scorecardresearch
 

দিদির রাজ্যসভায় সদস্য জহর সরকার, কেন যশবন্ত সিনহা নয়?

জহর সরকার, রাজ্যসভার সদস্য হচ্ছেন তৃণমূল কংগ্রেসের কিন্তু যশবন্ত সিনহার নাম যেটা এতদিন ধরে প্রচারিত হয়েছে, কেন হলেন না তিনি? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন যশবন্ত সিনহাকে করলেন না, কিন্তু জহর সরকারকে করলেন? তার প্রথম কারণ হচ্ছে যে, এবারের নির্বাচনের সবচেয়ে বড় ইস্যু ছিল ‘আউটসাইডার’ বা ‘বহিরাগত তত্ত্ব’ এবং সেখানে বাঙালি আইডেন্টিটি, এটা ছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমস্ত রাজনীতির একটা বড় জায়গা।

Advertisement
জওহর সরকার ও যশবন্ত সিনহা জওহর সরকার ও যশবন্ত সিনহা
হাইলাইটস
  • জহর সরকার, রাজ্যসভার সদস্য হচ্ছেন তৃণমূল কংগ্রেসের কিন্তু যশবন্ত সিনহার নাম যেটা এতদিন ধরে প্রচারিত হয়েছে, কেন হলেন না তিনি?
  • মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন যশবন্ত সিনহাকে করলেন না, কিন্তু জহর সরকারকে করলেন?
  • তার প্রথম কারণ হচ্ছে যে, এবারের নির্বাচনের সবচেয়ে বড় ইস্যু ছিল ‘আউটসাইডার’ বা ‘বহিরাগত তত্ত্ব’ এবং সেখানে বাঙালি আইডেন্টিটি, এটা ছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমস্ত রাজনীতির একটা বড় জায়গা

জহর সরকার, রাজ্যসভার সদস্য হচ্ছেন তৃণমূল কংগ্রেসের কিন্তু যশবন্ত সিনহার নাম যেটা এতদিন ধরে প্রচারিত হয়েছে, কেন হলেন না তিনি? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন যশবন্ত সিনহাকে করলেন না, কিন্তু জহর সরকারকে করলেন? তার প্রথম কারণ হচ্ছে যে, এবারের নির্বাচনের সবচেয়ে বড় ইস্যু ছিল ‘আউটসাইডার’ বা ‘বহিরাগত তত্ত্ব’ এবং সেখানে বাঙালি আইডেন্টিটি, এটা ছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমস্ত রাজনীতির একটা বড় জায়গা। সুতরাং এই রাজনীতির ফল হিসাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২০০-র ওপরে আসন নিয়ে তিনি জিতেছেন, এবং তার মানে এই নয় যে, সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে বাঙালি-অবাঙালির কোনও ভেদ রাখছেন। এবং সর্বভারতীয় রাজনীতি করার সময় তিনি নিশ্চয় যারা বাংলার বাইরের মানুষ সবাইকে নিয়েই চলবেন। কিন্তু প্রথম যে রাজ্যসভার প্রার্থী পদটা তিনি এমন একজন বাঙালিকে এই দায়িত্বটা দিলেন, তিনি শুধু একজন বাঙালি নন, তিনি আমলা, আবার শুধু একজন আমলা নন, তিনি মোদী বিরোধী রাজনীতি সম্পর্কে ভীষণ ভাবে সবাক। লিখছেন, বলছেন, এবং একজন পাবলিক ইনটেলেকচুয়াল হিসাবে পশ্চিমবঙ্গে খুব জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন। এবং তিনি সমস্ত জায়গায় ইংরেজি, বাংলা, প্রচুর জায়গায় তিনি লিখছেন এবং অ্যাকাডেমিক রিসার্চ করছেন। সামাজিক নানান রকমের কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত।

আরও পড়ুন : 'মোদীকে হারানো অসম্ভব'- এই মিথ ভাঙা মমতাই কি প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী ?

