গত জুলাই মাসে খবরের শিরোনামে উঠে এসেঠিল উত্তরপ্রদেশ। গ্যাংস্টার বিকাশ দুবের এনকাউন্টারে মৃত্যু নিয়ে সরগরম ছিল গোটা দেশ। পরিসংখ্যান বলছে ২০১৭ সালে যোগী ক্ষমতায় আসার পর উত্তরপ্রদেশে সবচেয়ে বেশই এনকাউন্টার হয়েছে। এর মাঝেই এবার মুখ পুড়ল প্রশাসনের। যার দায় অবশ্য কানপুর ডাক বিভাগের। সম্প্রতি কুখ্যাত আন্ডারওয়ার্ল্ড ডন ছোটা রাজন ও গ্যাংস্টার মুন্না বজরঙ্গীর ডাকটিকিট বার করেছে ডাবিভাগ। আর তাতেই এখন সরগরম যোগী রাজ্যের রাজনীতি।
মাই স্ট্যাম্প প্রকল্পে কানপুরে ডাক বিভাগের সদর দফতর থেকে এই দুটি ডাকটিকিট প্রকাশ করা হয়েছে। ১২টা টিকিট বার হয়েছে ছোটা রাজনের নামে, ১২টা মুন্না বজরঙ্গীর নামে। দাম ৫ টাকা করে। কেন্দ্র সরকারের ডাক বিভাগের তরফে নয়া একটি প্রকল্পে ভারতীয় নাগরিকরা ‘পার্সোনালাইজড স্ট্যাম্প’ বা ডাক টিকিট ছাপাতে পারবেন। তাতে ওই নাগরিকের নিজের ছবি, কোনও প্রতিষ্ঠানের লোগো কিংবা দেশের কোনও ঐতিহ্যপূর্ণ বিল্ডিং, জনপ্রিয় পর্যটনস্থল, ঐতিহাসিক শহরের ছবিও থাকতে পারে। তবে আপত্তিজনক কোনও ছবি ডাক টিকিটে ছাপানো যাবে না। অথচ কানপুরে দুই মাফিয়ার ছবি দিয়ে ডাক টিকিট ছাপানো হয়েছে। কীভাবে দুজন কুখ্যাত অপরাধীর নামে ডাকটিকিট প্রকাশ করে দিল ডাকবিভাগ! বিষয়টি জানাজানি হতে রাজ্য প্রশাসনে হইচই পড়ে যায়। কী করে এত বড় ভুল হল, তা নিয়ে এবার তদন্ত করছে খোদ ডাকবিভাগ।
মাই স্যাম্প প্রকল্পে এক পাতা এ ধরণের ডাক টিকিট পেতে মোট খরচ ৩০০ টাকা। ছোটা রাজন ও বজরঙ্গি মুন্নার ছবি স্ট্যাম্পে ছাপাতে ৬০০ টাকা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কে বা কারা এই টাকা দিয়েছে, বা এই ডাক টিকিট ছাপানোর বরাত দিয়েছে, তা এখনও অজানা। তবে এর পিছনে দফতরের আধিকারিকদের গাফিলতি রয়েছে বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। জানা গিয়েছে সংশ্লিষ্ট কোনও আধিকারিক ছাপায় যাওয়ার আগে ছবিগুলো দেখে নেওয়ার প্রয়োজনও বোধ করেননি। এই ঘটনায় দায়িত্বে থাকা সংশ্লিষ্টি আধিকারিকদের ইতিমধ্যে বরখাস্ত করা হয়েছে।
৯ জুলাই ২০১৮ সালে মুন্না বজরঙ্গি বাগপত জেলে খুন হয়েছিল। অন্যদিকে, ২০১৫ সালে বালি দ্বীপ থেকে ছোটা রাজনকে গ্রেফতার করে ভারতে আনা হয়েছিল। আপতত তিহাড় জেলে রাখা হয়েছে তাকে। প্রসঙ্গত, ২০১১ সালে মাই স্টাম্প যোজনা শুরু হয়েছিল। ৩০০ টাকা দিয়ে যে কোনও ব্যক্তি নিজের ছবি দিয়ে ডাক টিকিট জারি করতে পারেন। অন্য ডাক টিকিটের মতোই মান্যতা দেওয়া হবে। যে ব্যক্তির নামে ডাকটিকিট জারি হবে তিনি জীবিত থাকা আবশ্যিক। এমনকী তাঁকে ডাকবিভাগে সশরীরে গিয়ে বিভিন্ন তথ্য দিয়ে আসতে হয়। ২০১৮ সালের ৯ জুলাই মুন্না বজরঙ্গি বাগপত জেলে খুন হয়েছিল। অন্যদিকে, ২০১৫ সালে বালি দ্বীপ থেকে ছোটা রাজনকে গ্রেফতার করে ভারতে আনা হয়েছিল। আপতত তিহাড় জেলেনিশ্ছিদ্র নিরাপত্তায় রয়েছে ছোটা রাজন। গোয়েন্দাদের দাবি, তিহাড় জেলের মধ্যেই ছোটা রাজনকে খুন করা হতে পারে। আন্ডারওয়ার্ল্ড ডন দাউদ ইব্রাহিমের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ছোটা শাকিল তাকে খুনের ছক কষছে। দাউদের সঙ্গে করাচিতে বসেই ডি-কোম্পানির নিয়ন্ত্রণ করে শাকিল।