রাখি বন্ধনের দিন বোনেরা তাদের ভাইয়ের হাতে রাখি বাঁধেন এবং ভাইরা তাদের সুরক্ষার জন্য প্রতিশ্রুতি দেন। বলা হয় যে রাজসূয় যজ্ঞের সময় দ্রৌপদী ভগবান শ্রীকৃষ্ণের হাতে সুরক্ষার সুতো বেঁধেছিলেন এবং তখন থেকে এই ঐতিহ্য প্রচলিত আছে। তবে জানলে হয়রান হবেন উত্তরপ্রদেশের একটি গ্রাম আছে যেখানে বহু বছর ধরে রাখি উৎসব পালিত হচ্ছে না।
উত্তরপ্রদেশের গোন্ডা জেলায় অবস্থিত ভিকামপুর জগৎ পুরওয়া গ্রামে রাখি বন্ধন উৎসব নিয়ে কোনও মাথাব্যথা নেই। কারণ গ্রামের মানুষরা রাখি বন্ধন উৎসব পালন করে না। তারা মনে করে রাখি উৎসব পালন করলে খারাপ কিছু ঘটতে পারে। এমন কিছু অদ্ভুত ঘটনা ঘটে যে কারণে গ্রামের মানুষ এই উৎসব পালন করে না।
গ্রামের প্রতিটি মানুষ এখন অপেক্ষায় রাখি বন্ধনের দিন ওই গ্রামে কোনও শিশুর জন্মের জন্য। তাতাদের মতে গ্রামে সন্তান জন্ম নিলে তারপরই রাখি উৎসব উদযাপিত হবে।
জগৎ পুরওয়া গ্রামের জনসংখ্যা খুবই কম। যার মধ্যে প্রায় ২০০ শিশু বসবাস করে। যারা রাখি উৎসবকে অশুভ বলে ভয় পায়। গ্রামের বড়দের কাছ থেকে প্রায়ই এর সম্পর্কিত গল্প শোনে।
উজিরগঞ্জ পঞ্চায়েতের এই গ্রামে পাঁচ দশকেরও বেশি সময় কেটে গেছে বোনেরা তাদের ভাইদের রাখি বাঁধেনি। শুধু তাই নয়, আশেপাশের গ্রামের লোকেরাও রাখি উৎসবকে অশুভ বলে মনে করে।
১৯৫৫ সালে দেশ স্বাধীন হওয়ার আট বছর পরে রাখি বন্ধন উৎসবের দিন একটি পরিবারে একজন ব্যক্তিকে হত্যা করা হয়েছিল। তারপর থেকে এই গ্রামের বোনেরা রাখির দিন ভাইদের রাখি বাঁধে না।
প্রায় এক দশক আগে এই গ্রামের বোনদের অনুরোধে রাখি উৎসব শুরু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এখানে আবার একটি অদ্ভুত ঘটনা ঘটে। এরপর থেকে আর কেউ রাখি পালনের সাহস পায়নি।
গ্রামের বাসিন্দারা জানান, যদি সেই পরিবারে কোনও শিশুর জন্ম হয়তাহলেই আবার ঐতিহ্য মেনে রাখি উৎসব শুরু করা যেতে পারে। সেই দিনটির অপেক্ষায়, প্রায় তিন প্রজন্ম কেটে গেছে। এখনও সেই পরিবারে রাখির দিন কারও সন্তান হয়নি।