৭৫ সালের আইএএস অফিসার জহর সরকার। প্রথমে জেলাশাসকের কাজ করেছেন বর্ধমানে, ২৪ পরগনায়। তারপরে যখন রাজীব গান্ধি প্রধানমন্ত্রী তখন প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হয়েছিলেন, স্টেট মিনিস্টার কমার্সের। তখন তিনি ছিলেন ব্যক্তিগত সচিব এবং তারপরে জহর বাবু প্রিয়দার যখন মন্ত্রিত্ব থাকল না তখন কলকাতায় ফিরে, জ্যোতিবাবুর ঘনিষ্ট হন শিল্প সচিবের দায়িত্ব পালন করেছেন, বুদ্ধ বাবুর ঘনিষ্ঠ হন, শিক্ষা এবং সাইন্স টেকনোলজি নানান বিষয়ক তিনি সচিব হন। তারপরে দিল্লি চলে আসেন। দিল্লিতে শিল্পের দায়িত্বে ছিলেন। সংস্কৃতি সচিব হিসাবে মনমোহন সিংয়ের খুব প্রিয় পাত্র হয়ে উঠেছিলেন এবং গোটা পৃথিবী ঘুরেছেন, সংস্কৃতি নিয়ে কাজকর্ম করেছেন। এবং সংস্কৃতি সম্পর্কে তিনি খুব ওয়াকিবহল একজন মানুষ কেননা, পুরাতত্ত্ব আর সংস্কৃতির বিভিন্ন যে লোকাচার এই সমস্ত বিষয়ে তিনি অনেক পড়াশোনা করেন, লেখালেখি করেন। তো এহেন জহর সরকার, তাঁর সঙ্গে কিন্তু প্রসার ভারতীর সিইও থাকার সময় মোদী সরকারের বিরোধ বাধে। এবং খুব নন-কনফরমিস্ট আইএএস অফিসার সৎ বলে পরিচিত। এবং সেখানে চেয়ারম্যানের সাথে সিইওর বিবাদে প্রসার ভারতী থেকে তিনি যখন বিদায় নেন তারপরেই কিন্তু তিনি একটা অবসরপ্রাপ্ত জীবনে সক্রিয় হয়ে ওঠেন, সবাক হয়ে ওঠেন। এবারে ভোটের সময়ও নির্বাচন কমিশনের রিগিং-এর ব্যাপারে তিনি সক্রিয় ছিলেন। 

Advertisement

আরও পড়ুন : Jawhar Sircar : রাজ্যসভায় মমতার বাজি দুঁদে আমলা জওহর সরকার, কে ইনি?

মজার ব্যাপার, যখন প্রধানমন্ত্রী ছিলেন মনমোহন সিংহ, মনোজ তিওয়ারি তখন ইনফরমেশন মিনিস্টার। মনে আছে তখন জহর সরকারের সঙ্গে মনোজ তিওয়ারিরও খুব ঝামেলা হয়েছিল। কারণ নরেন্দ্র মোদীর সাক্ষাৎকার বিরোধী নেতা হিসাবে দেখানো উচিত বলে তিনি সমস্ত ব্যবস্থা করেছিলেন তখন তিনি প্রসার ভারতীতে আছেন। সেটা আবার মণীশের পছন্দ হয়নি। তা নিয়ে দূরদর্শনে প্রচুর বিবাদ হয়েছিল। তখন কিন্তু নরেন্দ্র মোদীর বিপক্ষে রায় দেন নি। বিরোধী নেতা হিসাবে নরেন্দ্র মোদীর পক্ষে রায় দিয়েছিলেন। নরেন্দ্র মোদী কিন্তু প্রথম দিকে পছন্দও করেছিলেন জহর সরকারকে। এবং জহর সরকারকে ব্যক্তিগতভাবে চা চক্র এবং বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানাতেন। ডাকাবুকো আইএএস অফিসার বলতেন। কিন্তু প্রসার ভারতীর দায়িত্ব পাওয়ার পরেই পরিস্থিতিটা বিগড়ে যায়। এবং তারপরে জহর চলে যান কলকাতায়। জহর সরকার এই মুহূর্তে শুধু প্রাক্তন আমলা নন, তিনি একজন পাবলিক ইনটেলেকচুয়াল অব নট অনলি বেঙ্গল, তিনি কিন্তু আজ গোটা দেশের কাছে একটা পরিচিত মুখ।

 

Advertisement