ফিরল পুনের স্মৃতি। আরও একবার নাবালকের দুরন্ত গতির শিকার হলেন নিরীহ স্কুটার আরোহীরা। উত্তরপ্রদেশের কানপুরে স্কুটারে বিদ্যুতবেগে ছুটে এসে ধাক্কা মারল গাড়ি। ঘটনায় এক মহিলার মৃত্যু হয়েছে। তাঁর ১২ বছর বয়সী মেয়ে গুরুতর আহত হয়েছেন।
১৭ বছর বয়সী চালককে সঙ্গে সঙ্গে ধরে ফেলেন স্থানীয়রা। তাকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। অভিযুক্ত নাবালকের বাবাকেও গ্রেফতার করেছে কানপুর পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তের ড্রাইভিং লাইসেন্স ছিল না। তদন্তে জানা গিয়েছে, নাবালক, ক্লাস টুয়েলভের ছাত্র। ঘটনার দিন স্কুল বাঙ্ক করে বন্ধুদের সঙ্গে গাড়িতে স্টান্ট করার চেষ্টা করেছিল।
নাবালকের বাবা জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশকে বলেছেন, তাঁর অজান্তেই ছেলে গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে গিয়েছিল। দিদিকে তার কলেজে পৌঁছে দিতে যাচ্ছিল।
ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যাচ্ছে একটি দ্রুতগামী মারুতি সিয়াজ স্কিট করে আসছে। উল্টো দিক থেকে আসা স্কুটারে সজোরে ধাক্কা দিচ্ছে। মহিলা স্কুটার আরোহী সেই সময় ডানদিকে মোড় নেওয়ার চেষ্টা করছিলেন। সংঘর্ষের তীব্রতায় মহিলা রীতিমতো হাওয়ায় ছিটকে যান। প্রায় ২০-৩০ ফুট দূরে ছিটকে যান।
প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, গাড়িটি ১০০কিমি/ঘণ্টার বেশি বেগে ছুটছিল। মহিলার স্কুটার ছাড়াও অন্য আরও দুইটি গাড়িতে ধাক্কা মারে।
স্থানীয়রা আরও জানান, দুর্ঘটনার সময় গাড়িতে দুই ছেলে ও দুই মেয়ে ছিল। ঘটনায় গাড়ির আরোহীরাও সামান্য আহত হয়েছেন।
স্থানীয় জামনা সিংয়ের গাড়িতেও ধাক্কা মেরেছিল নাবালকের গাড়িটি। তিনি বলেন, 'গাড়িটা খুব দ্রুত গতিতে আসছিল। এবং স্কুটারটিকে ধাক্কা দেয় এবং তারপরে রাস্তার পাশে দাঁড়ানো আমার গাড়িটিতেও ধাক্কা দেয়। পুলিশ একজনকে গ্রেফতার করেছে। তবে গাড়ির ভেতরে থাকা অন্যরা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।'
মহিলার পরিবার অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তি এবং অপ্রাপ্তবয়স্কদের গাড়ি চালানো রুখতে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে সরব হয়েছেন।
মৃতার বোন ইন্ডিয়া টুডে-কে বলেন, 'ওঁ মেয়েকে ডাক্তার দেখিয়ে হাসপাতাল থেকে ফিরছিল। মাথায় হেলমেটও ছিল, কিন্তু তারপরেও মাথায় আঘাত লেগেছিল এবং রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। তাঁর ফুসফুসও আঘাতপ্রাপ্ত হয়। স্থানীয়রা একটি ছেলেকে ধরে তাকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। অন্যরা পালিয়ে যায়।'
মহিলার বাবা বলেন, আবার যাতে এমন মর্মান্তির ঘটনা না ঘটে, তার জন্য কঠোর আইন আনা উচিত। 'আমরা একটি এফআইআর দায়ের করেছি, এবং তদন্ত চলছে। অপ্রাপ্তবয়স্কদের কখনই গাড়ি চালাতে দেওয়া উচিত নয়; ওদের গাড়ি চালাতে দেবেন না। আমরা ওদের শাস্তি চাই এবং যাতে আবারও এমনটা না ঘটে তার জন্য দৃষ্টান্তমূলক পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানাই,' বলেন মহিলার বাবা।
মহিলার স্বামী অনুপ মিশ্রের অভিযোগের ভিত্তিতে, পুলিশ নাবালকের বিরুদ্ধে অনিচ্ছাকৃত খুন, বেপরোয়া গাড়ি চালানো, অন্যের জীবন বিপন্ন করা এবং সম্পত্তির ক্ষতি করা সহ একাধিক ধারায় মামলা দায়ের করেছে।
খবরটি হিন্দিতে পড়তে ক্লিক করুন এইখানে।