কংগ্রেস ছেড়েই প্রধানমন্ত্রী-স্তুতি শোনা গিয়েছে গুলাম নবি আজাদের গলায়। মোদীর সম্পর্কে তাঁর ধারণা ভুল ছিল বলে দাবি করেছে সদ্য কংগ্রেস-ত্যাগী নেতা। তাঁর ইস্তফার পর এবার জম্মু-কাশ্মীরে বড় ধাক্কা খেতে চলেছে কংগ্রেস। মঙ্গলবার জম্মু ও কাশ্মীরের ৬৪ জন নেতা একযোগে কংগ্রেস ছেড়েছেন। তাঁদের মধ্যে আছেন প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী তারা চাঁদ, প্রাক্তন মন্ত্রী মাজিদ ওয়ানি, মনোহরলাল শর্মা, প্রাক্তন বিধায়ক বলওয়ান সিং, জম্মু-কাশ্মীরের কংগ্রেসের সম্পাদক নরিন্দর শর্মা৷ এবং সাধারণ সম্পাদক গৌরব মাগোত্রের মতো নেতারা। আগামী রবিবার তাঁরা আজাদের নতুন দলে যোগ দিতে পারেন।
প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী তারা চন্দ বলেন, 'আমরা খুশি আজাদ নিজের দল গঠন করছেন। কংগ্রেস হাইকমান্ড একবারের জন্যও আমাদের সময় দেওয়ার প্রয়োজন বোধ করেনি। আমরা নিজেদের বক্তব্য জানাতে চেয়েছিলাম। আমাদের কথা শোনার কারও কোনও ইচ্ছা ছিল না। অন্যান্য দলের নেতারাও সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। তাঁরাও যোগ দেবেন। এমনকি ক্ষমতাসীন বিজেপি নেতারাও আসতে চান।'
রাহুলের বিরুদ্ধে তোপ দেগে কংগ্রেস ত্যাগ করেন গুলাম নবি আজাদ। তাঁর পদত্যাগের নেপথ্যে বিজেপি রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আজাদ স্পষ্ট করে দিয়েছেন,বিজেপিতে যোগ দেবেন না। জম্মু ও কাশ্মীরে একটি নতুন দল গঠন করবেন। প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বিধানসভা নির্বাচনে।
দিন কয়েক আগে মোদীর প্রশংসাও করেন আজাদ। একটি সংবাদ মাধ্যমে তিনি বলেছিলেন,'মোদীর কোনও সন্তান নেই। আগে নরেন্দ্র মোদীকে একজন নির্দয় মানুষ বলে মনে হত। কিন্তু তাঁর মানবিকতা দেখলাম।' রাহুল সম্পর্ক তাঁর প্রতিক্রিয়া ছিল,ভাল মানুষ হলেও রাজনীতির জন্য একেবারেই উপযুক্ত নন।
গুলাম নবি আজাদ রাজ্যসভা থেকে অবসর গ্রহণ করার দিন আবেগতাড়িত হয়ে পড়েছিলেন নরেন্দ্র মোদী। কেঁদে ফেলেছিলেন। আজাদের ইস্তফার সঙ্গে মোদী-শাহের হাত দেখছেন অনেতে। গুলাম নবি আজাদ বলেন,'মোদী শুধু অজুহাত মাত্র। দলে বদল আনার দাবিতে চিঠি দেওয়ার পর থেকে বিরাগভাজন হয়ে যাই। কেউ প্রশ্ন করুক সেটা চান না তাঁরা।'
১৯৭০ সালে কংগ্রেসে যোগ দিয়েছিলেন আজাদ। ১৯৭৫ সালে জম্মু ও কাশ্মীর যুব কংগ্রেসের সভাপতি হন। ১৯৮০ সালে যুব কংগ্রেসের জাতীয় সভাপতি করা হয় তাঁকে। ১৯৮০ সালে মহারাষ্ট্রের ওয়াশিম থেকে প্রথমবার লোকসভা নির্বাচনে জয়ী হন। ১৯৮২ সালে হন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। ১৯৮৪ সালেও তিনি একই আসন থেকে জয়লাভ করেন। ১৯৯০-১৯৯৬ সাল পর্যন্ত মহারাষ্ট্রের রাজ্যসভার সাংসদ ছিলেন। নরসিমা রাও সরকারের মন্ত্রীও হয়েছিলেন আজাদ। ১৯৯৬ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত জম্মু ও কাশ্মীর থেকে রাজ্যসভায় পৌঁছেছিলেন। ২০০৫ সালে জম্মু ও কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রীও হন। ২০০৮ সালে পিডিপি কংগ্রেস থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করায় আজাদ সরকারের পতন হয়। মনমোহন সিং সরকারের স্বাস্থ্যমন্ত্রীও ছিলেন আজাদ। ২০১৪ সালে আজাদ রাজ্যসভায় কংগ্রেসের বিরোধী দলের নেতা ছিলেন।
আরও পড়ুন- 'কেষ্টর মতো সাহায্যকারী ছেলে কম দেখেছি,' অনুব্রতর পাশে নেত্রী