scorecardresearch
 

Diwali 2024 Mahalaxmi Puja: মহালক্ষ্মী কে-কীভাবে শুরু হল মহালক্ষ্মীর পুজো? পুরাণে যা বলা আছে জানুন

Diwali 2024 Mahalaxmi Puja: বলা হয় এই দিনে যদি মা কালীর উদ্দেশ্যে একটি প্রদীপ অর্পণ করা হয় তাহলে ওই ব্যক্তির সকল প্রকার অন্ধকার দূর হয়। এ কারণে আজকের দিনটিকে দেবীর দীপযাত্রা হিসেবে গণ্য করা হয়। যাকে আমরা দীপাবলি বলে জানি। এদিন যদি মা কালীর ব্রত রেখে পূজা সম্পন্ন করা যায়, তাহলে তা অতি উত্তম ফল প্রদান করে।

Advertisement
মহালক্ষ্মী কে-কীভাবে শুরু হল মহালক্ষ্মীর পুজো? পুরাণে যা বলা আছে জানুন মহালক্ষ্মী কে-কীভাবে শুরু হল মহালক্ষ্মীর পুজো? পুরাণে যা বলা আছে জানুন

Diwali 2024 Mahalaxmi Puja: আজ ৩১ অক্টোবর দীপান্বিতা অমাবস্যা। আজ কালীপুজো। আজ লক্ষ্মীপুজো। অন্যান্য সকল অমাবস্যা থেকে এই আমাবস্যা অনেকটা আলাদা এবং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি অমাবস্যা। কারণ অন্যান্য অমাবস্যময় মা কালীর পূজা করা হলেও এই অমাবস্যা তিথিতে একমাত্র মা কালীর সঙ্গে সমানভাবে পূজিত হন দেবী লক্ষ্মীও। যাকে দীপান্বিতা লক্ষ্মীপূজা বলা হয়। এই অমাবস্যাতে একদিকে যেমন অলক্ষী বিদায় করে লক্ষ্মীর পূজা করা হয়, সেই সঙ্গে শক্তিরূপে কালী পূজাও করা হয়। কালী ও মহালক্ষ্মী এই অমাবস্যা তিথিতে এক হয়ে যায়।

বলা হয় এই দিনে যদি মা কালীর উদ্দেশ্যে একটি প্রদীপ অর্পণ করা হয় তাহলে ওই ব্যক্তির সকল প্রকার অন্ধকার দূর হয়। এ কারণে আজকের দিনটিকে দেবীর দীপযাত্রা হিসেবে গণ্য করা হয়। যাকে আমরা দীপাবলি বলে জানি। এদিন যদি মা কালীর ব্রত রেখে পূজা সম্পন্ন করা যায়, তাহলে তা অতি উত্তম ফল প্রদান করে। যদি কোনও কারণে এটা সম্ভব না হয় তাহলে আজকের দিনে মায়ের উদ্দেশ্যে সন্ধ্যার পর একটি প্রদীপ প্রজ্বলন করে দীপান্বিতা অমাবস্যার এই মাহাত্ম্য কথাটি একবার হলেও প্রমাণ করতে হবে। তাহলে দেবীর দ্বীপযাত্রা ব্রতের পূর্ণ ফল লাভ করতে পারবেন। দীপাবলির এই কালীপূজায় একবার হলেও শ্রবণ করুন মায়ের ব্রত কথা।

দীপান্বিতা অমাবস্যার মাহাত্ম্য কথা
একদিন ঋষি প্রবল নারদ নারায়ণকে প্রণাম করে যমালয়ে যাত্রা করলেন। যমালয়ের নানারকম ভয়ংকর দৃশ্য দর্শন করে তিনি অত্যন্ত ভীত মনে চিন্তা করতে লাগলেন, জগতে কত রকম পাপীরা এইতম পূর্ণ নরকে বসবাস করছেন। সৃষ্টির স্বরূপ কি এই রকম হবে? এ সমস্ত ভাবতে ভাবতে তিনি ব্রহ্মার কাছে গিয়ে উপস্থিত হলেন। তিনি ব্রহ্মাকে গিয়ে জিজ্ঞাসা করলেন, প্রজাপতি ব্রহ্মা, আপনি বলুন যে যমালয়ের এই ভয়ঙ্কর নরকের যন্ত্রণা থেকে এই পাপীরা কিভাবে মুক্তি পেতে পারে। তার উত্তরে পিতামহ ব্রহ্মা বললেন এর উপায় হল মা কালীর শরণাপন্ন হওয়া। এ জগতের যত জীব রয়েছে তারা নিজেদের কৃতকর্মের কথা জানিয়ে মা কালীর কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করলে তা থেকে মুক্তি পেতে পারে। আর এই দীপান্বিতা অমাবস্যাতেই মুক্তির পথ প্রস্ফুটিত হয়ে উন্মোচিত হয় জনসমক্ষে।

