ভারতে বেড়েই চলেছে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ। রোজই বেড়ে চলেছে আক্রান্তের সংখ্যা, মৃত্যু। চিন্তায় চিকিৎসক থেকে শুরু করে বিশেষজ্ঞরা। কী করে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যায়, চিন্তায় তারা।
দেশে গত ৩ দিন ধরে করোনা সংক্রমণের ঘটনা কিছু কমেছে। তবে করোনা আক্রান্ত রোগীদের মৃত্যুর হার স্বস্তি দিচ্ছে না দেশকে। দিল্লি এবং মহারাষ্ট্রে করোনার কেস কমছে। তবে মৃত্যুর ক্ষেত্রে সেই ছবি উল্টো। দক্ষিণ ভারতে করোনা সংক্রমণ বাড়ছে।
ইন্ডিয়া টুডে-র কনসাল্টিং এডিটর রাজদীপ সারদেশাইয়ের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে বিশিষ্ট চিকিৎসক দেবী শেঠি জানান, ভারতে ৫১ কোটি মানুষকে টিকা দিলেই হবে। আর তা আগামী দু-তিন মাসে সেই কাজ সেরে ফেলা যাবে। ১৮ বছরের ওপরে সব মানুষকে টিকা দিতে হবে।
With children vulnerable, we need to ensure that 300 million young parents are vaccinated before COVID 3.0 hits us: Dr Devi Shetty says. @IndiaToday 👇 https://t.co/tiAj6zHwmN
— Rajdeep Sardesai (@sardesairajdeep) May 15, 2021
নারায়ণা হেলথের চেয়ারপার্সন ডাঃ দেবী শেঠি আরও জানান, ভারতে করোনা অতিমারীর পরিস্থিতি সামাল দেওয়া কোনও কঠিন কাজ নয়। আর তা করতে হলে সস্তা এবং দ্রুত টিকাকরণের ব্যবস্থা করতে হবে। টিকা কাজ করছে। এটা প্রমাণিত।
এইমস-এর অধিকর্তা রণদীপ গুলেরিয়া জানিয়েছেন, ভারত একটা বড়সড় দেশ। এখানে এক এক সময়ে করোনার সংক্রমণ চূড়ান্ত জায়গায় পৌঁছবে। দেশের পশ্চিম অঞ্চলে করোনার সংক্রমণের ঘটনা কিছুটা কমেছে। মহারাষ্ট্রে এখন চূড়ান্ত জায়গায় পৌঁছে গিয়েছে বলে মনে হয়।
তিনি জানান, দিল্লি এবং আশপাশের কথা যদি বলি, তা হলে সেখানে সংক্রমণ তুঙ্গে পৌঁছতে আর খানিকটা সময় লাগবে। সম্ভবত এই মাসের মাঝামাঝি তা হবে।
পূর্ব ভারতে করোনা সংক্রমণ নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি। রণদীপ গুলেরিয়া জানান, অসম এবং বাংলার মতো রাজ্যে করোনা সংক্রমণ বাড়ছে। এ ব্যাপারে সতর্ক হওয়ার দরকার রয়েছে।
অনেকেই আশঙ্কা করছেন, তৃতীয় ঢেউয়ের। সবাইকে টিকা দেওয়া দরকারি? এ ব্যাপারে তিনি বলেন, সেই আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। তবে বেশিরভাগ মানুষকে টিকা দিতে পারলে, তৃতীয় ঢেউ ভয়াবহ হবে না।
সিরাম ইন্সটিটিউট অফ ইন্ডিয়া জানাচ্ছে, জুলাই পর্যন্ত এ দেশে টিকার অভাব থাকবে। এত বড় দেশে টিকা দেওয়ার কাজ সহজ নয়।
তিনি বিদেশি টিকার ওপর-ও জোর দিয়েছেন। যে টিকা অনুমোদন পেয়েছে, সেগুলোর ব্যাপারে ভাবা যেতে পারে।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউ যে আসতে পারে, সে ব্যাপারে আগে আশঙ্কা করেছিলেন বিজ্ঞানীরা। তবে ভাইরাস নিজের চরিত্র পাল্টে এত ছোঁয়াচে হয়ে যাবে, তা ভাবা যায়নি।
১০-২০ হাজার আক্রান্ত থেকে ৩-৪ লক্ষ আক্রান্ত হবে, তা বোঝা যায়নি। এর ফলে হাসপাতালে রোগীদের চাপ প্রচুর বেড়ে গিয়েছে। তাই ওষুধ, অক্সিজেনের হাহাকার শুরু হয়েছে।
তিনি আরও জানান, এই পরিস্থিতি থেকে রক্ষা পেতে স্বাস্থ্য় ব্যবস্থা আরও উন্নত করতে হবে। তাঁর মতে, এক সপ্তাহ লকডাউনের দরকার রয়েছে। সপ্তাহান্তে লকডাউন করে কোনও লাভ হবে না।