একুশের বিধানসভা ভোটে BJP-র বিরুদ্ধে বড় ব্যবধানে জয় পাওয়ার পর এবার মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের লক্ষ্য দিল্লি। ২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের সুরও তিনি ইতিমধ্যেই বেঁধে দিয়েছেন একুশের মঞ্চ থেকে। সেদিনই জানিয়েছিলেন, ৩ দিনের দিল্লি সফরে যাবেন তিনি। সেই মতো সোমবার দুপুরে দিল্লি রওনা দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের।
সূত্রের খবর, রাজধানী দিল্লিতে ঠাসা কর্মসূচি রয়েছে তৃণমূল নেত্রীর। করবেন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক, যাবেন সংসদে, বৈঠকে বসার কথা অ-BJP জোটগুলির সঙ্গে। সূত্রের এও দাবি, রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পারেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সূত্রের খবর, আগামীকাল মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিকেল চারটেয় হবে এই বৈঠক। এই সাক্ষাতে বাংলার দাবি-দাওয়া, রাজ্যকে আরও কোভিড টিকা পাঠানো নিয়ে সরব হতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী। আবার কালই সংসদেও যেতে পারেন তিনি।
আরও পড়ুন : রাস্তায় ফেলে পালাল ছেলে-মেয়ে, বৃদ্ধাকে সুবিচার দিলেন অটোচালক
এত কর্মসূচির মধ্যে রাজনৈতিকভাবে মমতার জন্য সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ হল, অ-BJP জোটগুলির সঙ্গে বৈঠক। সূত্রের খবর, বুধবার বিকেলে দিল্লির চাণক্যপুরীতে বঙ্গভবনে BJP বিরোধী দলগুলির সঙ্গে বৈঠকে বসতে পারেন তৃণমূল নেত্রী। তৃণমূলের একটি সূত্রের দাবি, সেদিনের বৈঠকে শরদ পাওয়ার, পি চিদম্বরম, মল্লিকার্জুন খারগে, অরবিন্দ কেজরিওয়ালদের মতো জাতীয় রাজনীতির প্রথম সারির নেতারা উপস্থিত থাকতে পারেন ৷ প্রায় ১০০ জন নেতা-নেত্রীর উপস্থিত থাকার কথাও শোনা যাচ্ছে। রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, একুশে জুলাই মমতার বক্তব্য দিল্লিতে বসে শুনেছেন অনেক নেতা। সেদিনই নিজের বক্তব্যে জোট নিয়ে জোরালো সওয়াল করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর বুধবার তিনি BJP বিরোধী বৃহত্তর জোটের মঞ্চ তৈরি করার সূচনা করতে চলেছেন।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তৃণমূলের সংসদীয় দলের চেয়ারপার্সন করা হয়েছে৷ সেই সূত্রে, সংসদে গিয়ে দলীয় সাংসদদের সঙ্গে বৈঠক করতে পারেন তিনি। সেখানে দলীয় নেতাদের নিয়ে ২৪-এর রূপরেখা নিয়ে আলোচনা সারতে পারেন।
আরও পড়ুন : Dilip Ghosh : TMC-র 'খেলা হবে'-র পাল্টা 'পশ্চিমবঙ্গ বাঁচাও সপ্তাহ' পালন করবে BJP , ঘোষণা দিলীপের
প্রসঙ্গত, তৃতীয়বার রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পর এটাই প্রথম দিল্লি সফর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তবে এই সফরকে গুরুত্ব দিতে নারাজ গেরুয়া শিবির। রাজ্য BJP-র সভাপতি দিলীপ ঘোষ মমতার এই সফরকে কটাক্ষও করেছেন। বলেছেন, 'আগেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে গ্রহণযোগ্যতা পাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। জোট গড়েছিলেন। কিন্তু, তাতে কাজ হয়নি। এবারও তাই হবে।'
এদিকে দিল্লি রওনা দেওয়ার আগেই BJP-র উপর আরও চাপ বাড়াতে পেগাসাসকাণ্ড নিয়ে তদন্ত কমিশন গঠন করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। প্রথম রাজ্য হিসেবে এই পদক্ষেপ করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে মমতা জানান, ১৯৫২ সালের তদন্ত আইনের তিন নম্বর ধারার আওতায় পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন ব্যক্তির ‘মোবাইল ফোনের অবৈধ হ্যাকিং বা ট্র্যাকিং বা রেকর্ডিং’ নিয়ে তদন্ত করবে কমিশন। এই সিদ্ধান্ত মন্ত্রিসভাতেও পাশ হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।