ভারতীয় আবহাওয়া বিভাগ (আইএমডি) প্রথম ২৭ মার্চ ২০২৪ সালে রাজস্থানের কিছু অংশে তাপপ্রবাহের ঘোষণা করেছিল। কিন্তু দেশে আর্দ্র তাপপ্রবাহ সম্পর্কে কোনও সতর্কতা জারি করা হয়নি। আবহাওয়া অধিদপ্তর তাপপ্রবাহ ঘোষণায় আপেক্ষিক আর্দ্রতা অন্তর্ভুক্ত করে না।
দেশে আর্দ্র তাপপ্রবাহের পরিমাণ ও তীব্রতা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। যখন দেশে আর্দ্র তাপপ্রবাহের পরিমাণ এবং তীব্রতা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে, সমভূমিতে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে যাচ্ছে তখন আবহাওয়া বিভাগ তাপপ্রবাহ ঘোষণা করে। সমভূমিতে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপরে, উপকূলীয় এলাকায় ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপরে এবং পাহাড়ি এলাকায় ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি হলে আবহাওয়া দফতর তাপপ্রবাহ ঘোষণা করে। এই পরিসংখ্যান খোদ আবহাওয়া অধিদপ্তরই নির্ধারণ করেছে।
অথবা যদি টানা দুই দিন তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে ৪.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি থাকে, তবে আবহাওয়া অধিদফতর কোনও স্থানে তাপপ্রবাহ ঘোষণা করে। কিন্তু তাপমাত্রা ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে গেলেই আবহাওয়া অধিদপ্তর অবস্থান নির্বিশেষে তাপপ্রবাহ ঘোষণা করে। কিন্তু এতে আর্দ্র তাপপ্রবাহ অন্তর্ভুক্ত নয়।
দেশে আর্দ্র তাপপ্রবাহের ঘটনা ক্রমাগত বাড়ছে। এ অবস্থায় মানবদেহ, প্রাণীদেহ বা গাছ-পালা যে তাপমাত্রা সহ্য করছে তা আসলে অনেক বেশি। মেশিনে কম পারদ দেখা যায় কিন্তু শরীরে বেশি তাপ অনুভূত হয়। কারণ বায়ুমণ্ডলে আর্দ্রতা বেড়েছে।
তাপমাত্রা এবং আপেক্ষিক আর্দ্রতা একসাথে গণনা করে, ওয়েল বাল্বের তাপমাত্রা বা নির্দিষ্ট স্থানের তাপ সূচক গণনা করা যেতে পারে। এটি উভয় জিনিসই প্রকাশ করবে। তাপমাত্রা এবং আর্দ্রতার সাথে তাপ তরঙ্গ।
ভেজা বাল্বের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বাতাসের চেয়ে শীতল। জল থেকে নির্গত বাষ্পের কারণে বাতাস ঠান্ডা হয়। সেটাও একটা নির্দিষ্ট চাপে। শরীর থেকে অনবরত ঘাম ঝরছে। যখন তাপমাত্রা খুব বেশি বেড়ে যায়, শুধুমাত্র ঘাম মানবদেহকে রক্ষা করে। কিন্তু তাপমাত্রা বেশি হলে শীতল প্রক্রিয়া ধীর হয়ে যায়।
এর ফলে মানুষের শরীর খারাপ হতে থাকে। এই অবস্থার কারণে তিনি হিট স্ট্রোক বা মৃত্যুর ঝুঁকিতে রয়েছেন। তাই আপনি প্রায়শই শুনতে পান যে প্রচণ্ড গরমে মানুষ মারা যাচ্ছে। ওয়েট বাল্বের তাপমাত্রার আন্তর্জাতিক পরিসীমা ৩০ থেকে ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর ওপরে গেলে মৃত্যু প্রায় নিশ্চিত।
২৮ মার্চ, ২০২৪-এ মহারাষ্ট্রের শোলাপুরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আপেক্ষিক আর্দ্রতা ছিল ৫৩ শতাংশ। তার মানে ওয়েট বাল্বের তাপমাত্রা ছিল ৩১.৫৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। জলগাঁওয়ে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪৬.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আপেক্ষিক আর্দ্রতা ছিল ২৯ শতাংশ। তার মানে ওয়েট বাল্বের তাপমাত্রা ছিল ৩০.৭২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।