scorecardresearch
 

Jamai Sasthi 2024 Date- Rituals: কীভাবে শুরু হয়েছিল জামাইষষ্ঠীর আচার? জানুন এবছর কবে জামাই আপ্যায়ন করবেন

Jamai Sasthi: জামাইয়ের মঙ্গল কামনায় শাশুড়ি মায়েরা এই ব্রত পালন করেন মূলত। জামাইষষ্ঠীর উৎসবকে ঘিরে যুগ যুগ ধরে বাঙালি বাড়িতে পালন হয়ে আসছে নানা আচার-অনুষ্ঠান।

Advertisement
জামাই ষষ্ঠী ২০২৪ জামাই ষষ্ঠী ২০২৪

বাঙালির বারো মাসে তের পার্বণ। তার মধ্যে একটি খুব গুরুত্বপূর্ণ উৎসব হল জামাইষষ্ঠী। জ্যৈষ্ঠ মাসের শুক্ল পক্ষের ষষ্ঠী তিথিতে এই আচার পালন করা হয়। বাঙালির ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতিক লৌকিক আচার জামাইষষ্ঠী। এদিন বিবাহিত মেয়ে ও জামাইকে নিমন্ত্রণ করে আপ্যায়ন করা হয়।

জামাইয়ের মঙ্গল কামনায় শাশুড়ি মায়েরা এই ব্রত পালন করেন মূলত। জামাইষষ্ঠীর উৎসবকে ঘিরে যুগ যুগ ধরে বাঙালি বাড়িতে পালন হয়ে আসছে নানা আচার-অনুষ্ঠান। সকাল থেকে উপবাস করে নানা নিয়মের মাধ্যমে এই ব্রত পালন করেন শাশুড়িরা। 

জামাইষষ্ঠী ২০২৪-র দিনক্ষণ 

এবছর জামাইষষ্ঠী পড়েছে আগামী ১২ জুন অর্থাৎ ২৯ জ্যৈষ্ঠ, বুধবার। ১১ জুন সন্ধ্যা ৫/৫৮/৫৭  মিনিট থেকে ১২ জুন রাত ৭/২৪/৫২ মিনিট পর্যন্ত থাকবে ষষ্ঠী তিথি। 

জামাইষষ্ঠী রীতিনীতি 

একদিকে জ্যৈষ্ঠ মাসে চারিদিকে থাকে আম-জাম-কাঁঠাল -লিচুর মতো ফল। সেই সঙ্গে এদিন জামাইদের পাতে পড়ে রকমারি সুস্বাদু পদ। ভিন্ন ধরনের মরসুমি ফল, মিষ্টি সহযোগে জামাই-ভোজের জন্য বিশাল আয়োজন করা হয় এই বিশেষ দিনে। জামাই ষষ্ঠী একটি পরিবারের একত্রিত হওয়ার দিন হিসাবে উদযাপন করা হয় এবং পরিবারের সকলে একসঙ্গে খাবার -দাওয়ার মাধ্যমে একত্রিত হয়ে উদযাপন করেন। বলাই বাহুল্য বছরের একটা দিন শ্বশুরবাড়ির এই স্পেশাল জামাই আদরের অপেক্ষায় থাকেন সকল জামাই। 

জামাইষষ্ঠীর গুরুত্ব

বাঙালি হিন্দু সমাজে জামাইষষ্ঠীর গুরুত্ব অনেক। সারা বছর ধরে সকলে অপেক্ষা করে থাকেন এই উৎসবের জন্য। শাশুড়ি দেবী ষষ্ঠীকে খুশি করার জন্য ষষ্ঠী পুজো করেন এবং তার মেয়ে- জামাইদের সৌভাগ্য ও সমৃদ্ধির জন্য তার আশীর্বাদ চান। নতুন বস্ত্র, উপহার, ফল- ফলাদি, পান-সুপারি, ধান- দূর্বা, বাঁশের করুল, তালের পাখা, করমচা দিয়ে শাশুড়ি মায়েরা উদযাপন করেন জামাইষষ্ঠী। তবে বর্তমানে সকলের ব্যস্ততার মধ্যে বহু রেস্তরাঁতে আয়োজন হচ্ছে, বিশেষ জামাইষষ্ঠীর। আর সকলে সেখানেই আদরে- যত্নে আপ্যায়ন করেন আদরের জামাইকে। 

Advertisement

জামাইষষ্ঠীর সঙ্গে প্রচলিত সংস্কার

ভারতবর্ষ তথা দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে একসময় সংস্কার ছিল একটি মেয়ে যতদিন না পুত্রবতী হয়, ততদিন তার বাবা- মা কন্যা গৃহে পা রাখবেন না ৷ এই ব্যবস্থায় সমস্যা দেখা দেয়, সন্তানধারণে সমস্যা বা সন্তান মৃত্যুর (শিশুমৃত্যু) ফলে বাবা- মাকে দীর্ঘদিন অপেক্ষা করতে হত মেয়ের বাড়ি যাওয়ার জন্য ৷ সেক্ষেত্রে বিবাহিত মেয়ের মুখ দর্শনের জন্য সমাজের বিধানদাতা জৈষ্ঠ্য মাসের শুক্লা ষষ্ঠীকে বেছে নেয় জামাই ষষ্ঠী হিসাবে৷ যেখানে মেয়ে জামাইকে নিমন্ত্রণ করে সমাদর করা হবে ও মেয়ের মুখ দর্শন করা যাবে এবং সেই সঙ্গে মা ষষ্ঠীর পুজো করে তাঁকে খুশি করা। যাতে, মেয়ে শীঘ্র পুত্রমুখ দর্শন করাতে পারে।

এছাড়াও কথিত আছে যে, একটি পরিবারে দুটি বউ ছিলেন। দুই বউয়ের মধ্যে ছোট বউ লোভী ছিল। যিনি সব সময় বাড়িতে ভাল খাবার রান্না হলে, তা লুকিয়ে খেয়ে নিত এবং বিড়ালের উপর দোষ দিত। বিড়াল দেবী ষষ্ঠী বাহন। নিজের বাহন বিড়ালের নামে এমন অভিযোগ শুনে, অত্যন্ত ক্রুদ্ধ হন। সেই বউয়ের সন্তানের প্রাণ যায়। কষ্টে ভেঙে পড়ে সেই বাড়ির ছোট বউ। পরে এক বৃদ্ধার রূপ ধারণ করে দেবী ষষ্ঠী তাঁর কাছে যান এবং তার আচরণের কথা মনে করিয়ে দেন। ভুল বুঝতে পেরে, নিজের ভুলের জন্য ক্ষমা চাওয়ায়, দেবী তাকে তার সন্তান ফিরিয়ে দেন। এই ঘটনাটি জানতে পেরে শ্বশুরবাড়ির লোকজন ক্ষুব্ধ হয়ে তাকে তার বাবার বাড়িতে যেতে বাধা দেয়। ষষ্ঠী পুজোর দিন তাদের মেয়েকে দেখতে আগ্রহী বাবা-মা তাদের মেয়ে- জামাইকে বাড়িতে নিমন্ত্রণ করেছিলেন। তাই সেই দিনটি জামাই ষষ্ঠী নামে পরিচিতি লাভ করে। এটি পুনর্মিলন এবং আনন্দের দিন হিসাবে পালিত হয়।


 

Advertisement