লকডাউনের পর দেশে আনলক পর্ব চালু হয়েছে। স্বাভাবিক হচ্ছে জীবনযাত্রাও। বাস, ট্রেন, বিমান পিরষেবাও ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হওয়ার পথে তবে করোনা মাহামরি মাথায় রেখেই এবার সংসদের শীতকালীন অধিবেশন বাতিল হয়ে গেল। এ নিয়ে সাংসদদের চিঠি দিলেন সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশী।
এমনিতেই দিল্লিতে করোনা পরিস্থিতি খারাপ। লাগামহীন ভাবে বাড়ছে সংক্রমণ। তারমধ্যে শীতকালে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়ার আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। এই পরিস্থিতিতে সবকটি দল একমত হয়েই শীতকালীন অধিবেশন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশী। লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা বিবৃতি দিয়ে জানিয়ে দিলেন, কোডিভের জন্য এবার সংসদের শীতকালীন অধিবেশন বসবে না।
লোকসভার কংগ্রেস দলনেতা অধীররঞ্জন চৌধুরী কৃষি আইন নিয়ে এবারের শীতকালীন অধিবেশনে আলোচনা চেয়েছিলেন। তাঁর বক্তব্য ছিল, যে আইনের প্রতিবাদে দেশ জুড়ে এমন বড়ো সড়ো আকারের বিক্ষোভ চলছে, সেই আইন সংশোধনের জন্য বিশেষ অধিবেশন দরকার। তার জবাবে চিঠি লিখে প্রহ্লাদ জোশী জানিয়ে দিয়েছেন, দেশের বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে আর ঝুঁকি নিচ্ছে না কেন্দ্রীয় সরকার। সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী চিঠিতে জানিয়েছেন, সবকটি দলের নেতৃত্বের সঙ্গে তাঁর আলোচনা হয়েছে। সবাই সহমত, করোনার মধ্যে শীতকালীন অধিবেশনের দরকার নেই।
তবে সামনের বছরের জানুয়ারিতে বাজেট অধিবেশন বসবে সংসদে। সংবিধান অনুযায়ী সংসদের একটি অধিবেশনের ছ’ মাসের মধ্যে আরও একটি অধিবেশন করতেই হবে। গত মার্চে কোভিডের দাপটে রাতারাতি বাজেট অধিবেশন মুলতুবি হয়ে যায়। সেই সময় সংক্রমণ রুখতে দেশজুড়ে লকডাউন জারি করে কেন্দ্রীয় সরকার। মাঝপথে বাতিল করে দিতে হয় সংসদের বাজেট অধিবেশনও। তারপরে সেপ্টেম্বরের শেষে বাদল অধিবেশন বসে সংসদে। ? তা নিয়ে কম টানাপোড়েন চলেনি। শেষপর্যন্ত যাবতীয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে সংক্ষিপ্ত অধিবেশন ডাকা হয়। কিন্তু বিপদ এড়ানো যায়নি। বাদল অধিবেশনের শেষে করোনায় আক্রান্ত হন কমপক্ষে ৪০ জন সাংসদ। এমনকী, মৃত্যু হয় রাজ্য়সভার ৩ সাংসদের। সেই অধিবেশনেই পাশ করিয়ে দেওয়া হয় কৃষি সংক্রান্ত ৩টি নতুন বিলকে, যা পরবর্তীকালে আইনে পরিণত হয়।
শীতকালীন অধিবেশন হবে তো? কয়েকদিন ধরে জল্পনা চলছিল রাজধানীর অলিন্দে। অবশেষে সেই জল্পনায় ইতি পড়ল। পাশাপাশি শীতকালীন অধিবেশন বাতিল হওয়ার, কৃষি আইন এবং কৃষকদের বিক্ষোভ নিয়ে আলোচনার যে দাবি বিরোধীরা করছিল, তা এখনই মানা হচ্ছে না, তাও সুচারু ভাবে বুঝিয়ে দিল কেন্দ্রীয় সরকার।