২০০৪ সালে মনমোহন সিং-এর (Manmohan Singh) নেতৃত্বে যখন ইউপিএ (UPA) সরকার ক্ষমতায় আসে তখন পেট্রোলের (Petrol) দাম ছিল লিটার প্রতি ৩৩.৭১ টাকা। বর্তমানে দেশের রাজধানী দিল্লিতে (Delhi) লিটার প্রতি পেট্রোলের দাম ৮৮.৯৯ টাকা। অর্থাৎ প্রায় ৩ গুণ বেড়েছে পেট্রোলের দাম। কিন্তু কেন? (ফাইল ছবি)
ইন্ডিয়া টুডে ফ্যাক্ট চেক টিমের একটি বিশ্লেষণ অনুযায়ী, ২০০৪ সালে যখন ইউপিএ ১ গঠিত হয় তখন দিল্লিতে পেট্রোলের লিটার প্রতি মূল্য ছিল ৩৩.৭১ টাকা। ২০১৪ সালে যখন নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতায় আসেন তখন দিল্লিতে পেট্রোলের দাম ছিল লিটার প্রতি ৭১.৪১ টাকা। অর্থাৎ ইউপিএ-র ১০ বছরের শাসন কালে পেট্রোলের দাম ৩৮ টাকা বৃদ্ধি পায়।
আসলে ২০০৪ সালে যখন ইউপিএ সরকার ক্ষমতায় আসে তখন অপরিশোধিত তেলের দাম ছিল ব্যারল প্রতি ৩৫ ডলার। কিন্তু ২০১১-১২ সালে তা ব্যারল প্রতি ১১২ টাকা ছাড়িয়ে যায়। অর্থাৎ ইউপিএ-র ১০ বছরের শাসনকালে অপরিশোধিত তেলের দাম ৩ গুণেরও বেশি বৃদ্ধি পায়। অন্যদিকে এই সময়ের মধ্যে প্রতি বছর প্রায় ৪ টাকা করে বাড়ে পেট্রোলের দাম, যা ২০১৪ সালে ৭১ টাকার আশেপাশে পৌঁছে যায়।
অন্যদিকে নরেন্দ্র মোদীর (Narendra Modi) শাসনকালের দিকে চোখ রাখলে দেখা যাবে গত ৭ বছরে তেলের ৭১.৪১ থেকে ৮৯ টাকায় পৌঁছেছে। অর্থাৎ ১৮ টাকা বেড়েছে। তবে এটাও দেখতে হবে ইউপিএ (UPA) জমানার তুলনায় এনডিএর (NDA) শাসনকালে অপরিশোধিত তেলের দাম কমেছে।
প্রসঙ্গত পেট্রোল ডিজেলের দাম নির্ধারণের ক্ষেত্র প্রধান দুটি বিষয় হল ক্রুড অয়েল এবং কর। লকডাউনের সময় ক্রুড অয়েলের দাম গত ২০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে সস্তা ছিল। এইসময় ক্রুড অয়েলের দাম কমতে কমতে ব্যারল প্রতি ১৫ ডলারে পৌঁছে যায়। এর আগে অপরিশোধিত তেল সবচেয়ে সস্তা ছিল ২০০৪ সালে ইউপিএ ক্ষমতায় আসার সময়। কিন্তু ইউপিএ ২ এর সময় ক্রুড অয়েলের দাম ব্যারল প্রতি ১১২ ডলারে পৌঁছলেও পেট্রোলের দাম ছিল লিটার প্রতি ৬৫.৭৬ টাকা।
একটা বিষয় এখানে অবশ্যই উল্লেখ করতে হয়, যখন ব্যারল প্রতি অপরিশোধিত তেলের দাম ছিল ১১২ ডলার তখন ইউপিএ সরকার তেল বিক্রি করেছে ৬৫.৭৬ টাকায়। অন্যদিকে এখন যখন অপরিশোধিত তেলের দাম ব্যারল প্রতি ৬৩ ডলার অর্থাৎ ৫৬ শতাংশ কম, সেই সময় এনডিএ সরকার তেল বিক্রি করছে লিটার প্রতি ৮৯ টাকায়।
মোদী সরকারের শাসনকালের শুরুর সময় থেকেই নামতে শুরু করে ক্রুড অয়েলের দাম। ২০১৫-১৬ সালে দাম দাঁড়ায় ব্যারল প্রতি ৪৬ ডলার। কিন্তু খুচরো বাজারে পেট্রোলের দাম একই রাখার সিদ্ধান্ত নেয় মোদী সরকার। ফলে পেট্রোলের ওপর কেন্দ্রীয় আবগারি শুল্ক বাড়ানো হয়।
২০১৮ সালে অপরিশোধিত তেলের দাম যখন অনেকটাই কম ছিল তখন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম বলেছিলেন সরকার চাইলে তেলের দাম লিটার প্রতি ২৫ টাকা পর্যন্ত কমাতে পারে। যদি কর ব্যবস্থায় পরিবর্তন না আনা হয়, তবে পেট্রোল ডিজেলের দাম সরাসরি ক্রুড অয়েলের উত্থান পতনের মতোই ওঠা নামা করবে।