগের মাথায় ছুরি চালিয়ে ফেলেছেন। পুলিশ সূত্রে খবর, গ্রেফতার হওয়ার পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় পুলিশের কাছে দফায় দফায় নিজের 'অনুতাপ' প্রকাশ করেছেন অভিযুক্ত। সূত্রের খবর, জেরার সময় পুলিশকে তিনি এও জানিয়েছেন, নিজের স্ত্রী প্রিয়াঙ্কা বাজাজকে খুন করেছেন নেহাতই রাগ এবং অবসাদের বশে। স্ত্রীর উপর যখন তিনি এলোপাথাড়ি ছুরি চালাচ্ছেন, ঠিক সেইসময় মায়ের চিৎকার শুনে ছুটে আসে ১৮ বছরের একমাত্র মেয়ে অদ্ভিকা বাজাজ। সেই সময় মেয়ের উপরেও ছুরি চালিয়ে দেন 'বদমেজাজি' অরবিন্দ। ছুরির কোপে তখনই লুটিয়ে পড়ে অদ্ভিকা। নিজের একমাত্র স্নেহের এবং আদরের মেয়েকে রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে পড়তে দেখে প্রথম ঘাবড়ে যান বছর সাতচল্লিশের অরবিন্দ বাজাজ। এরপরই মেয়েকে বাঁচাতে উদ্যোগী হন 'খুনি' বাবা। নিজের মোবাইল থেকেই ১০০ নম্বরে ফোন করে খুনের কথা জানান তিনি। খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে যায় রবীন্দ্র সরোবর থানার পুলিশ। পুলিশ সূত্রে খবর, ৩৩/সি মনোহর পুকুর রোডের ফ্ল্যাটে গিয়ে দেখা যায়, রক্তে ভেসে যাচ্ছে মেঝে, আর তার কাছেই চেয়ার পেতে বসে রয়েছেন অরবিন্দ বাজাজ। পুলিশ দ্রুত দুজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে স্ত্রীকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসা চলছে মেয়ের।

কলকাতার ইতিহাসে বিরল

খুনের পর নিজেই পুলিশ ডেকে আত্মসমর্পণের ঘটনা কলকাতার সাম্প্রতিক ইতিহাসে বিরল। তাই এই ঘটনার তদন্তে নেমে পদে পদে রীতিমতো হতবাক হয়ে যাচ্ছেন তদন্তকারী আধিকারিকরাও। পুলিশ সূত্রে খবর, গ্রেফতার হওয়ার পর থেকেই জেরার মুখে বারবার কান্নায় ভেঙে পড়ছেন অরবিন্দ বাজাজ। তিনি জেরায় স্বীকার করেছেন, রাগের মাথায় স্ত্রীকে মারলেও মেয়েকে খুন করার কোনও রকম অভিসন্ধি তাঁর ছিল না। অভিযুক্ত অরবিন্দ বাজাজের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ এবং ৩০৭ ধারায় মামলা রুজু করেছে রবীন্দ্র সরোবর থানার পুলিশ। রবিবার তাঁকে আলিপুর আদালতে পেশ করা হলে বিচারক ১২ নভেম্বর পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন। 

Advertisement

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অভিযুক্তের মেয়ে

এই মুহূর্তে আশঙ্কাজনক অবস্থায় এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অরবিন্দ এবং প্রিয়াঙ্কার মেয়ে অদ্ভিকা বাজাজ। পুলিশ হেফাজতে থেকে বারবার মেয়ের খোঁজ নিয়েছেন বাবা অরবিন্দ। গতকাল খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান স্থানীয় বিধায়ক দেবাশীষ কুমার। তিনি জানান,"অভিযুক্তর সঙ্গে আমার দেখা হয়েছে। অভিযুক্ত আমাকে দেখে বলেন, স্যার আমি কোনও পেশাদার খুনি নই, শুধু রাগের মাথায় খুন করে ফেলেছি।"

 

Advertisement