মহুয়া মৈত্রের সঙ্গে জড়িত বেশ কিছু জায়গায় অভিযানে CBI। 'ক্যাশ ফর কোয়েরি' বা 'টাকার বিনিময়ে প্রশ্নে'র কেসের সঙ্গেই এটি সম্পর্কিত বলে জানা গিয়েছে। কলকাতা-সহ বেশ কিছু স্থানে অভিযান চালাচ্ছে তদন্তকারী সংস্থা। দিল্লি থেকে সিবিআইয়ের একটি টিম দক্ষিণ কলকাতার আলিপুরে তৃণমূল নেত্রীর বাবার ফ্ল্যাটে পৌঁছে গিয়েছে।
'টাকার বিনিময়ে প্রশ্ন করার' কেসে মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে সিবিআইকে মামলা নথিভুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছিল লোকপাল। লোকপাল সিবিআইকে মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন আইনে মামলা নথিভুক্ত করে তদন্ত করার নির্দেশ দেন। সেই সঙ্গে তদন্তকারী সংস্থাকে ছয় মাসের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে বলেছে লোকপাল।
লোকপাল তার আদেশে বলেছে, 'রেকর্ডে থাকা সমস্ত তথ্য খুঁটিয়ে মূল্যায়ন করার পরে, এই বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই যে মহুয়ার বিরুদ্ধে করা অভিযোগ(যার বেশিরভাগেরই দৃঢ় প্রমাণ রয়েছে) তাঁর অবস্থানের বিবেচনায় অত্যন্ত গুরুতর প্রকৃতির। এই কারণে আমাদের মতে, সত্য প্রতিষ্ঠার জন্য পূর্ণাঙ্গ তদন্ত প্রয়োজন। বর্তমান সময়ে RPS (উত্তরদাতা সরকারি কর্মচারী)-র অবস্থান বিবেচনা করে, একজন সরকারি কর্মচারীর তাঁর পদে অধিষ্ঠিত থাকাকালীন তাঁর দায়িত্ব পালনে সততা বজায় রাখা আবশ্যিক।'
লোকপাল তার আদেশে বলেছেন, 'একজন জনপ্রতিনিধির কাঁধে অনেক বেশি দায়িত্ব এবং দায়ভার রয়েছে। আমাদের কর্তব্য এবং আইনের নির্দেশ হল, সেই সমস্ত দুর্নীতি এবং দুর্নীতির অভ্যাসগুলিকে নির্মূল করার জন্য সমস্ত ধরণের প্রচেষ্টা করা যা অযাচিত সুবিধা, অবৈধ মুনাফা বা সুবিধার মতো দিকগুলির মধ্যে পড়ে। দুর্নীতি এমন একটি রোগ যা এই গণতান্ত্রিক দেশের আইন প্রণয়ন, প্রশাসনিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে বিরূপ প্রভাব ফেলছে।'
ক্যাশ ফর কোয়েরি
মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে সংসদে টাকা নিয়ে প্রশ্ন করার অভিযোগ রয়েছে। তদন্ত শেষে এথিক্স কমিটি স্পিকারের কাছে রিপোর্ট পেশ করে। গোটা বিষয়ের সূত্রপাত বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবের অভিযোগ থেকে। নিশিকান্ত দুবে মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে সংসদে প্রশ্ন করার জন্য রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী হিরানন্দানির কাছ থেকে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ তুলেছিলেন। মহুয়ার 'প্রাক্তন বন্ধু' জয় অনন্ত দেহদরয়ের অভিযোগের ভিত্তিতেই নিশিকান্ত দুবে এই অভিযোগ করেন। লোকসভার স্পিকার এই বিষয়ে একটি কমিটি গঠন করেছিলেন। নিশিকান্তের অভিযোগে লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা একটি কমিটি গঠন করেন। স্পিকারের উদ্দেশে লেখা চিঠিতে, নিশিকান্ত দুবে এটি একটি গুরুতর 'অধিকার লঙ্ঘন' এবং 'সংসদ অবমাননা' হিসাবে উল্লেখ করেন। মহুয়া মৈত্র, নিশিকান্ত দুবে সহ অনেকের বয়ান রেকর্ড করেছিল কমিটি। বিনোদ কুমার সোনকারের নেতৃত্বে গঠিত কমিটি, ৯ নভেম্বর একটি বৈঠকে 'ক্যাশ-ফর-কোয়েরির' অভিযোগে মহুয়া মৈত্রের লোকসভা সদস্যপদ বাতিলের সুপারিশ করে রিপোর্ট তৈরি করেছিল। কমিটির ছয় সদস্য রিপোর্টের পক্ষে ভোট দেন।