Jalpaiguri Baikunthapur Rajbari Puja: কার্তিক আর গণেশ দুই ভাইয়ের পোশাক আসে অসম থেকে। মা দুর্গা এবং দুই বোন সরস্বতী-লক্ষ্মীর বেনারসি শাড়ি আসে কলকাতা থেকে। মায়ের মাথার উপরের যে চাঁদোয়া সহ কাপড়ের অন্যান্য সরঞ্জাম আসে পদ্মাপারেের দেশ থেকে। এ সবই চালু হয়েছিল অবিভক্ত ভারতে। তখন কাঁটাতারের বেড়া, সীমান্ত-সীমানা এমন ছিল না। সময়ের ফেরে রাজনৈতিক সীমানা তৈরি হলেও রীতিতে কোনও ছেদ পড়েনি। কথা বলছি জলপাইগুড়ি রাজবাড়ির পুজো নিয়ে। চলতি বছরে এই রাজবাড়ির পুজোর ৫১৫ তম পুজো আয়োজন।
রাজপুরোহিত শিবু ঘোষাল জানান, দেবী মূর্তি তৈরির কাজ সম্পন্ন হয়েছে। রং এবং চক্ষুদান সব কিছুই হবে সময় মত। মহালয়া ভোরে হয় দেবী দুর্গার চক্ষুদান। তাই দুর্গাপুজোর প্রাক মুহূর্তে জোর কদমে চলছে পুজো প্রস্তুতি জলপাইগুড়ি রাজবাড়িতে। সাজিয়ে তোলা হচ্ছে রাজবাড়িকে। এদিকে রাজবাড়ির পুজো প্রস্তুতি কেমন চলছে তা দেখতে প্রতি বছরের মতো এবারও স্থানীয়রা ভিড় জমান রাজবাড়ি এলাকা জুড়ে। প্রায় এক মাস আগে থেকেই এলাকা মেলার আকার নেয়। যে যখন সময় পান এখানেই এসে আড্ডায় মেতে ওঠেন। রাজবাড়ির প্রতিমাকে সাক্ষী রেখে।সময় বদলালেও এখনও ইতিহাস এবং নীতি-নিয়ম বদলে যায়নি রাজবাড়ির।
এ বছর ৫১৫ তম বর্ষে পদার্পণ করছে জলপাইগুড়ি রাজবাড়ির এই ঐতিহ্যবাহী পুজো। প্রত্যেকবছর জলপাইগুড়িবাসী মুখিয়ে থাকে রাজবাড়ী পুজোর সাক্ষী হতে। পুজোর প্রস্তুতি এখন চলছে জোর কদমে।এখানকার দেবী মূর্তি থেকে শুরু করে পুজোর আচার অনুষ্ঠান এমনকি ভোগেও রয়েছে অভিনব বিশেষত্বের ছোঁয়া। মায়ের মূর্তির রং হয় তপ্ত কাঞ্চনবর্ণের।
মায়ের ভোগে আমিষ পদ
ভোগ হিসেবে মা’কে দেওয়া হয় নানান রকমের আমিষ পদ। চালের গুঁড়ো দিয়ে তৈরি প্রতীকী পশুবলি দেওয়া হয়। বংশপরম্পরায় প্রত্যেক বছর এমনই ঐতিহ্যবাহী নিয়ম সুষ্ঠুভাবে মেনে মা দুর্গা, পূজিতা হন জলপাইগুড়ির রাজবাড়িতে।এই রাজবাড়ির পুজোয় দশমীর দিন পালনও শহরবাসীর কাছে নস্টালজিয়া। ঢাকের তালে মাকে বিদায় জানানো হয়। এখনও যান্ত্রিক মিউজিক সিস্টেম বা অন্য কোনও যন্ত্রের প্রবেশ হয়নি এই পুজোয়। সব মিলিয়ে আরও একবার ইতিহাস রোমন্থনের সুযোগ রয়েছে এই পুজোয়।