আজ সংসদে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে পেশ করা অনাস্থা প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নেবেন কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী। দুপুর ১২টার দিকে লোকসভায় অনাস্থা প্রস্তাবের ওপর কথা বলবেন তিনি। রাহুল গান্ধীর ২০১৯ সালে একটি বিবৃতির কারণে, গত ২৪ মার্চ তার সংসদ সদস্যপদ বাতিল করা হয়েছিল।
কেন্দ্রীয় সরকার দিল্লি সার্ভিস বিল সংসদের উভয় কক্ষ অর্থাৎ লোকসভা এবং রাজ্যসভায় পাস করিয়ে নিয়েছে। এখন ৮ অগাস্ট অর্থাৎ মঙ্গলবার মানে আজতে থেকে বিরোধীদের আনা অনাস্থা প্রস্তাবের ওপর আলোচনা হবে। আজ দুপুর ১২টা থেকে লোকসভায় অনাস্থা প্রস্তাবের ওপর আলোচনা শুরু হবে, যা চলবে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত। এই সময়ে কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী লোকসভায় অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে বিতর্ক শুরু করবেন। ১০ অগাস্ট, প্রধানমন্ত্রী মোদী অনাস্থা প্রস্তাবের জবাব দেবেন।
মঙ্গলবার সংসদে নিজের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় অনাস্থা প্রস্তাবের মুখোমুখি হতে চলেছে কেন্দ্রের মোদী সরকার। মোদী সরকারের দ্বিতীয় মেয়াদে এটাই প্রথম অনাস্থা প্রস্তাব। তবে এই সময়ে সমস্ত চোখ থাকবে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর দিকে যিনি মঙ্গলবার অনাস্থা প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নেবেন। মণিপুরের হিংসা নিয়ে সংসদে রাহুল গান্ধী কী বলেন, তা দেখতে চাইছেন সকলে। তিনি জুলাই মাসে হিংসা কবলিত রাজ্য মণিপুর পরিদর্শন করেন। প্রসঙ্গত ২০১৮ সালে কেন্দ্রের মোদী সরকারের বিরুদ্ধে প্রথম অনাস্থা প্রস্তাব আনা হয়েছিল। এই প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা চলাকালীন রাহুল গান্ধী হঠাৎ প্রধানমন্ত্রী মোদীর কাছে গিয়ে জড়িয়ে ধরেন। এই সময়, জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়াকে দেখে চোখ মারার ঘটনাও ঘটেছিল। রাহুল গান্ধীর ২০১৯ সালে তার একটি বিবৃতির কারণে, চার মাস আগে ২৪ মার্চ তার সংসদ সদস্যপদ বাতিল করা হয়েছিল। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট সাজা স্থগিত করার পর সোমবার তার সদস্যপদ ফিরিয়ে দেওয়া হয়।
২৬ জুলাই, কংগ্রেস সাংসদ গৌরব গগৈ লোকসভা সচিবালয়ে অনাস্থা প্রস্তাব আনতে লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লাকে সম্বোধন করে একটি নোটিস দিয়েছিলেন। নোটিসে বলা হয়, তিনি এবং তার বিরোধী জোট INDIA অন্য সংসদ সদস্যরা সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনছেন, যা স্পিকারের অনুমোদন করা উচিত। হাউসের নিয়ম ১৯৮ এর অধীনে, মণিপুর ইস্যুতে INDIA জোটের পক্ষ থেকে অনাস্থা প্রস্তাব আনা হয়েছিল, যা লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা গৃহীত করেন।
বিবৃতি দেবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী
৯ আগস্ট (বুধবার) দুপুর ১২টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত অনাস্থা প্রস্তাবের ওপর আলোচনা হবে। বুধবারই অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে বক্তব্য দিতে পারেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। এ সময় তিনি মণিপুর পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তারিতভাবে সরকারের পক্ষ তুলে ধরবেন। এর পরে, ১০ অগাস্ট দুপুর ১২টায় আবার আলোচনা শুরু হবে এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বিকাল ৪ টায় অনাস্থা প্রস্তাবের জবাব দেবেন। তারপর এই প্রস্তাবে ভোট হবে।
বিজেপির পক্ষে বলবেন
তথ্য অনুযায়ী, বিজেপির তরফে অনাস্থা প্রস্তাবের বিরুদ্ধে আলোচনা শুরু করবেন নিশিকান্ত দুবে । বিজেপির পক্ষ থেকে প্রায় ২০ জন বক্তা থাকবেন। এর মধ্যে রয়েছেন স্মৃতি ইরানি, নির্মলা সীতারামন, জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া এবং রাজবর্ধন সিং রাঠোরের নাম।
অনাস্থা প্রস্তাবে বিরোধীদের পরাজয় নিশ্চিত
লোকসভায় বিরোধীদের আনা অনাস্থা প্রস্তাব পাস করা অসম্ভব, কারণ প্রধানমন্ত্রী মোদীর নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকারের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে। পরিসংখ্যান দেখলে বোঝা যাবে, সংসদের নিম্নকক্ষ লোকসভায় মোদী সরকার সংখ্যাগরিষ্ঠ। এর ৩০১1 সাংসদ রয়েছে, যেখানে এনডিএ-র ৩৩৩ সাংসদ রয়েছে। এখানে বিরোধী দলের মোট ১৪২ জন সংসদ সদস্য রয়েছে। এমতাবস্থায় বিরোধীদের অনাস্থা প্রস্তাব যে ব্যর্থ হবে তা স্পষ্ট।
তাহলে বিরোধীরা কেন এই বাজি খেলল?
এমতাবস্থায় প্রশ্ন উঠেছে বিরোধীরা কেন সংসদে অনাস্থা আনল? বিরোধীদের সঙ্গে যুক্ত সূত্র বলছে, এই অনাস্থা প্রস্তাবের মাধ্যমে বিরোধীরা মণিপুর ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রী মোদীকে কথা বলতে বাধ্য করতে চায়। সম্প্রতি, বিরোধী জোট INDIA অন্তর্ভুক্ত ১৬টি দলের ২১ জন সংসদ সদস্য মণিপুর সফর করেছেন। খবরে বলা হয়েছে, তাদের সফরের সময় বিরোধী দলের সাংসদরাও মণিপুরের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করার পরিকল্পনা করেছিলেন, যা বিতর্কের সময় সংসদে উত্থাপিত হতে পারে।