মাতৃ আরাধনায় কুমারী পুজো (Kumari Puja 2021) হতে হয়ত অনেকেই দেখেছেন। মূলত দুর্গাপুজোর (Durga Puja 2021) সময় কুমারী পুজো দেখা গেলেও, কোনও কোনও জায়গায় আবার কালী, জগদ্ধাত্রী বা অন্নপূর্ণা পুজোর সময়েও কুমারী পুজো দেখা যায়। মনে করা হয় এই বিশ্ব ব্রহ্মণ্ডে প্রতিনিয়ত যে সৃষ্টি স্থিতি ও লয়ের কার্য প্রণালী চলছে, সেই ত্রিবিধ শক্তিই নিহিত রয়েছে কুমারীর মধ্যে। এই কুমারীই নারী জাতির প্রতীক ও বিজাবস্থা। তাই কুমারীকেই বিশ্বজননী রূপে পুজো করা হয়। অর্থাৎ এই সাধন পদ্ধতিতে কুমারীকেই দেবীজ্ঞানে পুজো করেন সাধক।
শাস্ত্র ও পৌরাণিক কাহিনি অনুসারে, কোলাসুরকে বধ করার মধ্যে দিয়ে কুমারী পুজো শুরু হয়। শোনা যায়, কোলাসুর একসময় স্বর্গ ও মর্ত্য অধিকার করায়, বিপন্ন দেবকুল মহাকালীর শরণাপন্ন হয়। দেবতাদের কাতর আবেদনে সাড়া দিয়ে দেবী পুনর্জন্মে কুমারীরূপে কোলাসুরকে বধ করেন। তারপর থেকেই মর্ত্যে শুরু হয় কুমারী পুজো। এক্ষেত্রে দেবীজ্ঞানে যে কোনও কুমারীকেই পুজো করা যায়। তবে সাধারণত ব্রাহ্মণ কুমারীর পুজোই সর্বত্র দেখা যায়।
কুমারীদের নাম
নিয়ম অনুসারে এই পুজোর জন্য কুমারীর বয়স হতে হবে ১ থেকে ১৬ বছরের মধ্যে। বয়স অনুযায়ী পুজোর সময় সেই সমস্ত কুমারীদের বিভিন্ন নামে অভিহিত করা হয়। যেমন-
১ বছরের কুমারী - সন্ধ্যা
২ বছরের কুমারী - সরস্বতী
৩ বছরের কুমারী - ত্রিধামূর্তি
৪ বছরের কুমারী - কালিকা
৫ বছরের কুমারী - সুভগা
৬ বছরের কুমারী - উমা
৭ বছরের কুমারী - মালিনী
৮ বছরের কুমারী - কুষ্ঠিকা
৯ বছরের কুমারী - কালসন্দর্ভা
১০ বছরের কুমারী - অপরাজিতা
১১ বছরের কুমারী - রূদ্রাণী
১২ বছরের কুমারী - ভৈরবী
১৩ বছরের কুমারী - মহালপ্তী
১৪ বছরের কুমারী - পীঠনায়িকা
১৫ বছরের কুমারী - ক্ষেত্রজ্ঞা
১৬ বছরের কুমারী -অন্নদা বা অম্বিকা
আজকাল অবশ্য কুমারী পুজোর প্রচলন অনেকটাই কমে গিয়েছে। তবে রামকৃষ্ণ মিশনের মতো সংগঠন বা আরও কিছু কিছু জায়গায় এই প্রথা এখনও একইভাবে চালু রয়েছে।