আরও পড়ুন

Advertisement

আশ্বিন মাসে মহালয়ার দিন পিতৃপক্ষের সমাপ্তি ঘটে দেবীপক্ষের সূচনা হয়। এই দিন পিতৃপুরুষদের উদ্দেশ্যে জল দান করতে হয়। ঐদিন নিজ নিজ লোক থেকে বিদেহী আত্মারা উত্তর পুরুষদের হাত থেকে জল নিতে পৃথিবীতে এসে উপস্থিত হন। এই লোকে তারা থাকেন মহালয়া থেকে দীপাবলি পর্যন্ত। অর্থাৎ প্রায় এক মাস ধরেই তারা মর্তে অবস্থান করেন। দীপাবলির পূণ্য লগ্নে আত্মারা মুক্তি পায় এবং স্বর্গলোকে গমন করে। পূর্বপুরুষের আত্মারা যাতে স্বর্গলোকে গমন করতে পারে এই কারণে বিভিন্ন গৃহে প্রদীপ প্রজ্জালনের মাধ্যমে সেই যাত্রাপথ প্রস্তুত করতে হয়। পূর্বপুরুষদের আত্মা যেমন মুক্তি পায় তেমনি যাওয়ার সময় তাদের আশীর্বাদে ওই ব্যক্তির জীবনের সমস্ত অন্ধকার দূরীভূত হয়।

এই সময়ে মা কালী সংকটনাশিনী হয়ে সংকট দূর করতে এগিয়ে আসেন। সমস্ত শক্তির উৎস মহাকাল বা কালকে তিনি ধারণ করেন তাই তিনি কালী নামে পরিচিত। ১০ মহাবিদ্যার প্রথম রূপ তিনি। কালের শক্তি তিনি। সৃষ্টির আদিতে যখন বিষ্ণু যোগ নিদ্রায় ছিলেন, সময়ে বিষ্ণুর কর্ণ কমল থেকে মধু ও কৈটভ নামে দুই দৈত্য জন্ম লাভ করে। জন্মে প্রথমে সৃষ্টি নষ্ট করতে উদ্যত হয়। প্রতিরক্ষার উদ্দেশ্যে তখন মহাকালী স্তব করতে হয়। তখনই আবির্ভাব হন মহামায়া মহাকালী। শুম্ভ ও নিশুম্ভ নামক ২ অসুরের অত্যাচারে দেবতারা যখন ভীত, তখন তারা নিজেদের রক্ষা করার জন্য আদ্যাশক্তির উপাসনা করেন। চন্ড-মুন্ড যখন অত্যাচার শুরু করে, তাদের প্রতিরোধ করতে গিয়ে মা দুর্গা, প্রচন্ড ক্রোধে তার মুখ কালো হয়ে যায়। তখন তার ললাট থেকে বেরিয়ে আসেন মহাকালী। মহাকালী ওই দুই অসুরকে ভস্ম করে দেন। আরেক অসুর রক্ত বীজ যখন ব্রহ্মার বরপ্রাপ্ত হন যে, একটি ফোঁটা রক্ত পড়লেই সেখান থেকে হাজার হাজার রক্তবীজের জন্ম নেবে, তখন মা দুর্গার ভ্রুযুগলের মধ্য থেকে বেরিয়ে আসে মহাকালী। একের পর এক তোর নিধন করতে থাকেন মহাকালী। রক্তবীজের মতো অসুরের রক্তের ফোঁটা মাটিতে পড়ার আগেই তিনি জিভ দিয়ে তা লেহন করে বংশবৃদ্ধিতে বাধা সৃষ্টি করেন। সবশেষে রক্তবীজকে বধ করে সমস্ত রক্ত পান করে নেন মা কালী।

এরপর শুরু হয় মা কালীর তাণ্ডব নৃত্য। যে নৃত্যে সৃষ্টি নড়ে যায়, ধ্বংস হওয়ার পথে চলে আসে। স্বর্গ-মর্ত্য-পাতাল থরথর করে কাঁপতে থাকে। দেবতারা যখনই তাণ্ডব নৃত্য দেখেন, তখন তাঁরা বুঝতে পারেন সৃষ্টি নষ্ট হতে চলেছে এবং এই ঘটনা প্রতিরোধ করার মত ক্ষমতা তাদের কাছে নেই। তখন তারা নিরুপায় হয়ে দ্বারস্থ হন মহাদেব শিবের। মহাদেব তখন উপায় না দেখে মা কালীর তাণ্ডব নৃত্য বন্ধ করতে তার পথে মাটিতে শুয়ে পড়েন। তাণ্ডবৃ নৃত্ত করতে করতে মা কালী ভুলবশত মহাদেবের বুকে পা রেখে ফেলেন। তখন তিনি আচমকা সম্বিত ফিরে পান। যখন দেখেন তিনি তার নিজের পতিদেবের বুকে পা রেখেছেন, তখন তিনি জিভ বার করে নিজের ভুল প্রকাশ করেন। এই সময় মহাকালীর রাগ গলে জল হয়ে যায়। শান্ত হয়ে মহাকালী, মহালক্ষীতে রূপান্তরিত হন। তাই দীপান্বিতা অমাবস্য়াতে মা কালী দীপান্বিতা মহালক্ষীতে পরিণত হন।
 


 

Advertisement